২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দুদকের আবেদন নিষ্পত্তি

১৫ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত দেবেন আপিল বিভাগ

-

সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত দুর্নীতি মামলার আসামি বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দুদকের আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ হাইকোর্টের তিনটি রায় ও দু’টি আদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাঁচটি লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে এ রায় দিয়েছে আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করা হল এবং হাইকোর্টের রায় সংশোধন করা হলো। আশা করি রায় আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পাওয়া যাবে। আর অন্তর্বর্তী আদেশ বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলগুলো নিষ্পত্তি করা হলো। সে ক্ষেত্রে হাইকোর্টের বিচারাধীন রুলও নিষ্পত্তি হয়ে যাবে।
তবে হাইকোর্টের রায়ে কী সংশোধন করা হয়েছে, আর কী পর্যবেক্ষণ থাকছে, তা উন্মুক্ত আদালতে ঘোষণা করেননি প্রধান বিচারপতি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণ পাওয়ার আগে কিছুই বলা যাবে না। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও বিদেশ যেতে অনুমতিসংক্রান্ত হাইকোর্টের তিনটি রায় ও দু’টি আদেশের বিরুদ্ধে দুদক পাঁচটি লিভ টু আপিল দায়ের করেছিল। গত ৭ সেপ্টেম্বর লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ওপর শুনানি শুরু হয়। পরে ১৩ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে আদালত সোমবার রায়ের জন্য রাখেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান ও এ কে এম ফজলুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর যেসব রিট আবেদনে হাইকোর্টের ওই রায় এসেছিল, সেই রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, মুরাদ রেজা, মাহবুব উদ্দিন খোকন, আরশাদুর রউফ ও মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল।
দেশত্যাগে দুদকের বাধার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নরসিংদীর মো: আতাউর রহমানের করা এই রিট মামলার শুনানি শেষে গত ১৬ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়, এ বিষয়ে যতক্ষণ পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধি প্রণয়ন না হচ্ছে, অনুসন্ধান ও তদন্ত পর্যায়ে কারো বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিতে হলে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে অনুমতি নিতে হবে দুদককে।
অন্য দিকে পাসপোর্ট জব্দ ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মো: আহসান হাবিব নামের এক ব্যক্তির রিটের চূড়ান্ত শুনানির পর গত ১৪ মার্চ রায় দেন হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ। ওই রায়ে বলা হয়, অনুসন্ধান বা তদন্ত চলার সময় জরুরি পরিস্থিতিতে কোনো ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে হলে বা পাসপোর্ট জব্দ করলে কমিশন বা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পরে জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ বা বিশেষ জজ আদালতে আবেদন করে অনুমোদন নিতে হবে।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও পাসপোর্ট জব্দের সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। কমিশন আদালতে এমন আবেদন করলে বিশেষ জজ ওই আবেদন যত দ্রুত সম্ভব বা আবেদন গ্রহণের ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে।
এ ছাড়া বিদেশ যাওয়ার নিষেধাজ্ঞার বৈধতা নিয়ে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাফসির আউয়াল আরেকটি রিট করেছিলেন। সিই রিটে গত মাসে হাইকোর্ট রুল দিয়ে তিন মাসের জন্য তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়। এ রকম আরো একটি রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে দুদক আলাদা পাঁচটি লিভ টু আপিল করে। সেসব লিভ টু আপিলের শুনানির পর সোমবার রায় দিলেন আপিল বিভাগ।


আরো সংবাদ



premium cement