২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইন্টারপোলের রেড নোটিশভুক্ত মানব পাচারকারী ২ বাংলাদেশী গ্রেফতার

-

লিবিয়ায় মানবপাচার মামলার যে ছয় পলাতক আসামির সন্ধান চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ পুলিশ সংস্থার (ইন্টারপোল) মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি হয়েছিল, তাদের মধ্যে দুইজন গ্রেফতার হয়েছে। তাদের একজন কিশোরগঞ্জের জাফর ইকবাল (৩৮) ধরা পড়েছে ইতালি পুলিশের হাতে। অন্যজন মাদারীপুরের শাহাদত হোসেন (২৯) গ্রেফতার হয়েছে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে। গ্রেফতার দুইজন গত বছর মে মাসে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে মানব পাচারকারীদের গুলিতে ২৬ বাংলাদেশীসহ ৩০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলার আসামি। সিআইডি এই দুইজনসহ ছয় মানব পাচারকারীকে ধরিয়ে দিতে গত নভেম্বরে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছিল। যে চারজন এখনো অধরা, তারা হলো- মিন্টু মিয়া, স্বপন, নজরুল ইসলাম মোল্লা ও তানজিরুল।
ইন্টারপোলের সাথে ঢাকায় কাজ করা বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) সহকারী মহাপরিদর্শক মহিউল ইসলাম ইতালির কোসেঞ্জা শহরে জাফরের গ্রেফতার হওয়ার খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ইতালি পুলিশ জাফরকে আদালতে উপস্থাপন করার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জাফরকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। ৪০ কার্যদিবসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। জাফর ইকবাল সম্পর্কে ইতালি যেসব তথ্য চেয়েছে, পুলিশ তা আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত করবে। এরপর আইন মন্ত্রণালয় সত্যায়িত করে নথিপত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সেখান থেকে নথি যাবে ইতালিতে। তিনি বলেন, ইতালির সাথে বাংলাদেশের বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। তবে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে জাফরকে ফিরিয়ে আনা যাবে।
মানব পাচারকারী শাহাদত হোসেনের ব্যাপারে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার শহীদুল্লাহ গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, এক নারীকে ভারতে পাচারের অভিযোগে দক্ষিণখান থানায় শাহাদাতের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছিল। সে মামলায় কয়েকদিন আগে শাহাদাতকে গ্রেফতার করা হয়। মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে। এই শাহাদাত হোসেনের নামেই যে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে তা প্রথমে জানা ছিল না। বিষয়টি পরে বুঝতে পেরেছি আমরা।
সিআইডির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, শাহাদত ঢাকায় আসে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির আগে, গত ৮ নভেম্বর। দুবাই থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পরপরই তাকে বিমানবন্দর থানার পুলিশ গ্রেফতার করে। শাহাদতের বিরুদ্ধে মাদারীপুরে একটি মামলা ছিল। মাদারীপুর পুলিশের অনুরোধে শাহাদতকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মাদারীপুরকেন্দ্রিক মানব পাচারকারী দলের হোতা জাফর ও শাহাদত। দুইজনের বিরুদ্ধেই বিদেশে ভালো চাকরির নিশ্চয়তা দিয়ে প্রতারণা, মুক্তিপণের দাবিতে জিম্মি করা ও হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। শাহাদত মাদারীপুরের নজরুল ইসলাম মোল্লা নামের একজন মানব পাচারকারীর সহযোগী।
লিবিয়ার মিজদাহতে বাংলাদেশীদের হত্যা, মুক্তিপণ আদায় ও নির্যাতনের ঘটনায় সিআইডি বাদি হয়ে পল্টন ও বনানীতে তিনটি মামলা করেছিল। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আরো ২৩টি মামলা হয়। সিআইডি মোট ২৫টি মামলার তদন্ত করছে। এসব মামলায় আসামি হয়েছে ২৯৯ জন, গ্রেফতার আছে ১৭১ জন এবং ৪২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। এ পর্যন্ত দু’টি মামলায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে সিআইডি।


আরো সংবাদ



premium cement