২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
৩০ দিনের রাত্রিকালীন কারফিউ

তিউনিসিয়ায় সঙ্কট নিরসনে সংলাপের আহ্বান নাহদার

-

তিউনিসিয়ায় রাজিৈনতক সঙ্কট নিরসনে জাতীয় সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে দেশটির বৃহত্তম রাজিৈনতক দল আন নাহদা। এক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী হিশাম মেশিশিকে বরখাস্ত ও পার্লামেন্ট স্থগিত করেন প্রেহসিডেন্ট কায়েস সইয়েদ। প্রেসিডেন্টের এ পদক্ষেপকে অভ্যুত্থান আখ্যায়িত করেছিল দলটি। তেমনি পার্লামেন্টের সামনের রাস্তায় সমর্থকদের অবস্থান নেয়ার ডাক দিয়েছিল তারা; কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার তারা সংলাপ এবং নাগরিকদের মধ্যে বিভেদ এড়াতে প্রচেষ্টার আহ্বান জানায়। গতকাল দলের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আন নাহদা তিউনিসিয়ার সব নাগরিককে সংহতি ও ঐক্য এবং সব ধরনের রাষ্ট্রদ্রোহ ও অন্তর্কলহ এড়ানোর আহ্বান জানায়। তা ছাড়া দলীয়ভাবে সমর্থকদের পার্লামেন্টের বাইরে আবার অবস্থান না নেয়ার ও বিক্ষোভ না করার আহ্বান জানিয়েছে। অবশ্য দলের কয়েকজন সিনিয়র সদস্য আবার রাস্তায় অবস্থান নিতে চেয়েছিলেন; কিন্তু নেতারা সঙ্ঘাত এড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। সোমবার পার্লামেন্টের সামনে প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইয়েদের সমর্থকদের সাথে আন নাহদা সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। সন্ধ্যায় নাহদা সমর্থকরা স্থান ত্যাগ করেন। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার এলাকাটি জনশূন্য ছিল।
চলমান সঙ্কটের মধ্যেই আগামী এক মাসের জন্য রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইয়েদ। সেই সাথে উন্মুক্ত স্থানে জনসমাগম পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিশাম মেশিশির সরকারকে বরখাস্তের পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে এই কঠোর পদক্ষেপ নিলেন প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পর তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিসের সীমানা ছাড়িয়ে দেশের নানা জায়গায় বিক্ষোভ চলতে থাকে। প্রধানমন্ত্রীকে অবৈধভাবে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ তুলে স্লোগান দেন তার সমর্থকরা। এতে দেশজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলাবার এক বিবৃতিতে তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইয়েদ ঘোষণা করেন, ২৭ জুলাই হতে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত কারফিউ চলবে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত রাত্রিকালীন কারফিউর ঘোষণা দেন তিনি। একই সাথে জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। করোনা মহামারী মোকাবেলায় সরকারের অব্যবস্থাপনার জেরে সহিংস বিক্ষোভের পর তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইয়েদ গত রোববার সন্ধ্যায় দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন। আগামী ৩০ দিনের জন্য সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন পার্লামেন্ট। প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপকে বিরোধীরা ‘অভ্যুত্থান’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তবে বিরোধী এবং আন্দোলনকারীদের এমন অভিযোগ নাকচ করেছেন প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ। চলমান সঙ্কট উত্তরণে তাদিগ দিচ্ছেন বিশ্বের অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে ফোনালাপে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী অ্যান্তোনি ব্লিংকেন তিউনিসিয়ার গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের বিষয়গুলো মেনে চলার আহ্বান জানান। তিউনিসিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে সঙ্কট মোকাবেলায় গণতান্ত্রিক বৈধতা পুনরুদ্ধারে তিউনিসের প্রতি আহ্বান জানায়। নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জার্মানি। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া আদেবাহার বলেন, ‘বার্লিন আশা করছে তিউনিসিয়ায় সাংবিধানিক আদেশ দ্রুত ফিরে আসবে’। সঙ্কট নিরসনে তাগিদ দিয়েছেন রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি তিউনিসিয়ার জনগণের দ্বারা দেশটির নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে না। পরিস্থিতি দ্রুতই উন্নতি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। সঙ্কট উত্তরণে এখন কাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হবে এ বিষয়ে এখনো জানা যায়নি।

 


আরো সংবাদ



premium cement