২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোকে পরস্পরে প্রতিযোগিতা না করার নির্দেশ

করোনাকালে সরকারি ব্যাংকের নতুন শাখা এবং একই এলাকায় একাধিক শাখা নয়
-

একই স্থানে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের একাধিক শাখা খোলার অনুমোদন দেয়া হবে না। অর্থাৎ, কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় কোনো সরকারি ব্যাংকের শাখা থাকলে অন্য কোনো সরকারি ব্যাংকের কোনো শাখা সেখানে খোলার অনুমতি দেয়া হবে না। শুধু তাই নয়, করোনাকালে সরকারি ব্যাংকের নতুন কোনো শাখা খোলা যাবে না। শাখা খোলার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোকে একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত না হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, শাখার সংখ্যা না বাড়িয়ে প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা দেয়া এখন সময়ের দাবি।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে এ ধরনের নির্দেশনা অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে সব রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রায়ই বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ব্যাংক থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখা খোলার অনুমতি নেয়ার জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন, একই অঞ্চলে সরকারি ব্যাংকের একাধিক শাখার অনুমতি দেয়া যাবে না। এমনকি এই করোনাকালে নতুন করে শাখার খোলারও প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবকে বলেছেন, কোনো অবস্থায় সরকারি ব্যাংকগুলো একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতার প্রয়োজন নেই। আর ব্যাংকের শাখার সংখ্যা না বাড়িয়ে প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল ব্যাংকিং করা এখন সময়ের প্রয়োজন। অর্থমন্ত্রীর এই অনুশাসনের বিষয়টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পক্ষ থেকে সব রাষ্ট্রীয় ব্যাংককে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে, বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের শাখা হচ্ছে এক হাজার ২২৬টি। ব্যাংকটির বিদেশে অবস্থিত শাখা দু’টি এবং দেশের অভ্যন্তরে শাখা এক হাজার ২২৪টি। এসব শাখার মধ্যে পল্লী অঞ্চলে শাখা ৭৫৬টি ও শহরাঞ্চলে ৪৬৭টি। এ ছাড়া ১৬টি আঞ্চলিক শাখা, ৪৬টি প্রিন্সিপাল শাখা এবং ১১টি জিএম অফিস কার্যালয় রয়েছে। জনতা ব্যাংকের শাখা ৯১৭টি। এর মধ্যে শহরে ৪৩০ ও গ্রামে ৪৮৩টি, বিদেশে চারটি। একইভাবে অগ্রণী ব্যাংকের শাখা ৯৬০টি, রূপালী ব্যাংকের ৫৮৩, বেসিকের ৬০টি এবং বিডিবিএলের শাখা রয়েছে ৩২টি।
জানা গেছে, ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের লোকসানি শাখা এখন ২২৬টি। এক বছরের লোকসানি শাখার সংখ্যা কমলেও এখনো এ ধরনের শাখা সবচেয়ে বেশি রয়েছে অগ্রণী ব্যাংকের। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সদ্যসমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের লোকসানি শাখা কমেছে। গত জুন শেষে ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখার স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২২৬টি। এর আগের অর্থবছর (২০১৯-২০) শেষে ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখার স্থিতি ছিল ২৮৯টি। এক বছরে ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখা কমেছে ৬৩টি।
জানা গেছে, গত অর্থবছরে দু’টি ব্যাংকের লোকসানি শাখা বেড়েছে এবং কমেছে চারটির। এর মধ্যে রূপালী ব্যাংকের লোকসানি শাখা বেড়েছে ২১টি এবং বেসিক ব্যাংকের একটি। বর্তমানে এ দু’টি ব্যাংকের লোকসানি শাখার স্থিতি দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৩৬টি ও ৩১টি। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে ব্যাংক দু’টির লোকসানি শাখা ছিল যথাক্রমে ১৫টি ও ৩০টি।
অন্যদিকে গত অর্থবছরে অগ্রণী ব্যাংকের লোকসানি শাখা ১৪টি এবং জনতা ব্যাংকের লোকসানি শাখা ৩১টি কমেছে। তবে লোকসানি শাখা কমলেও বর্তমানে ব্যাংক দুটিতে লোকসানি শাখা সর্বাধিক। গত জুন শেষে অগ্রণী ব্যাংকের লোকসানি শাখা দাঁড়িয়েছে ৫৬টি এবং জনতা ব্যাংকের ৫৫টি। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে জনতা ব্যাংকের লোকসানি শাখা ছিল ৮৬টি এবং অগ্রণী ব্যাংকের ৭০টি ।
অবশিষ্ট দুই ব্যাংকের মধ্যে গত অর্থবছরে সোনালী ব্যাংকের লোকসানি শাখা কমেছে ২২টি এবং বিডিবিএলের ১৮টি। গত জুন শেষে এই দুই ব্যাংকের লোকসানি শাখার স্থিতি দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২৮টি ও ২০টি। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে সোনালী ব্যাংকের লোকসানি শাখা ছিল ৫০টি এবং বিডিবিএলের ৩৮টি।


আরো সংবাদ



premium cement