১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পুঁজিবাজারের সূচক সাড়ে তিন বছরে সর্বোচ্চ অবস্থানে

-

সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন গতকাল সোমবার শেয়ারবাজারের মূল্যসূচকে রীতিমতো উল্লম্ফন হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৫৬ পয়েন্ট বেড়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে ওঠে এলে সূচক। এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারির এর চেয়ে বেশি ছিল সূচকের অবস্থান। এর সাথে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজারের ক্রান্তিকালে ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয়েছিল। সেই সময়ের জন্য সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল। এতে অনেক বিনিয়োগকারী বড় লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। এখন ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তটিও সঠিক সময়ে নেয়া হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সোমবার লেনদেন শুরু হয় প্রায় সব ক’টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে প্রথম মিনিটের লেনদেনেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ২১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। সময়ের সাথে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বাড়তে থাকে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ১২৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারির পর সূচকটি সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এলো। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি সূচকটি ছয় হাজার ১২৭ পয়েন্টে ছিল।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে অপর দুই সূচকে। এর মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ২২০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩০৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। মূল্যসূচকে বড় উত্থানের পাশাপাশি বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৯টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৮৩৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সেই হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২০৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১১১ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের ৬৩ কোটি ৮২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬০ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ন্যাশনাল ফিড। এছাড়াও ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ম্যাকসন স্পিনিং, ফরচুন সুজ, বিবিএস কেবলস, এনআরবিসি ব্যাংক, ওরিয়ন ফার্মা, এসকে ট্রিমস এবং ন্যাশনাল পলিমার।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৬টির এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
জানা যায়, গত বছর দেশে মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামে। শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে গত বছরের ১৯ মার্চ সেই সময়ের কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়।
তবে প্রায় এক বছর ধরে শেয়ারবাজার ভালো অবস্থানে থাকায় গত বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সেই সাথে সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম আরোপ করা হয়। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক দেখা দেয়। ফলে রোববার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। তবে লেনদেনের সময় গড়ানোর সাথে সাথে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কও কেটে যেতে থাকে। ফলে লেনদেনের শেষ দিকে পতন কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে আসে।

 


আরো সংবাদ



premium cement