২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিদেশের তুলনায় দেশে ভোজ্যতেলের দাম বেশি বাড়েনি : বাণিজ্যমন্ত্রী

-

বিদেশের তুলনায় দেশে ভোজ্যতেলের দাম খুব বেশি বাড়েনি বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, ভোজ্যতেল নিয়ে সারা দেশে ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে। আমাদের তেলের বাজার ৯০ ভাগ আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করে। যখন সেখানে দাম বাড়ে তখন দেশের বাজারেও তার প্রভাব পড়ে। ছয় মাস আগে ৭০০ ডলারের তেল বর্তমানে ১১৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে দেখা যায়, ৭৫ শতাংশ দাম বেড়েছে। আমাদের দেশে কিন্তু এত বাড়েনি।
গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সাথে সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ কথা জানান।
উল্লেখ্য, খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) গতকালে বাজারদরে বলা হয়েছে, সোয়াবিন তেলের দাম এক মাসের ব্যবধানে প্রায় নয় ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বছর হিসেবে এই বৃদ্ধির হার ২০ থেকে ২৮ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের পরিচালক ওবায়দুল আজম, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্তকর্তাবৃন্দ, গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এবং এনএসআইয়ের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
টিপু মুনশি জানান, তেল আমদানিতে সরকারের রাজস্ব না কমিয়ে চার স্থানের ডিউটির পরিবর্তে এক স্থানে নেয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে আবারও চিঠি দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এটাকে কিভাবে সমন্বয় করা যায়, সে জন্য দাম নির্ধারণের যে কমিটি আছে তাদেরকে বলা হয়েছে। তারা চুলচেরা বিশ্লেষণ করে একটা মানসম্মত দামের তালিকা করে দেবে। কারণ আজকে যে দাম নির্ধারণ করে দেবো দুই দিন পর সে দাম কমে গেলে তখন আবার সবাই লেখালেখি করবে। সে জন্য প্রতি মাসে একটি সভা করে একটি যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের আইডিয়া দেবে আমরা সেটা নিয়ে কাজ করছি। তবে এই বিষয়টি সহজ নয়।
ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী ভোজ্যতেলে ডিউটি চার স্থানের পরিবর্তে এক স্থানে আনার প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দাবি তোলা হয়েছে ভোজ্যতেলে তিন বা চার স্তরে যে ডিউটি, ভ্যাট, ট্যাক্স নেয়া হয় সেটা সরকারের রাজস্ব না কমিয়ে এক জায়গা থেকে নেয়ার ব্যবস্থা করা। এতে করে ব্যবসায়ীদের সময় বাঁচবে, হয়রানি কমবে। পাশাপাশি সরকারেরও রাজস্ব কমবে না। ভোজ্যতেলে আগে ১৫ শতাংশ ডিউটি নেয়া হতো একটা স্থানে। এখন চার জায়গায়। ব্যবসায়ীরা চাচ্ছে সরকারের রাজস্ব না কমিয়ে সেটা আবার এক জায়গায় নিয়ে আসতে।
তিনি বলেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা আগেই এনবিআরকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি। আজকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা আবার চিঠি দেবো। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মনে করে এটা এক জায়গায় হওয়া উচিত। সেটা করার জন্য আমরা আরো তৎপর হবো।
মধ্যস্বত্ব¡ভোগীদের দৌরাত্ম্য কমানোর জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করা হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পণ্যের হাত বদলের কারণে যেন বাজারে প্রভাব না পড়ে। বিশেষ করে, খোলা তেলের বিষয়ে। আমাদের বাজারে ৭০ থেকে ৭২ শতাংশ খোলা তেল, বাকিটা বোতলজাত তেল। আরো বেশি বোতলজাত করা গেলে দামের হেরফের কম হবে। উৎপাদন পর্যায়ে দুই শতাংশ, তারপরের ধাপে তিন শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে সাত শতাংশ লভ্যাংশের কথা আগে থেকেই ঠিক করা আছে। সেটা যদি তারা পায় তাহলে তাদের আপত্তি নেই। কমিটি বসে ঠিক করে দেবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু দামের জন্য না, কোয়ালিটির জন্যও বোতলজাত হওয়া জরুরি। শিল্প মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে চেষ্টা করছে। এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এটা একটা পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। ৭০ শতাংশ যেন বোতলজাত করা যায়। নকল মাল থেকেও মানুষ রেহাই পাবে। এ ছাড়া বোতলের গায়ে দাম লেখা থাকে তাই হাত বদলের ফলে দাম বৃদ্ধির সুযোগ কম থাকে। এতে করে সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীদের সরিয়ে রাখা যাবে। তবে সুযোগ সন্ধানীদের তো আর একদিনে বন্ধ করা যাবে না। একটু সময় লাগবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম সাত দিন পরে কমে গেছে। এ জন্য প্রতিনিয়ত ফলোআপ রাখতে হবে। আর একটা বিষয় আজকে যে পণ্যটা বুক করেন সেটা আমাদের দেশে আসতে তিন মাস লাগে। আজকের আমাদের বাজারে কী দাম, সেখানে কী দাম সেটার একটা প্রভাবে বাজারে পড়ে। এসব বিষয়ে নজর রাখার জন্য আমাদের কমিটি, ট্যারিফ কমিশন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে একটা পথ বের করব।
বর্তমানের দেশের বাজারের সাথে আন্তর্জাতিক বাজারের সমন্বয়টা আছে কি না? বাজারের এখনকার মূল্য যৌক্তিক মূল্য কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, গত বছরের জুলাই মাসের ১ তারিখে দাম ছিল ৭০০ ডলার। চলতি ২০ জানুয়ারি ১১৫০ ডলার। ৭০০ হলে দেশে কী হবে আর ১১০০ হলে কী হবে এগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণের জন্য এই কমিটিটা করে দিয়েছি আমরা। ৭০ শতাংশ হয়তো বাড়বে না। কারণ শুধু তেলের দাম বেড়েছে। অন্যান্য খরচ বাড়েনি। সেইসব বিশ্লেষণের জন্যই কমিটি করে দেয়া হয়েছে। সেই বিশ্লেষণ এক ঘণ্টায় করা সম্ভব না।


আরো সংবাদ



premium cement
ঈদগাঁওতে মাদক সম্রাট রেজাউল গ্রেফতার শিক্ষায় ব্যাঘাত : ফেসবুক-টিকটক-ইনস্টাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাটের বিরুদ্ধে ২৯০ কোটি ডলারের মামলা আমতলীতে কিশোরীকে অপহরণ শেষে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রিমিয়া সাগরে বিধ্বস্ত হলো রুশ সামরিক বিমান জর্ডান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিচারক এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত

সকল