২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সাংস্কৃতিক অঙ্গন করোনায় তছনছ

১৪ দিনে ৫ জনের মৃত্যু
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এসএম মহসীন, কবরী ও ফরিদা পারভীন -

চলতি মাসের ৪ তারিখ থেকে গতকাল পর্যন্ত ১৪ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক শিল্পী। এর মধ্যে মারা গেছেন পাঁচজন। আর বর্তমানে আশঙ্কাজনক আছেন তিনজন।
মারা যাওয়া শিল্পীরা হলেন নির্মাতা সাজেদুল আউয়াল, সঙ্গীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ, সঙ্গীত শিল্পী মিতা হক, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী ও নির্মাতা মাসুদ কায়না। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সঙ্কটাপন্ন শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী, শিল্পী ফরিদা পারভীন ও অভিনেতা এস এম মহসীন।
‘ছিটিকিনি’র নির্মাতা সাজেদুল আউয়াল মারা যান ১৫ এপ্রিল। ১৩ এপ্রিল মারা যান সঙ্গীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ। রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী মিতা হক ইন্তেকাল করেন ১১ এপ্রিল। সঙ্গীত শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী মারা যান ৭ এপ্রিল। নির্মাতা মাসুদ কায়নাত ৫ এপ্রিল রাজধানীর ফরায়জী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিল্পীদের মধ্যে বরেণ্য অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী লাইফ সাপোর্টে আছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্ট নেয়া হয়। তার ফুসফুসের অবস্থা ভালো নয় বলে জানিয়েছেন শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ফারুক আহমেদ। আর কবরীর ছেলে এক ভিডিও বার্তায় বলছেন, ‘মায়ের অক্সিজেন ওঠানামা করছে। এটা ভালো লক্ষণ নয়, তিনি প্রাণপণ লড়ছেন। আমরা আশাবাদী, তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরবেন।’ পরিবারের পক্ষ থেকে তিনি দেশবাসী ও ভক্তদের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
অপর দিকে তিন দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লালন সঙ্গীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তাকে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে না, জ্বরও নেই। ফরিদা পারভীনের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে এমনটাই জানালেন তার জামাতা সাজ্জাদুর রহমান।
এদিকে দেশের গুণী অভিনেতা এস এম মহসীন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার শারীরিক অবস্থা বেশ জটিল। বর্তমানে এই অভিনেতাকে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। জানা গেছে, করোনা তার ফুসফুসে সংক্রমিত হয়ে পড়েছে মারাত্মকভাবে।
এ মুহূর্তে অভিনেতার জন্য জরুরি প্লাজমা প্রয়োজন। নির্মাতা অনিমেষ আইচ তার ফেসবুকে এ তথ্য জানান।
এস এম মহসীন প্রায় চার দশক ধরে মঞ্চ ও টেলিভিশনে অভিনয় করছেন। অভিনয়ে প্রশংসনীয় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০২০ সালে একুশে পদক পেয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন তিনি চাকরি করেছেন শিল্পকলা একাডেমিতে। পাশাপাশি শিক্ষকতাও করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি ২০১৮ সাল থেকে বাংলা একাডেমির একজন সম্মানিত ফেলো।
অন্যদিকে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন নায়ক ওমর সানী, নায়িকা মৌসুমী, নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী, অভিনেতা সেলিম-রোজী দম্পতি, নায়ক রিয়াজ, সঙ্গীত শিল্পী তপন চৌধুরী, অভিনেতা আবুল হায়াত আফসানা মিমিসহ প্রায় অর্ধশতাধিক শিল্পী। তবে এদের মধ্যে বেশির ভাগই এখন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আবার কেউ কেউ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তপন চৌধুরী কানাডায় প্রবাস যাপন করলেও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়ে দেশে এসেছিলেন। এর পরই তিনি করোনা আক্রান্ত হন। তিনি বলেন, ‘বাসা থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছি। কানাডায় আমার পরিবার সবাই চিন্তিত। আমি জানি না কি হবে আমার। আপাতত ভালো আছি।’


আরো সংবাদ



premium cement