১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
প্রাক বাজেট আলোচনায় অভিমত

করের হার গ্রহণযোগ্য না হলে ব্যবসাবাণিজ্য ব্যাহত হবে

-

শুল্ক বা করের হার গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে না থাকলে, তা ব্যবসাবাণিজ্যের কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। তিনি বলেন, নাগরিকদের ওপর আরোপিত কর তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য কি না তাও খতিয়ে দেখতে হবে। অন্য দিকে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাণিজ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি উত্তরণে সুনির্দিষ্ট একটি দিকনির্দেশনা আগামী অর্থবছরের বাজেটে থাকতে হবে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রাক বাজেট আলোচনা : অর্থবছর ২০২১-২২’ শীর্ষক ওয়েবিনারে গতকাল তারা এসব কথা বলেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. মসিউর রহমান বলেন, শুল্ক বা করের হার গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে না থাকলে তা ব্যবসা বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে। অর্থনৈতিক কর্মকা ব্যাহত না করে কি হারে রাজস্ব বাড়ানো যায় তার একটি দিকনির্দেশনা সরকারকে দিতে হবে। তিনি বলেন, ৭-১০ বছরের জন্য একটি টেকসই ও সহনশীল করকাঠামো দেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়াও তিনি দেশের জিডিপিতে করের অবদান বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন এবং বিভিন্ন খাতকে বিভিন্ন হারের কর অব্যাহতি দেয়ার কারণে জিডিপিতে করের অবদান কমছে বলে মন্তব্য করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ট্যাক্সের হার নির্ধারণ ও সরকারের ব্যয়ের বিষয়ে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে, সেই সাথে নাগরিকদের ওপর আরোপিত ট্যাক্স সেই নাগরিকের কাছে গ্রহণযোগ্য কি না সে বিষয়ে নজর দেয়া প্রয়োজন। উপদেষ্টা আরো বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ে মূসক আদায়ের ফলে অনেক ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে এর হার বেড়ে যায়। সেই সাথে ঘন ঘন করের হার বাড়ানো বা কমানো ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বর্তমানে আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করছি, যেটা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে এবং বাজেটে করোনা পরিস্থিতি উত্তরণের একটি সুনিদিষ্ট দিকনির্দেশনা থাকতে হবে, সেই সাথে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিও বাজেটে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, এসএমই খাতকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে এবং এসএমই খাতের জন্য আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতকল্পে মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউটগুলোকে (এমএফআই) বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রণোদনা প্যাকেজ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছানো যায়, সে লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, তৈরী পোশাক ও রেমিট্যান্সের পর আমাদের প্রবৃদ্ধির নিয়ামকগুলো কি হবে, সেগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। সেই সাথে তিনি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে আমাদের একটি যুগান্তকারী পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন, যেখানে সরকার ও বেসরকারি খাত একযোগে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, সরকার ব্যবসাবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থা, শিল্পায়নের বিকাশ এবং উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে যেতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। করোনা পরবর্তী অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের গুরুত্ব বিবেচনায় বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা পূরণে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো যেমন; আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর, আর্থিক খাত, শিল্প ও বাণিজ্য এবং জ্বালানি, যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য অবকাঠামো খাত প্রভৃতি খাতগুলোকে বাজেটে গুরুত্ব প্রদান করা প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
ওয়েবিনারে চারটি খাতের ওপর সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করে তাদের মতামত প্রদান করেন।
‘আর্থিক খাত’ সেশনের আলোচনায় আইপিডিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয়, নগদের সিইও রাহেল আহমেদ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম অংশগ্রহণ করেন। ‘ট্যাক্সেশন ও ভ্যাট’ সেশনের আলোচনায় কেপিএমজির সিনিয়র পার্টনার আদিব হোসেন খান, এফসিএ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সদস্য (কাস্টমস পলিসি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, সদস্য (ভ্যাট নীতি) মো: মাসুদ সাদিক এবং সদস্য (করনীতি) মো: আলমগীর হোসেন অংশগ্রহণ করেন।
আদিব হোসেন খান বলেন, আমাদের সোর্স ট্যাক্স কমাতে হবে এবং একটি স্বচ্ছ আপিল সিস্টেম চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ভ্যাট বিষয়ে ইনপুট রিবেট নিশ্চিতকরণেরও প্রস্তাব করেন। সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া বলেন, এনবিআরের তিন লাখ কোটি টাকার যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সে বিষয়টিতে সবাইকে বিবেচনার আহ্বান জানান। এ ছাড়াও ট্রেড ফেসিলিটেশন চুক্তির কমপ্লায়েন্স বিষয়টি বাজেটে গুরুত্ব দেয়া হবে তিনি অবহিত করেন। মো: মাসুদ সাদিক বলেন, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ভ্যাট আইন চালুর পর থেকে রেজিস্ট্রেশন ও ভ্যাট রিটার্ন রেড়েছে এবং বর্তমানে ভ্যাট রেজিস্টার্ড প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই লাখ ৫৩ হাজার। রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে এক লাখ ৫৬ হাজার প্রতিষ্ঠানের এবং অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে এক লাখ আট হাজার প্রতিষ্ঠানের। ভ্যাট প্রদানে অটোমেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরের গণপিটুনিতে নিহত ২ নির্মাণশ্রমিক জাতিসঙ্ঘে ফিলিস্তিনি সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান

সকল