২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ

তিতাসের সিবিএ নেতার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের

-

প্রায় দুই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক ও সিবিএ নেতা সৈয়দ নাসির উদ্দিন আহাম্মদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মঙ্গলবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের উপসহকারী পরিচালক ফেরদৌস রহমান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, নাসির উদ্দিন সম্পদ বিবরণীতে এক কোটি ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৪০ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির তথ্য গোপন করেছেন, যা দুদক আইন ২০০৪-এর ২৬ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অন্য দিকে তার আয় ও ব্যয়ের হিসাব আমলে নিয়ে দেখা গেছে, স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে তিনি মোট ৮০ লাখ ২৯ হাজার টাকার সম্পত্তি অবৈধ উপায়ে অর্জন করেছেন। যে কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারার অভিযোগ আনা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে সৈয়দ নাসির উদ্দিন এক কোটি ৯৭ লাখ টাকার বেশি স্থাবর-অস্থাবর অবৈধ সম্পদ গড়েছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। দুদকের নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৬ মে নাসির উদ্দিনের দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি ১৭ লাখ ৫৫ হাজার ৬২৩ টাকার স্থাবর ও ৯ লাখ ৪০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে মোট ২৬ লাখ ৯৫ হাজার ৬২৩ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন।
অবৈধ সম্পদের মধ্যে নাসির উদ্দিনের নামে আইএফআইসি ব্যাংকের মিরপুর শাখায় এফডিআর হিসাবে এক কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া একই ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব ও তার প্রতিষ্ঠান সৈয়দ এন্টারপ্রাইজের হিসাবে ৮২ হাজার ৭৬৩ টাকা পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে এক কোটি ৮২ হাজার ৭৬৩ টাকার সন্ধান মিলেছে দুদকের অনুসন্ধানে, যা তিনি তার সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেননি।
নাসির উদ্দিনের সম্পদ বিবরণী ও অন্যান্য রেকর্ডপত্র সূত্রে জানা যায়, নাসির উদ্দিন ও তার ভাই সিবিএ নেতা সৈয়দ আয়েজ উদ্দিন যৌথভাবে ঢাকার রূপনগর থানার আরামবাগ হাউজিংয়ে ৩.৬৩ কাঠা জমির উপর দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। দুদকের দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি নির্মাণ বাবদ নাসির উদ্দিনের অংশে ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১২৩ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়েছেন; কিন্তু গণপূর্তের বিশেষজ্ঞ কমিটি কর্তৃক যাচাইকালে দেখা যায়, বাড়ি নির্মাণে মোট ৪৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয় হওয়ার কথা। সে হিসাবে নাসির উদ্দিনের ২২ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয় হওয়ার কথা। অর্থাৎ তিনি আট লাখ ১৮ হাজার ৩৭৭ টাকার খরচ কম দেখিয়েছেন। এ ছাড়া সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করা ইলেকট্র্রনিকস সামগ্রী ও আসবাবপত্রের মূল্যে যথাক্রমে তিন লাখ ৮৩ হাজার এবং তিন লাখ ৮৮ হাজার টাকার তথ্য গোপন করেছেন বলে রেকর্ডপত্র ও বিশেষজ্ঞ মতামতে উঠে এসেছে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশনের সিবিএ’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সহকারী ব্যবস্থাপক সৈয়দ নাসির উদ্দিন ও তার ভাই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আয়েজ উদ্দিনকে ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ অস্বীকার করেন নাসির উদ্দিন। ওই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে অবৈধ গ্যাস-সংযোগ দেয়া, বাইপাস লাইন দেয়া, মিটার টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল