২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

‘ফ্রি ভিসায়’ যাওয়া কর্মীরাই বেশি ফেরত আসছেন

-

যেসব বাংলাদেশী ‘ফ্রি ভিসা’র নামে সৌদি আরবে যান, তাদের বেশির ভাগই থাকেন ঝুঁকিতে। অভিযোগ রয়েছে, এসব ভিসায় পাড়ি জমানো কর্মীদের কর্মসংস্থান ও থাকা-খাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। উপরন্তু পুলিশের ভয়ে তাদেরকে প্রায় পালিয়ে থাকতে হয়। ভিসার শর্ত ভাঙার অভিযোগে বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন তারা।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান এ প্রসঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান, ‘সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে যারা ফেরত এসেছেন তাদের অধিকাংশই ফ্রি ভিসায় গিয়েছিলেন। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির সময় তাদের সেখানে কোনো কাজও ছিল না। আবার ওয়ার্ক পারমিট নবায়নের টাকাও ছিল না। ফলে তাদেরকে দেশটি থেকে ফিরতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশী অভিবাসীদের যাওয়ার ক্ষেত্রে একজন স্পন্সর থাকতে হয়। ওই বাংলাদেশী যদি সেই স্পন্সরের কাজ না করে অন্য কোথাও কাজ করতে চলে যান, তাহলে তাকে ছাড়পত্র নিতে হয়। স্পন্সর স্থানান্তরের ক্ষেত্রে নতুন নিয়োগকর্তাকেও সব ধরনের কাগজ প্রস্তুত রাখতে হয়। যদি এ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করা হয়, তার মানে ওই অভিবাসী কর্মী অবৈধভাবে কাজ করছেন এবং পুলিশ ওই কর্মীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে।
জনশক্তি প্রেরণকারী একমাত্র সংগঠন বায়রার নেতৃবৃন্দ বলছেন, তাদের পক্ষ থেকে ফ্রি ভিসাকে সবসময়ই নিরুৎসাহিত করা হয়ে থাকে। কারণ, কোনো ধরনের রেমিট্যান্স ছাড়াই শ্রমিকদের ফেরত আসাসহ বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে এই ভিসা। সৌদি সরকারের এই ধরনের ভিসা ইস্যু করা বন্ধ করা উচিত বলে মনে করছেন তারা। এই ইস্যুতে সৌদি কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশী কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে চাপ দেয়া দরকার।
উল্লেখ্য গত ১ এপ্রিল থেকে ১৮ অক্টোবর সময়ের মধ্যে বিদেশ থেকে দুই লাখ ৯ হাজারেরও বেশি শ্রমিক ফেরত এসেছেন। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকেই ফিরেছেন অর্ধ লক্ষাধিক শ্রমিক।
জানা গেছে, সৌদি আরবে প্রতিটি পরিবার গাড়ি চালানো, বাগান করা এবং রান্না করাসহ বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য ৮ জন পর্যন্ত কর্মী নিয়োগ দিতে পারে। কিছু কিছু সৌদি পরিবার বাংলাদেশী রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে এসব কর্মী নিয়োগ দেয়। কথিত ফ্রি ভিসায় সৌদি আরবে যাওয়া বাংলাদেশী শ্রমিকরা ওই গৃহকর্তার অধীনে থাকে। মূলত সৌদি আরবে পৌঁছার পর তাদের নিজের কাজ ও আবাসনের ব্যবস্থা করে নিতে হয়। আর এসব প্রবাসী শ্রমিকের স্পন্সর করার জন্য সৌদি পরিবারগুলোকে দেড় থেকে দুই হাজার ডলার পর্যন্ত পরিশোধ করে থাকে ঢাকার রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। শর্ত থাকে, এসব কর্মী সৌদি আরব যাওয়ার পর যে কাজই করুক না কেনো, আয়ের একটা অংশ স্পন্সরকে দিতে হবে।
স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, ফ্রি ভিসায় সৌদি আরবে যাওয়া বাংলাদেশীদের জন্য পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে করোনাভাইরাস মহামারীতে। এর কারণে কাজের সুযোগ আরো কমে গেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement