২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ডিএনসিসির উচ্ছেদ অভিযানে বাধা

মিরপুরে স্থানীয়দের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ

-

রাজধানীর মিরপুর পল্লবীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উচ্ছেদ অভিযানে স্থানীয়দের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বরের বাসস্ট্যান্ড থেকে লালমাটি পলাশনগর সড়কের উভয় পাশে অভিযান চালায় ডিএনসিসি। এ জন্য সকাল ১০টার আগে থেকেই পাশের নান্নু মার্কেট এলাকায় বুলডোজার, হ্যামারসহ ভারী সরঞ্জাম এনে রাখা হয়। অভিযান ঘিরে সকাল থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। জড়ো হতে থাকে শত শত মানুষ। বেলা ১১টার দিকে মোড়ে থাকা তিনটি দোকান এবং একটি তিনতলা বাড়ি ভাঙার কার্যক্রম শুরু হয়। ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-২) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এ এস এম সফিউল আজম ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ এ উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেন। এ সময় স্থানীয়রা অভিযানে বাধা ও ইটপাটকেল মারতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে অভিযান বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় সিটি করপোরেশন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
খবর পেয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এলে উচ্ছেদ অভিযান শুরুর চেষ্টা করে সিটি করপোরেশন। কিন্তু বিহারিদের বাধায় উচ্ছেদ কর্মীরা বেশ কয়েক দফা পিছু হটতে বাধ্য হয়। দুপুর ১২টার দিকে আবার অভিযান শুরু করে দলটি। অভিযানের একপর্যায়ে ৪ নম্বর অ্যাভিনিউয়ের নান্নু মার্কেট মোড় থেকে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পরে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অভিযান চালায় ডিএনসিসি। অভিযানকালে ৪ নম্বর সড়কের দুই পাশে চার শতাধিক স্থায়ী, অস্থায়ী, ভাসমান স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এর মধ্যে কোনো কোনোটি টিনের আবার কোনো কোনোটি ইট-সিমেন্টের তৈরি পাকা ঘর, দোকানপাট, তোরণ, শেড প্রভৃতি ছিল। ঘটনাস্থলে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখানে কেউ কেউ ৩০ বছর পর্যন্ত জনগণের রাস্তা দখল করে আছেন। বিহারিদের নির্দিষ্ট পিলার পর্যন্ত সীমানা রয়েছে। তারা এটি জানে। কিন্তু জেনেও পিলারের বাইরে এসে দখল করেছে। এটি ৬৫ থেকে ৭৫ ফুট চওড়া সড়ক। আমরা তাদের আগেও বলেছিলাম নিজেদের থেকে সরে যেতে। তারা সেটি না করায় আমাদের অভিযানে আসতে হলো।
জনগণের উপকারের জন্য এ অভিযান চলছে দাবি করে আতিক বলেন, এ অভিযান আমার জন্য না, জনগণের জন্য। এ সড়ক জনগণের। যারাই দখল করবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান হবে। এমনকি সড়ক প্রশস্ত করতে জমি অধিগ্রহণ করে হলেও উচ্ছেদ করে সড়ক প্রশস্ত করা হবে। আতিকুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে ডিএনসিসির বিভিন্ন স্থাপনা দখল করে রাখা কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। যেকোনো সময়ে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হতে পারে। মেয়র বলেন, এটি দীর্ঘ দিনের প্রতীক্ষিত রাস্তা, কিন্তু আমরা এত দিন প্রশস্ত করতে পারেনি। আমরা কালশীর রাস্তা বেশ প্রশস্ত করে নির্মাণ করেছি। আজকে যে রাস্তাটিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চলছে, এটি একটি সংযোগ সড়ক। অনেক আগেই এ সড়কটি প্রশস্ত করার কথা থাকলেও আমরা করতে পারিনি। আজকে এ এলাকার জনগণের সহায়তায় এ রাস্তাটি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করেছি। এটি আমরা প্রশস্ত করব। এর ফলে মিরপুর থেকে এ রাস্তা দিয়ে খুব সহজে এয়ারপোর্টের দিকে যাওয়া যাবে। এটি হবে একটি কানেকটিং রোড।
দখলদারদের নোটিস প্রদান প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, সরকারের বৈধ জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রাখলে নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ করা হবে। নোটিশ দিতে গেলে ঢাকা শহরে কোনো কাজ করা যাবে না। অবৈধভাবে দখল করে রাখলে সিটি করপোরেশন দায়ী না, বরং যে দখল করে রেখেছে সে-ই দায়ী।


আরো সংবাদ



premium cement