২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
কৃষ্ণচূড়া

গ্রীষ্মের ফুলে বর্ণিল প্রকৃতি

-

গ্রীষ্মের ফুলে বর্ণিল রূপ ধারণ করেছে প্রকৃতি। কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু আর কনকচাঁপা প্রশান্তি ছড়াচ্ছে পথিকের মনে। করোনার আঘাতে পৃথিবী স্থবির হয়ে গেলেও প্রকৃতি সেজেছে নিজের মতোই। কোনো আয়োজন ছাড়াই প্রকৃতিতে চোখজুড়ানো বর্ণিল ফুল বাঙালি হৃদয়কে গভীরভাবে নাড়া দেয়।
গ্রীষ্মের ঝিম ধরা তপ্ত রোদে চার দিক খাঁ খাঁ করছে; প্রচণ্ড গরমে জনজীবন ওষ্ঠাগত। এ ছাড়াও মহামারী করোনা আতঙ্ক আর লকডাউনে বাইরে মানুষজনের সংখ্যা খুবই কম। তাই বলে থেমে নেই প্রকৃতি। ঘিওর উপজেলাসহ মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার পথে-প্রান্তরে এখন দৃষ্টি মেললেই নানা রঙের ফুলের বর্ণিল সমারোহ। এর অপরূপ শোভা যে কারো মনকে ছুঁয়ে যায় নিঃসন্দেহে।
পিচঢালা পাকা সড়কের পাশে, গাঁয়ের মেঠো পথে কিংবা স্তব্ধ দীঘির ধারে সারি সারি গাছে এখন শোভা পাচ্ছে গ্রীষ্মে ফোটা নানা রঙের বাহারি ফুল। হলুদ সোনালু, বেগুনি জারুল অথবা লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার রক্তঝরা হাসি সবার মনকে নাড়া দেয় খুব গভীরভাবে।
ঘিওর উপজেলাসহ মানিকগঞ্জের বিভিন্ন পথে-প্রান্তরে চোখ মেললেই দেখা যায় এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য। গাছে গাছে ফুলের অপরূপ সমারোহ। এদের মধ্যে সবার কাছে আকর্ষণীয় কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মের অতি পরিচিত একটি ফুল। বাংলা সাহিত্য, সঙ্গীত ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা উঠে এসেছে ব্যাপকভাবে। শোভাবর্ধনকারী এ বৃক্ষগুলো এখন নড়বড়ে অস্তিত্ব নিয়ে কোনো রকমে টিকে আছে। এসব কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে এখন লেগেছে আগুন। এ আগুনে কোনো কৃত্রিমতা নেই, এ যে প্রকৃতির রূপের আগুন ফুলের শোভা। শুধু কি কৃষ্ণচূড়া। এই প্রকৃতিতে এখন আরো রঙিন শোভা ছড়াচ্ছে হাজারো ফুল। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রাধাচূড়া, রেইনট্রি, জারুল, হিজল, সোনালু, অশোক, বসন্তরঞ্জিনী, মালতি, বকুল, কাস্টার মুকুট বা ক্রাউন অব থর্ন, গন্ধরাজ, লালচাঁপা, সাদাচাঁপা, চুলের বেণীর মতো গোলাপি অর্কিড, মে ফ্লাওয়ার, বেলী, গোলাপ, মল্লিকা, বাটারফ্লাই, পর্টুলেখা, হাসনাহেনা, অ্যাস্টার প্রভৃতি দেশী-বিদেশী ফুল।
গ্রীষ্মের তাবদাহে চোখ ধাঁধানো বেগুনি রঙের বিচ্ছুরণ নিয়ে প্রকৃতিতে নিজের আগমনের কথা জানান দিয়েছে জারুল ফুল। গ্রীষ্মের ফুল হিসেবে জারুল অতুলনীয়। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলেও জারুল গাছ খুবই কম লক্ষ করা যায়। চমৎকার বেগুনি রঙে রাঙানো এ জারুল ফুল মনের গহিনে জাগ্রত করে এক অন্য রকম ভালোলাগা।
লাল বেগুনির পাশাপাশি হলুদে ছাওয়া ঝুমকার মতো ঝুলে থাকা সোনালু ফুল যে কারো মন ছুঁয়ে যাবে। সোনালু গাছ আমাদের দেশে ভেষজ বৃক্ষ হিসেবেই বেশি পরিচিত। গ্রামাঞ্চলে এ গাছকে অনেকে বান্দরলাঠি গাছও বলে থাকে। গ্রীষ্মের বাতাসে হলুদ সোনালু ফুলের দোলা প্রকৃতিতে সৃষ্টি করে এক অন্য রকম আবহ। ঐতিহ্যবাহী ফুল গাছের মধ্যে হিজল গাছ একটি। এ গাছটি আমাদের প্রকৃতি থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। রক্তরাঙ্গা হিজল ফুল গাছের নিচে ঝরে পড়ে সৃষ্টি করে এক দৃষ্টিনন্দন পুষ্পশয্যা। এ ছাড়াও বেলী, গোলাপ, মল্লিকা, হাসনাহেনা, মালতি ফুল তাদের সুবাস ও কমনীয়তায় নিজেদের মেলে গ্রীষ্মকে করেছে আরো রূপবতী। জীবনের হাজারো ব্যস্ততার ফাঁকে এমন হাজারো ফুলের স্বর্গরাজ্য যেন এক চিলতে প্রশান্তির দোলা দেয় মানবজীবনে।


আরো সংবাদ



premium cement