২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনায় পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব হচ্ছে না : আনন্দ ম্লান

-

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে পাহাড়ে প্রধান ও সামাজিক উৎসব বৈসাবি উৎসব পালন করা হচ্ছে না। করোনা মহামারীর কারণে বিজু, সাংগ্রাইং, বৈসুক, বিষু, বিহু ও বাংলা নববর্ষ-২০২১ উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে এসব অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। বৈসাবির উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর তিন দিনে আনন্দ উৎসবে মেতে থাকলেও করোনা মহামারী পাহাড়ের বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের উৎসব-আনন্দ এ বছরও ম্লান করে দিয়েছে।
আজ পাহাড়ের বৈসাবি উৎসবের প্রথম দিন। চাকমা, ত্রিপুরা ও তংচঙ্গ্যারা এ দিনকে বলা হয় ফুল, বিজু ও বিষু। আর পরের চৈত্র সংক্রান্তির দিনকে বলে ফুল, বিজু ও বিষু। আর নতুন বছরের প্রথম দিনকে মারমারা সাংগ্রাই নামে উদযাপন করে।
উৎসবের প্রথম দিনে ফুল, বিজু ও বিষুতে চাকমা, ত্রিপুরা তংচঙ্গ্যা ও মারমারা বন থেকে ফুল আর নিমপাতা সংগ্রহ করে সেই ফুল দিয়ে ঘর সাজায় ও গঙ্গা দেবীর আশীর্বাদ প্রার্থনায় নদীতে ফুল ভাসায়। কিন্তু এবার মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে কোথাও কোনো আনুষ্ঠানিকতা নেই। তবে সবাই যার যার বাসায় অবস্থান করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নদীতে ফুল ভাসাবে।
মঙ্গলবার উৎসবের দ্বিতীয় দিন মূল বিজু। এ দিনে ঘরে ঘরে শুধু চলে খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দ করা। উৎসবের তৃতীয় দিনে গজ্যাপজ্যা বিজু দিনে বৌদ্ধ মন্দিরে প্রার্থনাসহ ইত্যাদি অনুষ্ঠান পালন হয়ে থাকে। এ দিন মারমা সম্প্রদায় ঐতিহ্যবাহী জলকেলির আয়োজন করে থাকে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এই উৎসবের সব আনুষ্ঠানিকতা স্থগিত করা হয়েছে। তবে সীমিত পরিসরে নদীতে ফুল ভাসানো হবে। এ ছাড়া মূল বিজু ঘরোয়া পরিবেশে আয়োজন ও মারমাদের সাংগ্রাইং উৎসব করবে সীমিত আকারে।
রাঙ্গামাটি বিজু, বৈসু, সাংগ্রাইং-২০২১ উদযাপন কমিটির সদস্যসচিব ইন্টু মনি চাকমা বলেন, দেশব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে সরকারি নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সব অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। জনসমাবেশ হয় এমন সব অনুষ্ঠান বাদ দেয়া হয়েছে।
রাঙ্গামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুরেশ ত্রিপুরা জানান, মহামারী করোনার কারণে সরকারি নির্দেশনা পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে নদীতে ফুল ভাসানোসহ সব ধরনের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। কোথাও উৎসব হবে না।
রাঙ্গামাটি মারমা সংস্কৃতি সংস্থা সাধারণ সম্পাদক মউচিং মারমা ময়না জানান, করোনার কারণে মারমা সংস্কৃতি সংস্থার পক্ষ থেকে সব ধরনের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। কোথাও মারমাদের জলকেলী হবে না।
বৈসাবির উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর এই তিন দিনে আনন্দ উৎসবে মেতে থাকলেও এ বছর করোনা মহামারী পাহাড়ের নৃগোষ্ঠীর মানুষের আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে। সরকারের নির্দেশনা ও নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বৈসাবি উৎসব থেকে বিরত রয়েছেন পাহাড়ের মানুষ।


আরো সংবাদ



premium cement