২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আলোচনায় আবু ত্ব-হা আদনান

গ্রেফতারকৃত আলেমদের মুক্তি চাইলেন বিএনপির এমপিরা

-

ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানের নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সংসদে আলোচনা করেছেন বিএনপির এমপিরা। গতকাল জাতীয় সংসদে হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিলের প্রস্তাবের ওপর এমপিদের বক্তব্যে প্রসঙ্গটি উঠে আসে। বিএনপির এমপি অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ বলেন, আলেম অর্থ আমি যেটুকু বুঝি যারা কুরআন এবং হাদিসের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাকারী। আজ তারা কিন্তু সাংঘাতিক নিপীড়নের মধ্যে আছেন। আজ যেসব আলেম এ ধরনের রিমান্ড, গ্রেফতারের সম্মুখীন হয়েছেন তাদের দয়া করে মুক্তি দিন। না হলে দেশে উদ্বেগ ও ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে। সারা দেশে ধর্মীয় তাফসির বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গত চার দিন ধরে পত্রপত্রিকায় আসছে একজন বিশিষ্ট আলেম মো: আদনান নিখোঁজ। তার পরিবার তার সন্ধান পাচ্ছে না।
বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, কোথায় মামলা করব? কার কাছে অভিযোগ করব? কেউ তো জিডিই নিতে রাজি হচ্ছে না- কথাটি বলছিলেন ত্ব-হার স্ত্রী। ত্ব-হা গত বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ এবং তার সাথে আরো তিন ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। এখন পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। একই সময়ে একই ধরনের অভিযোগ আমরা করতে দেখেছি চিত্রনায়িকা পরীমণিকে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পরীমণি ভাগ্যবতী। কারণ তার মামলা নেয়া হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তিনি বলেন, কিন্তু সেই সৌভাগ্য ত্ব-হার পরিবারের হয়নি। সেই সৌভাগ্য হয়নি বাংলাদেশের ৬০৪টি পরিবারের। যারা দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ তাদের ব্যাপারে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু বলতে পারছে, না লোকাল পুলিশ স্টেশন কিছু বলতে পারছে। না সেই ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিএনপির এ সংসদ সদস্য বলেন, সরকার বলছে- ঋণের বোঝা আছে, পারিবারিক কলহের ঝড়ে (নিখোঁজরা) উড়ে গেছে। তবে ২০১৯ সালের এপ্রিলে ফ্রান্স ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন এফআইডিএইচ বলছে, গুমের এই ঘটনাগুলো কোনো বিক্ষিপ্ত বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এগুলো যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন তাদের সমন্বিত কৌশল কার্যকরের অংশ। এ ঘটনাগুলোকে নিয়মতান্ত্রিক ও রাষ্ট্রীয় নীতিমালার পরিণাম বলে বর্ণনা করে এফআইডিএইচ বলছে, যেহেতু বেশির ভাগ ভুক্তভোগীকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে টার্গেট করা হয়, তাই এ কাজগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধ। অর্থাৎ গুমকে তারা মানবতাবিরোধী অপরাধ বলছে।
তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে এ অভিযোগগুলোর তদন্ত করা। তদন্ত করে তারা কোথায় হারিয়ে গেছে সেটা বের করা। বারবার বলা হয় বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। বিরাজনীতিকরণ করা হচ্ছে এ অর্থে- যখন কোনো ব্যক্তিকে গুম করা হয়, পাওয়া যায় না। তখন তার পরিবার বলে আমার ছেলে কোনো রাজনীতির সাথে যুক্ত না। তার মানে সরকারি দল না করলে, সরকারের মতের সাথে না মিললে সে হাওয়া হয়ে যেতে পারে, নাই হয়ে যেতে পারে।
বিএনপির অপর সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, দল-মতনির্বিশেষে সব মানুষের কিন্তু জীবনের নিরাপত্তা আছে। কে দল করল, কে বেদল করল সেটা দেখার বিষয় নয়, আইন সবার জন্য সমান। আমরা দেখেছি, ইসলামিক স্কলার আদনান কিভাবে নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি বলেন, সেই আদনানের বিষয়ে তার পরিবার বা কেউ জানছে না। পুলিশ মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করছে। মামলা নিয়ে যে তার খোঁজ করবে সেটাও কিন্তু করছে না। আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত। পরীমণি ভাগ্যবতী যে, তার মামলা নেয়া হয়েছে। আমরা ধন্যবাদ জানাই, (অভিযুক্তদের) আইনের আওতায় নেয়া হয়েছে, সাথে সাথে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement