১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পার্লামেন্টে বিভ্রান্তিকর তথ্য

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে রাজার ভর্ৎসনা

-

করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলার অজুহাতে ক্ষমতার পথ দীর্ঘ করতে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারির বিষয়ে পার্লামেন্টে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। এমনকি দেশটির রাজা আল-সুলতান আব্দুল্লাহও পার্লামেন্টে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়ার দায়ে প্রধানমন্ত্রী ইয়াসিনের বিরল ভর্ৎসনা করেছেন প্রকাশ্যেই। এমন পরিস্থিতিতে মুহিদ্দিন ইয়াসিন নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের একাংশ এবং দেশটির বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের সরকার বলেছে, গত জানুয়ারিতে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা কার্যকর করা সংক্রান্ত সব অধ্যাদেশ ২১ জুলাই প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পরামর্শে গত জানুয়ারিতে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেন রাজা আল-সুলতান আব্দুল্লাহ।
সেই সময় মালয়েশিয়ার এই প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর বিস্তার রোধের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা দরকার; কিন্তু সমালোচকরা সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন এবং সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর জোটে ভাঙনের সুর ওঠায় শাসনের মেয়াদ দীর্ঘ করতে তিনি কৌশলে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন। গত বছরের মার্চে বিরোধীদের সাথে জোট গড়ে মালয়েশিয়ার ক্ষমতায় আসেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। তার পর থেকেই দেশটির ক্ষমতাসীন জোটে টানাপড়েন শুরু হয়। বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার রাজপ্রাসাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজার সম্মতি ছাড়াই অধ্যাদেশগুলো প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে, যা দেশের ফেডারেল সংবিধান এবং আইনের শাসনের মূলনীতির উল্টো।
মালয়েশিয়ায় সাংবিধানিকভাবে রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান থাকলেও রাজার পদ অনেকটা আলঙ্কারিক। দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করে থাকেন রাজা। কিন্তু দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার দরকার আছে কি না সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা একমাত্র রাজারই।
জরুরি অবস্থা জারির বিষয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন না করায় ও প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে রাজার অনুমতি না নেয়ায় ক্ষমতাসীন জোটের বৃহত্তম রাজনৈতিক ব্লক ইউএমএনও পার্টি মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পদত্যাগের দাবি তুলেছে।
এক বিবৃতিতে ইউএমএনওর প্রেসিডেন্ট আহমদ জাহিদ হামিদি বলেছেন, এটি রাজার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার সুস্পষ্ট কাজ এবং ফেডারেল সংবিধানের নীতিমালার পরিপন্থী। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে রয়টার্স মুহিউদ্দিনের কার্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পায়নি। দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম পার্লামেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের নেতৃত্বের প্রতি তিনি অনাস্থা জানিয়ে আবেদন দাখিল করেছেন। পার্লামেন্টের বেশির ভাগ আইনপ্রণেতা প্রধানমন্ত্রীকে আর সমর্থন দেবেন না বলে দাবি করেছেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement