২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বন্ড থেকে বেশি ঋণ চায় সরকার

আসছে মাল্টি কারেন্সি বন্ড; বিভিন্ন দেশে রোড শো
-

বিভিন্ন বন্ড থেকে বেশি করে ঋণ করতে চায় সরকার। এরই অংশ হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে বাজারে চলমান বন্ড বিক্রি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ জন্য কয়েকটি দেশে আয়োজন করা হবে ‘রোড শো’। যে সব দেশ বা অঞ্চলে প্রবাসী বাংলাদেশী বেশি সংখ্যক বসবাস করে সে সব দেশে প্রথম পর্যায়ে এই রোড শোর আয়োজনটি করা হবে। এ ক্ষেত্রে বেছে নেয়া হবে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ। একই সাথে মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালিতে রোড শো করা হবে। এ দিকে শুধু ডলার বন্ড নয়, মাল্টি কারেন্সি বা বিভিন্ন প্রভাবশালী মুদ্রায় বন্ড চালু করা হবে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী বছরের শুরুতে এই রোডশোটি করা হবে বলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতায় গঠিত ‘ক্যাশ অ্যান্ড ডেট ম্যানেজমেন্ট কমিটির ৪৫তম সভায় প্রবাসীদের মাঝে বিভিন্ন বন্ড জনপ্রিয় করার প্রথম উদ্যোগের কথা বলা হয়েছিল। সেই সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল-বৈদেশিক মুদ্রা আহরণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। যে সব দেশে বাংলাদেশী শ্রমিক ও অভিবাসী বেশি আছে যেমনÑ মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি ইত্যাদি দেশে রোড শো করে প্রচারণা চালাতে হবে।
সেই সভায় আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে, এই তিন সঞ্চয় বন্ডকে শুধু ডলার বন্ড হিসেবে না রেখে মাল্টি কারেন্সি সঞ্চয় বন্ড (বহু মুদ্রা বা অন্যান্য মুদ্রা বন্ড) যেমনÑ ডলার, পাউন্ড ও ইউরোতে প্রবর্তনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এই প্রচারণায় সরকারি ট্রেজারি বিল/বন্ড বিনিয়োগকেও অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানা গেছে, গেল মাসে অনুষ্ঠিত ক্যাশ ও ডেট ম্যানেজমেন্ট কমিটির ৪৬তম সভায় এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয়েছিল। এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সঞ্চয় অধিদফতর থেকে জানানো হয়, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে এখন থেকে প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের বাইরে প্রচারণা চালানো সম্ভব নয়। এরপরও বাংলাদেশ স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের ট্রেজারি বিল ও ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারণা চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশে মানুষ সঞ্চয়পত্রে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করলেও এখন পর্যন্ত দেশ বা বিদেশী বসবাসরত মানুষকে বন্ডকে তেমন একটা জনপ্রিয় করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু সঞ্চয়পত্রের মতো এ খাতেও উল্লেখযোগ্য মুনাফা প্রদান করা হচ্ছে। অনেকটা না জানার কারণে, আবার কিছু অসুবিধার জন্য এ খাতে কাক্সিক্ষত মাত্রায় বিনিয়োগ হচ্ছে না। তিনি বলেন, এখন শুধু মার্কিন মুদ্রা ইউএস ডলারে বিভিন্ন বন্ড চালু রয়েছে। কিন্তু যেসব প্রবাসী লন্ডন বা ইতালিতে থাকেন তাদের জন্য এই বন্ডে বিনিয়োগ উৎসাহব্যঞ্জক নয়। তারা স্ব স্ব দেশের মুদ্রায় বন্ড চান। তাই আমরা ইউরো ও পাউন্ড বন্ড প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে বন্ড জনপ্রিয়তার জন্য প্রবাসে রোড শো ও মাল্টি কারেন্সি বন্ড আগামী বছরের শুরুতে চালু করা সম্ভব হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement