৬ সপ্তাহ পর ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার
ডিএসইতে বাজার মূলধন ফিরেছে ৬ হাজার কোটি টাকা- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ০৭ মার্চ ২০২১, ০০:১৪
টানা ছয় সপ্তাহ পতনের পর গত সপ্তাহে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। এতে গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ৬ হাজার কোটি টাকার উপরে বেড়েছে। অবশ্য আগের টানা ৬ সপ্তাহের পতনে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারায় ডিএসই। পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে সব ক’টি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে প্রায় ২ শতাংশ। আর লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৫৪ শতাংশ।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা।
এর আগে শেয়ারবাজার টানা ৬ সপ্তাহ পতনের মধ্যে থাকায় ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ৩৪ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বৃদ্ধি বা হ্রাসের অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে।
এ দিকে গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৯৯ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আগের ৬ সপ্তাহের টানা পতনে সূচকটি কমে ৪৯৩ পয়েন্ট। প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি টানা ৬ সপ্তাহ পতনের পর ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকও গত সপ্তাহে বেড়েছে। গত সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। আগের ৬ সপ্তাহের টানা পতনে সূচকটি কমে ১৭০ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট।
অপর দিকে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ২২ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৬ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। অবশ্য তার আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল।
সব ক’টি মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া যে ক’টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে, বেড়েছে তার দ্বিগুণ। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৯৯টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ১০০টির। আর ৬৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭১৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫৮৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৩৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বা ২৩ দশমিক ১৮ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ৩৩৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ২৬০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বা ৫৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে একুশে ফেব্রুয়ারি শেয়ারবাজার বন্ধ থাকায় এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৬৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এছাড়া ‘বি’ গ্রুপের ২২ দশমিক ৮৬ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ অবদান ছিল।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো, রবি, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সামিট পাওয়ার, জিবিবি পাওয়ার, লাফার্জহোলসিম, ওরিয়ন ফার্মা এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
পিই রেশিও : সমাপ্ত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) কমেছে। আগের সপ্তাহের চেয়ে পিই রেশিও কমেছে দশমিক ৬২ পয়েন্ট বা ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৬ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট।
খাতভিত্তিক হিসেবে পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৮.১ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতে ২০.১ পয়েন্টে, সিরামিক খাতে ৫০ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতে ২১ দশমিক ১ পয়েন্টে, আর্থিক খাতে ২৪.১ পয়েন্টে, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ২৮.৩ পয়েন্টে, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ১১.৬ পয়েন্টে, সাধারণ বীমা খাতে ১৭.৭ পয়েন্টে, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে ২১.৩ পয়েন্টে, পাট খাতে পিই রেশিও ১ হাজার ৪৬৯.২ পয়েন্টে, বিবিধ খাতে ২৪.৬ পয়েন্টে, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ২ পয়েন্ট, পেপার ও প্রিন্টিং খাতে ৪৪ দশমিক ৩ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১৭.৮ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতে ১৭.২ পয়েন্টে, ট্যানারি খাতের ৬৩.৯ পয়েন্টে, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ১৮.৩ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ১৯.৩ পয়েন্টে এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ৯৮.৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা