২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শ্রমিক হত্যার নিন্দা আর্টিকেল নাইনটিনেরা

-

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গত ১৭ এপ্রিল এস আলম গ্রুপের কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের বিক্ষোভে চালানো পুলিশের গুলিতে পাঁচজন শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আর্টিকেল নাইনটিন। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের গুলির ঘটনা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার ক্ষুণœ করে। আর্টিকেল নাইনটিন লক্ষ্য করছে, সাম্প্রতিককালে আয়োজিত অনেকগুলো মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়েছে। পুলিশ নিষ্ঠুরভাবে সভা-সমাবেশ দমন করছে, বিশেষ করে, নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে অতিরিক্ত বল প্রয়োগের ঘটনা ঘটে চলেছে।
গতকাল গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেছেন, ‘আর্টিকেল নাইনটিন শ্রমিকদের তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করার জন্য পুলিশ বাহিনী কর্তৃক এ জাতীয় অপ্রয়োজনীয় শক্তি প্রয়োগের নিন্দা করছে।’
তিনি আরো বলেন, আমাদের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।’ সংবিধান প্রদত্ত এই অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের, কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি এর উল্টো প্রবণতা।
শ্রমিকরা দাবি করেছেন যে, তারা ভালো কর্ম পরিবেশ, ঈদ বোনাস, রোজার সাথে সামঞ্জস্য রেখে কর্ম ঘণ্টা নির্ধারণ, কাজের সময় পর্যাপ্ত বিরতি, অন্যায় ছাঁটাই বন্ধ করা ইত্যাদি দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছিলেন যেখানে পুলিশ বিনা উসকানিতে তাদের ওপর গুলি চালানো শুরু করে। এতে পাঁচজন শ্রমিক প্রাণ হারান এবং আরো অনেকে গুরুতর আহত হন।
কোভিড-১৯ মহামারীটি অব্যাহত থাকায় শ্রমজীবী ও দৈনন্দিন বেতনে কাজ করা শ্রমিকদের জীবনযাত্রা আরো কঠিন হয়ে পড়েছে। শ্রমিকদের যথাযথ মজুরি না পরিশোধ করা বাংলাদেশ শ্রম আইন এবং মৌলিক মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন। এস আলম গ্রুপ বিশেষত এই রকম কঠিন সময়ে তাদের কর্মীদের বেতন ঠিকভাবে দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। এই ধরনের ঘটনার নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এস আলম গ্রুপকে বাংলাদেশ শ্রম আইন যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।
পুলিশ রেগুলেশন, ১৯৪৩ অনুসারে যেকোনো গণতান্ত্রিক সমাবেশে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সর্বশেষ উপায় হিসেবে ন্যূনতম শক্তি প্রয়োগ করতে পারবে। এই শক্তি প্রয়োগের উদ্দেশ্য হবে সমাবেশকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া এবং কোনো পরিস্থিতিতেই কাউকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তা করা উচিত নয়। বাঁশখালীর ঘটনায় দেখা যায়, পুলিশ আইনটি অনুসরণ করেনি এবং ন্যূনতম সংযম ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বাঁশখালী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিকদের ওপর এ ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালে স্থানীয় জনগণের প্রতিবাদের মুখে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে সে সময় ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘প্রতিবাদ করার অধিকার নাগরিক স্বাধীনতা এবং তা সরকারের জবাবদিহিতাকে নিশ্চিত করে। সরকারকে পুলিশের ক্রমবর্ধমান নিষ্ঠুরতার এবং পাঁচজন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা নিশ্চিত করতে হবে।’
আর্টিকেল নাইনটিন সরকারকে সংবিধান স্বীকৃত নাগরিকের সভা-সমাবেশ করার অধিকার নিশ্চিত করা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের নাগরিক-রাজনৈতিক অধিকার চর্চায় বাধা দেয়া থেকে বিরত রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানায়। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement
ময়মনসিংহ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের ঈদ পুনর্মিলনী বাস্তবায়নের আহ্বান ৩ গণকবরে ৩৯২ লাশ, ২০ ফিলিস্তিনিকে জীবন্ত কবর দিয়েছে ইসরাইল! মৌলভীবাজারে বিএনপি ও যুবদল নেতাসহ ১৪ জন কারাগারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট কারীদের চিহ্নিতকরণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি ১২ দলীয় জোটের কলিং ভিসায় প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফেরার সময় মারা গেল মালয়েশিয়া প্রবাসী নারায়ণগঞ্জ যুবদলের সদস্য সচিবকে আটকের অভিযোগ হাতিয়া-সন্দ্বীপ চ্যানেলে কার্গো জাহাজডুবি : একজন নিখোঁজ, ১১ জন উদ্ধার হঠাৎ অবসরের ঘোষণা পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়কের বগুড়ায় গ্যাসের চুলার আগুনে বৃদ্ধা নিহত বগুড়ায় ধানের জমিতে পানি সেচ দেয়া নিয়ে খুন জিআই স্বীকৃতির সাথে গুণগত মানের দিকেও নজর দিতে হবে : শিল্পমন্ত্রী

সকল