১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
চলছে লকডাউন

কে মানছে কার কথা

-

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এখনো দেশজুড়ে চলছে সরকার ঘোষিত লকডাউন। যাতে সীমিত করে দেয়া হয়েছে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ও কাজ। শর্তারোপ করা হয়েছে গণপরিবহন চলাচল, মার্কেট শপিংমলের কার্যক্রম পরিচালনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে। কিন্তু কে মানছে কার কথা। এক দিকে করোনার প্রাদুর্ভাব আবারো বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্য দিকে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব এমনকি করোনার কথাও ভুলে গিয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করেছে। আবার প্রতি সপ্তাহে লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি করার ঘোষণা এলেও এর তদারকির কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। যার কারণে মার্কেট শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই কেনাবেচা করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
অন্য দিকে গণপরিবহনগুলো বর্ধিত ভাড়া আদায়ের আদেশ যথাযথভাবে পালন করলেও মানছে না দুইজনের সিটে একজন করে যাত্রী নেয়ার কথা। বাসগুলোতে শুধু সিটই পরিপূর্ণ করা হচ্ছে না। বরং অফিস টাইমে বাস ভর্তি করে দাঁড়িয়েও যাত্রী নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাজার, ঘাট, পাড়া-মহল্লায় চলছে মানুষের অবাধ চলাফেরা। আবার রাস্তায় যানজট দেখলে কেউ বলতে পারছে না মহামারী করোনা ঠেকাতে দেশে সরকার ঘোষিত লকডাউন চলছে। গত কয়েক দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
সূত্র মতে, করোনাভাইরাইসের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এতে মানুষের স্বাভাবিক চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। কিন্তু করোনা বাড়তে থাকায় সেটিকে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এই লকডাউনে বন্ধ করে দেয়া হয় মার্কেট শপিং, দূরপাল্লার বাসসহ গণপরিবহন। সরকারি- বেসরকারি বেশির ভাগ অফিস বন্ধ করে জরুরি প্রয়োজনে সীমিত আকারে চালু রাখা হয় কয়েকটি ব্যাংক ও অফিস। তখন লকডাউন বাস্তবায়ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনের বিভিন্ন সেক্টর থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। কিন্তু এরপর লকডাউন শিথিল করে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে খুলে দেয়া হয় মার্কেট শপিংমল, পর্যায়ক্রমে চালু করে দেয়া হয় সিটির মধ্যে চলাচলরত গণপরিবহন। তখনো বন্ধ রাখা হয় দূরপাল্লার বাস। কিন্তু গত ৬ মে থেকে দূরপাল্লার বাসও চালু করে দেয়া হয়। ৬০ ভাগ বর্ধিত ভাড়া দিয়ে গণপরিবহনগুলোতে শর্ত দেয়া হয় ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে অর্থাৎ দুইজনের সিটে একজন যাত্রী নিয়ে চলাচল করার অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু দূরপাল্লার বাস এই নিয়মের কিছুটা মানলেও বর্তমানে কোন নিয়মের তোয়াক্কা করছে রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনগুলো। বর্ধিত ভাড়া নেয়া হলেও প্রায় সব আসনেই যাত্রী বসানোর পাশাপাশি দাঁড়িয়েও যাত্রী পরিবহন করার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে প্রায়ই। স্বাস্থ্যবিধি বলতে কোনো নিয়মই মানা হচ্ছে না। এ নিয়ে হেলপারের সাথে যাত্রীর বাগি¦তণ্ডাও হচ্ছে চরমে। এ অবস্থায় বর্ধিত ভাড়া আদায় প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। সকালে নগরীর পল্টন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ পরিবহনেই সব আসনে যাত্রী রয়েছে। বেসরকারি কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআরটিসির বাসগুলো আরো বেশি অনিয়ম করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গতকাল দুপুরের দিকে মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় দেখা যায় শেকড় পরিবহনের একটি বাসের আসন প্রায় পূর্ণ থাকলেও হেলপার যাত্রী উঠতে বাধা না দিয়ে বরং সহযোগিতাই করছেন। এভাবে আরো কয়েকটি বাসে প্রতিটি আসনেই যাত্রী দেখা দেখা যায়।
আলী আজম নামে এক চাকরিজিবী বলেন, প্রতিদিনই তাকে বাসে করে অফিস ও বাসায় যাওয়া আসা করতে হয়। বর্ধিত ভাড়া নিলেও বাসের লোকজন প্রতি আসনে যাত্রী তোলেন। এই নিয়ে প্রতিদিনই যাত্রীদের সাথে বাগি¦তণ্ডা হয়। কিন্তু তারা যাত্রীদের কথা পাত্তাই দেয় না।
ফার্মগেটে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা মেহেদী হাসান বলেন, আমাদেরও করোনার ভয় হয়। কিন্তু প্রয়োজনে সব ভুলে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করি। তিনি বলেন, স্টপেজে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যেতে হয়। দীর্ঘ সময় বাসে উঠতে না পেরে বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যবিধির কথা ভুলে দৌড়াদৌড়ি করে যাত্রীতে পূর্ণথাকা বাসেই উঠতে হয়। বুঝতে পারি আমি ভুল করছি, কিন্তু কী করব? আমাকেও তো গন্তব্যে যেতে হবে। আমার তো এত টাকা নেই যে একাই উবার পাঠাও বা সিএনজি অটোরিকশায় করে যাবো।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বিষয়টি স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে কয়েকটি টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ইতোমধ্যে কয়েকটি কোম্পানির বাসের ট্রিপও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন পরিচালনা করার ক্ষেত্রে বিশেষ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরের গণপিটুনিতে নিহত ২ নির্মাণশ্রমিক জাতিসঙ্ঘে ফিলিস্তিনি সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান

সকল