১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিলুপ্তির পথে শিল্পী পাখি বাবুই ও তালগাছ

-

‘তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে’ এ শিশুতোষ কবিতার মধ্যে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার তাল গাছ এবং তালগাছে থাকা বাবুই পাখির বাসা কালের বিবর্তনে আজ যেন হারিয়ে গেছে।
এক সময় গ্রাম বাংলার আনাচে-কানাচে তাল গাছের ডালে ডালে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা ছিল। এতে বাস করত অসংখ্য বাবুই পাখি। দলবেঁধে উড়ন্ত বাবুই পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত ছিল গ্রাম-বাংলার জনপদ। কিন্তু বর্তমানে নেই তালগাছ, নেই বাবুই পাখিও। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বর্তমানে বিলুপ্তির পথে পরিবেশবান্ধব ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষাকারী তালগাছ। একই সাথে জীবজগতের শিল্পী পাখি নামে খ্যাত বাবুই পাখিও আজ হারিয়ে যাচ্ছে। কয়েক বছর আগেও হোসেনপুর উপজেলার গ্রামাঞ্চলে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে তাল গাছের দেখা মিললেও এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অবাধে তালগাছ নিধন করায় এ উপজেলা তাল গাছশূন্য হয়ে পড়ছে। ফলে নেই বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা ও বাবুই পাখি। স্থানীয় পরিবেশবিদগণের ভাষ্য মতে, অবাধে তাল গাছ নিধনের কারণে ঝড়, বৃষ্টি ও বিজলী (বিদ্যুৎস্পৃষ্টের) হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মানুষ, পশু-পাখিসহ জীববৈচিত্র্য। গত বছর বিজলী পড়ে হোসেনপুরে বেশ কয়েকজন লোক ও পশু মারা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, তিন বছর আগেও উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ২০ হাজার তালগাছ ছিল। বর্তমানে রয়েছে এক হাজারেরও কম। আগে উপজেলার প্রতিটি বাড়িতে ও রাস্তার ধারে পুকুরপাড়ে ছোট বড় অনেক তালগাছ শোভা পেত। ভাদ্র মাসে গাছে গাছে ভরা থাকত তাল। অধিকাংশ গাছের পাকা তাল ঝড়ে পড়ে। গ্রামের মানুষ কুড়িয়ে পাওয়া তালের রস দিয়ে তৈরি করে সুস্বাদু পিঠা। তালের পাতা দিয়ে তৈরি হতো নানা কারুকার্যের হাত-পাখা। গরমকালে তাল পাতার পাখার কদর ছিল সবার কাছে। কিন্তু তালগাছে প্রকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় যে বিশাল ভূমিকা আছে এবং পরিবেশবান্ধব তালের উপকার সম্পর্কে না জানায় তালগাছ ইট ভাটায় লাকড়ি, ঘরের পিলারসহ নানা কাজে ব্যবহারের জন্য নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে। নব্বই শতাংশ তালগাছ আগেই কাটা হয়ে গেছে। উপজেলার জামাইল গ্রামের সোহাগসহ অনেকেই বলেন, উপজেলার বাইরে থেকে আসা বেপারীরা প্রতি গাছ তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় কিনে নেয়। কিন্তু নতুন করে গাছ লাগানোর কোনো উদ্যোগ নেই। এ কারণে দিন দিন প্রাকৃতিক পরিবেশ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে। তাই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার্থে তাল গাছ রোপণে জোরালো দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশবাদীরা। এ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইমরুল কায়েস জানান, তাল গাছ প্রকৃতির বন্ধু ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাকারী বৃক্ষ। এ গাছ প্রবল ঝড় বৃষ্টি ও আকাশের বিজলী থেকে মানুষ ও প্রাণিজগৎকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। ফলে যেসব এলাকায় তালগাছের সংখ্যা বেশি সেসব এলাকায় ঝড়ে ও বিজলীতে মানুষ ও পশুপাখির মৃত্যুর হার খুব কম বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মোস্তাফিজের বিকল্প ভাবছে চেন্নাই, দলে ভিড়িয়েছে এক ইংলিশ পেসার বিদেশ যাওয়া হলো না আশরাফুলের, বাসচাপায় মামাসহ নিহত ‘সন্ত্রাসীদের ঘরে ঢুকে মারা’ বিষয়ে নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া মাতৃভূমি রক্ষা করা আমাদের প্রধান কর্তব্য : সেনাপ্রধান ব্রিটিশ হাই কমিশনারের সাথে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ১ হাজার টাকার জন্য পেশাদার ছিনতাইকারীরা খুন করে ভ্যানচালক হারুনকে দেশের মানুষ পরিবর্তন চায় : মতিউর রহমান আকন্দ টানা ১১ জয়ে ডিপিএলের প্রথম পর্ব শেষ করলো আবাহনী দেশে করোনায় আরো একজনের মৃত্যু উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনের অংশ নিতে মানা সবল-দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার কাজ শেষ হতে কত দিন লাগবে?

সকল