২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ

আসতে পারে কঠোর লকডাউন
-

১৪ এপ্রিল থেকে কঠোরভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হতে পারে এমন আশঙ্কায় ঢাকা ছাড়ছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার শত শত মানুষ। চলমান লকডাউনে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ঝুঁকি ও কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে এসব মানুষ বিকল্প হিসেবে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ট্রাক-পিকআপ ভ্যানে করে ছুটছে গ্রামের দিকে। কেউ কেউ আবার মোটরসাইকেলে করেও বাড়ি ফিরছে। প্রথম ধাপের এক সপ্তাহর লকডাউন শেষ হয়ে গতকাল থেকে দুই দিনের জন্য দূরপাল্লার বাস চলাচল করবে এমন ধারণায় অনেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাসটার্মিনালে; কিন্তু দূরপাল্লার বাস চলাচল না করায় শত শত মানুষকে বিকল্প ব্যবস্থাপনায় বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। বাড়ি ফেরা মানুষেরা বলছে, সামনে কঠোর লকডাউন এলে সব কিছু বন্ধ হয়ে যাবে। এই লকডাউন আগামী দুই-তিন সপ্তাহও চলতে পারে। তত দিনে আবার ঈদও চলে আসবে। তাই শুধু শুধু ঢাকায় বসে না থেকে বাড়ি যাওয়াই ভালো। আবার কেউ কেউ বলছে, তারা দিনমজুর। কাজ বন্ধ হয়ে গেলে ঢাকায় থেকে না খেয়ে মারা যেতে হবে।
গতকাল রোববার গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ঘরমুখো মানুষের সাথে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। যাত্রীরা বলেন, তাদের ধারণা ছিল এক সপ্তাহের লকডাউন শেষ হয়ে গেছে। তাই গতকাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল করতে পারে। এই ধারণায় তারা টার্মিনালে এসেছিলেন; কিন্তু বাস চলাচল না করায় প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ট্রাক-পিকআপ ভ্যান এমনকি উবার-পাঠাও-এ চলাচলরত মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলে করে তারা পাটুরিয়া ঘাটে যাচ্ছেন। সেখান থেকে লোকাল বাসে করে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে দালালদের খপ্পরে পড়তে হচ্ছে তাদের। টার্মিনালের বাসশ্রমিকরা যাত্রীদের সাথে কথা বলে প্রাইভেট গাড়ি ঠিক করে দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আগে যেখানে ৫০০ টাকায় খুলনা চলে যাওয়া যেত সেখানে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছাতে প্রকারভেদে নেয়া হচ্ছে জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা করে। পুলিশ সরে গেলে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে জটলা করে দালালদের মাধ্যমে যাত্রী তুলতে দেখা গেছে।
আব্দুর রহমান নামে একজন প্রাইভেট কার চালক বলেন, তিনি উবারে গাড়ি চালান। কিন্তু ঘরমুখো মানুষের ভিড় থাকায় অ্যাপস বন্ধ করে ভাড়ায় গাড়ি চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, তার প্রাইভেট কারে সামনে একজন ও পেছনে চারজন নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে নামিয়ে দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা ভাড়া আদায় করছেন। এত বেশি টাকা কেন নিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের বাধার কারণে টার্মিনালের আশপাশে অবস্থান করে যাত্রী তোলা যাচ্ছে না। যার কারণে টার্মিনালের কিছু লোক দালালি করে যাত্রী একত্রিত করছেন। এরপর তাকে ফোন করলেই তিনি দ্রুত গাড়ি নিয়ে এসে যাত্রী তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে ওই দালালদের যাত্রীপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। আবার রাস্তায় পুলিশে ধরলে সেখান থেকে ছাড়া পেতেও ৫০০-১০০০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে তার খুব একটা লাভ হচ্ছে না।
মোটরসাইকেল চালক তোফায়েল জানান, গতকাল সকালে একজন যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে যান তিনি। ওই যাত্রীর কাছ থেকে ভাড়া নেন ৮০০ টাকা। দুপুরে ফিরে এসে আরো একজন যাত্রী নিয়ে রওনা করবেন পাটুরিয়া ঘাটে। এবার তিনি ৮০০ টাকার পরিবর্তে ১০০০ টাকা দাবি করেছেন।
ঢাকার একটি মেসে থাকা নুরে আলম জানান, তারা চার বন্ধু একটি মেসে থেকে চাকরির সন্ধান করছিলেন। সেই সাথে জীবিকার জন্য টিউশনি করাতেন। কিন্তু লকডাউনে তাদের কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই মেসে থেকে খরচ না বাড়িয়ে গ্রামে যাবেন বলে টার্মিনালে আসেন; কিন্তু কোনো বাস না পেয়ে একটি পিকআপ ভ্যানে করে রাজশাহী যাবেন বলে ঠিক করেছেন। জনপ্রতি ৮০০ টাকা করে ঠিক হয়েছে ওই পিকআপ ভ্যান। রাজমিস্ত্রির সহকারী আফজাল জানান, তিনি দিনমজুর। দিনে এনে দিন খান। লকডাউনে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আয়ের কোনো পথ নেই। এই অবস্থায় বাসায় থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। তাই বড় লকডাউনের আগেই বাড়ি ফিরতে চান। সেলিম রহমান নামে একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ১৪ তারিখ লকডাউন ঘোষণা হলে সেটি আরো দুই সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে। এর মধ্যে তার দোকান বন্ধ থাকবে। আবার ঈদও চলে আসবে। তাই একবারই ঈদের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি ঢাকা ছাড়ছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে টিকটক করতে গিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু তানজানিয়ায় বন্যায় ১৫৫ জনের মৃত্যু বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৩ দেশে কাতার আমিরের সফরে কী লাভ ও উদ্দেশ্য? মধুখালীর ঘটনায় সঠিক তদন্ত দাবি হেফাজতের ফর্মে ফিরলেন শান্ত জামায়াতের ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশে সোপর্দ যুবলীগ কর্মীদের, নিন্দা গোলাম পরওয়ারের চায়ের সাথে চেতনানাশক খাইয়ে স্বর্ণালঙ্কার চুরি ঈশ্বরগঞ্জে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ব্যারিস্টার ফারজানাকে সংবর্ধনা যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে‘ভিত্তিহীন' তথ্য ব্যবহারের অভিযোগ বাংলাদেশ সরকারের মোদির মুসলিমবিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় সংখ্যালঘু নেতাকে বহিষ্কার

সকল