২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা

অবিলম্বে আবুল আসাদ ও রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তি দিন

-

সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হলে সাংবাদিকদের নির্যাতন ও গ্রেফতার বন্ধ করে রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী, সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতারা। তারা বলেন, গণমাধ্যম বন্ধ করে সাংবাদিক নির্যাতন করে গণতান্ত্রিক সরকার হওয়া যায় না। অবিলম্বে বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন। দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ ও সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিন। সাংবাদিকদের সত্য অনুসন্ধান করার সুযোগ দিন। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যত মামলা আছে সব তুলে নিন। তাহলে দেশের লাভ হবে। দেশ গণতন্ত্রের দিকে ধাবিত হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত সমাবেশে তারা এ দাবি জানান। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ড. রেজওয়ান সিদ্দিকী, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব আহমদ মতিউর রহমান, ডিইউজের সাবেক সহসভাপতি মুহাম্মদ খায়রুল বাশার, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসিন, আবু ইউসুফ, সাদ বিন রাবি, খুলনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আলাউদ্দিন, আসাদুজ্জামান আসাদ, লুৎফর রহমান বিনু, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, খন্দকার আলমগীর হোসাইন, জেসমিন জুঁই প্রমুখ।
ড. রেজওয়ান সিদ্দিকী বলেন, সাংবাদিকরা হলেন সত্য অনুসন্ধানী। সব সময় সত্য প্রকাশ করেন তারা। সেই সাংবাদিকদের কণ্ঠ যখনই রোধ করা হয়, তখনই দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়। আজ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সম্মিলিতভাবে কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরে আসবে। তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজী, আবুল আসাদ ও কাজলকে অবিলম্বে মুক্তি দিন।
তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার ভিন্নমতের প্রকাশকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। সে জন্য এই সরকার আতঙ্কিত। তিনি বলেন, যারা দিনের ভোট আগের রাতে ব্যালট পুরে ক্ষমতা দখল করেছে, তারাই রাষ্ট্রদ্রোহী। রুহুল আমিন গাজী দেশ স্বাধীন করেছেন। জনগণের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও মিডিয়ার স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছেন।
রূহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গাজী ভাই প্রথম সারিতে ছিলেন। আজকে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে সমস্যা, এই সমস্যার মূলে দুঃশাসন, গণতন্ত্রহীনতা দায়ী। সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যার বিচার হবে কি না সন্দেহ। অবিলম্বে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
নুরুল আমিন রোকন বলেন, অবিলম্বে দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ এবং একই পত্রিকার চিফ রিপোর্টার রুহুল আমিন গাজীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে; তা না হলে সাংবাদিক সমাজ তাদের মুক্তির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। আমাদের আন্দোলন চলছে, মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত চলবে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকরা চরম সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে। কথায় কথায় সাংবাদিক নির্যাতন, সংবাদমাধ্যম বন্ধ এমনকি সাংবাদিকদের হত্যা করা হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যার কোনো বিচার হচ্ছে না। সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত রিপোর্ট ৭৫ বার পেছানো হয়েছে। এতে প্রমাণ হয় এ হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রভাবশালী কেউ জড়িত। সরকার যখন ফ্যাসিস্ট হয়ে পড়ে তখনই গণমাধ্যমের ওপর হামলা হয়। সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
মো: শহিদুল ইসলাম সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তবে সাংবাদিকদের নির্যাতন ও গ্রেফতার বন্ধ করুন এবং রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তি দিন। সাংবাদিকদের গ্রেফতার, বাকস্বাধীনতা হরণ এবং গণমাধ্যম বন্ধ করে গণতন্ত্রের মানসকন্যা হওয়া যায় না। গণতন্ত্রের মানসকন্যা হতে হলে গণমাধ্যমকে শৃঙ্খলমুক্ত রাখতে হয়। তিনি অবিলম্বে সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়া এবং সাংবাদিকদের শীর্ষ নেতা রুহুল আমিন গাজীর মুক্তি দাবি করেন।
সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী সভাপতির বক্তব্যে বলেন, সরকার কেবল বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী নয়, তারা এখন টার্গেট করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে। তিনি অবিলম্বে রুহুল আমিন গাজীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহার এবং তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement