২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
প্রধানমন্ত্রীকে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

ভারত জানে কখন আপনাকে ছুড়ে ফেলে দিতে হবে

-

করোনা আক্রান্ত হলে হয়তো একজন মানুষের মৃত্যু হয়; কিন্তু এতে পুরো পরিবারকে হত্যা করা হচ্ছে বলে মনে করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী। করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতার প্রেক্ষাপটে করণীয় বিষয়ে এক নাগরিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আপনি যা করবেন তা আপনার গায়েই এসে পড়বে, ভারত আপনাকে রক্ষা করবে না। ভারত জানে কখন আপনাকে ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। আপনারা সমঝোতা করেছেন, ভারত কী দিয়েছে? খালি প্লেট দিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে তারা যতটা সহায়তা করেছে, মুক্ত হওয়ার প্রথম মাসে সেই অর্থ তুলে নিয়েছে। তিনি বলেন, আজ ভারতকে পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, তুমি আমাকে সাহায্য করেছো সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তোমাকে আরো বেশি কৃতজ্ঞ হতে হবে, কারণ তোমাকে আমরা রক্ষা করেছি। ভারত এখনো যে অখণ্ড আছে তার চাবিকাঠি কিন্তু আমাদের হাতে। আমরা রক্ষা করেছি বলে এখনো ভারতের অরুণাচল, মনিপুর, ত্রিপুরা, কাশ্মির এক আছে। তবে ভারত দ্বিখণ্ডিত হলে সারা পৃথিবীর জন্য মঙ্গলজনক হবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, করোনা জাতীয় জীবনে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। করোনায় একজন মানুষের মৃত্যু হয়; কিন্তু পুরো পরিবারকে হত্যা করছে সরকার। কারণ করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের অব্যবস্থাপনা, জবাবদিহিতার অভাব, কোনো ধরনের তারা পরোয়া করে না। একটা আইসিউতে প্রতি দিনের খরচ ৩০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা। এন্টিসেপ্টিক ও ডিজইনফেক্টেডের উপরেও ট্যাক্স আছে। আমরা ১৩০০ টাকার ওষুধ ৪০০ টাকায় দিচ্ছি। করোনার চিকিৎসা করাতে গিয়ে একটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। এটা সরকারের ব্যর্থতা। সরকার নির্দিষ্ট বিষয়ে অজ্ঞ লোক দিয়ে সব কিছু চালাচ্ছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, আইসিইউের ওষুধের দাম খুব বেশি। কাজেই চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরিবারগুলো সর্বস্বান্ত হচ্ছে। একটি সিরিঞ্জের সুইয়ের ট্যাক্সও ৩১ শতাংশ। এই জিনিসগুলো পরিবর্তন করতে হবে। সব ওষুধের মূল্য সরকার নিয়ন্ত্রণ করবে। তাহলে ওষুধের দাম বর্তমান দামের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশে নেমে আনা সম্ভব। অক্সিজেনের উপরেও ভ্যাট ১৯ শতাংশ। ভারতীয় কোম্পানি সময়মতো দ্বিতীয় ডোজের টিকা পাঠাচ্ছে না। কারণ তাদেরও চাহিদা বেশি। এই জন্য সরকারকে নিজ দেশে উৎপাদনে যেতে বলেছিলাম।
ড. বিজন কুমার শীলের মতো মানুষের প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে তাকে অবিলম্বে ভিসা প্রদানের জন্য সরকারকে অনুরোধ করেন তিনি। তিনি বলেন, সবে মাত্র মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে। ৫০ হাজারের মতো পরীক্ষায় পাস করেছে। তারা ১০ হাজার ভর্তি করছেন। এটা হওয়া উচিত ২০ হাজার। ২০ হাজার ছাত্রকে মেডিক্যালে ভর্তি করানো উচিত। তাদের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে ফিজিক্স-কেমেস্ট্রির। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বোঝে কি না সে বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়নি। সমাজের শ্রেণী বোঝে কি না? সমাজের জন্য দরদ আছে কি না? সাধারণ মানুষের জন্য তার বিবেক কাঁদে কি না? এসবের কোনো কিছুই পরীক্ষায় নেই। আমরা তাদের ডাক্তার বানাচ্ছি; কিন্তু মানুষ বানাচ্ছি না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, রাষ্ট্রচিন্তার দিদারুল ভূঁইয়া, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, পানি বিশেষজ্ঞ ম ইনামুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান। জুমে বক্তব্য রাখেনÑ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ও বেলা’র নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা অ্যাডভোকেট রিজওনা হাসান।


আরো সংবাদ



premium cement