২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শেয়ারবাজারে সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন

নতুন নিয়মে সার্কিট ব্রেকার
-

সপ্তাহের প্রথম দিন পুঁজিবাজারে সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেন। এ দিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ১৬ পয়েন্ট। আর লেনদেন কমেছে ১১ কোটি টাকা। একই অবস্থা অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে প্রধান সূচক বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নতুন সার্কিট ব্রেকারের (দাম কমা বা বাড়ার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সীমা) নিয়ম চালু করায় রোববার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন দেখা দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মাধ্যমে লেনদেন শেষ হয়েছে। গত বছর দেশে মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামে। পতন ঠেকাতে গত বছরের ১৯ মার্চ সে সময়ের কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়। তবে প্রায় এক বছর ধরে শেয়ারবাজার ভালো অবস্থানে থাকায় গত বৃহস্পতিবার ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সেই সাথে সার্কিট ব্রেকারের নতুন নিয়ম আরোপ করা হয়। এ নিয়ম আরোপের পর রোববার ছিল শেয়ারবাজারের প্রথম লেনদেন কার্যদিবস। ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে এর সমালোচনা করা হয়।
এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক প্রকার আতঙ্ক দেখা দেয়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে রোববার লেনদেনের শুরুতে। প্রথম মিনিটের লেনদেনেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ৩০ পয়েন্ট কমে যায়। তবে লেনদেনের সময় গড়ানোর সাথে সাথে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক কাটতে থাকে। ফলে পতন কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে আসে শেয়ারবাজার।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৬৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ২০৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচক বাড়লেও দিনের লেনদেন শেষে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান পতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৯টির এবং ৩৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৮৩৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৮৪৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ১১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১৫১ কোটি ৪৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪২ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ন্যাশনাল ফিড, বেক্সিমকো ফার্মা, ফরচুন সুজ, সামিট পাওয়ার, কনফিডেন্স সিমেন্ট, লুব-রেফ বাংলাদেশ এবং এনআরবিসি ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৫৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫১টির এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিএসইসির নতুন নির্দেশনা : ২০০ টাকার নিচে থাকা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ১০ শতাংশ। অর্থাৎ যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বা ইউনিটের দাম ২০০ টাকার নিচে তার শেয়ার বা ইউনিটের দাম একদিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারবে। শেয়ার বা ইউনিটের দাম ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে থাকা প্রতিষ্ঠানের সার্কিট ব্রেকার ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। শেয়ার বা ইউনিটের দাম ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। শেয়ার বা ইউনিটের দাম ১০০০ থেকে ২০০০ টাকার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। শেয়ার বা ইউনিটের দাম ২০০০ থেকে ৫০০০ টাকার ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৫ শতাংশ। শেয়ার বা ইউনিটের দাম ৫০০০ টাকার ওপরে হলে সার্কিট ব্রেকার ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।


আরো সংবাদ



premium cement