১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হাজারীবাগে সন্তান হত্যার ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা

ঋণের হতাশা থেকেই হত্যাচেষ্টা : পুলিশ
-

রাজধানীর হাজারীবাগে নিজ সন্তান জারিন হাসান রোজাকে হত্যার অভিযোগে বাবাকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। রোজার মা ঘাতক বাবা জাবেদ হাসানের স্ত্রী লিমা আক্তার বাদি হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার হাজারীবাগ থানায় এই মামলা দায়ের করেছেন। এ দিকে ঋণের হতাশা থেকেই দুই সন্তানকে গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যাচেষ্টার পর নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
হাজারীবাগ থানার ওসি সাজ্জাদুর রহমান জানান, বুধবার রাতে সন্তানদের মা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ দিকে, বুধবার রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহত বাবা ও ছেলে রিজনের সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। পরে তাদের নাক কান গলা বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
গত বুধবার বিকেলে রাজধানীর হাজারীবাগে বটতলা এলাকায় ১০ নম্বর মাজার গলির ৬৭ নম্বর বাড়িতে দুই সন্তানের গলায় ছুরি চালিয়ে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় জাবেদ হাসান। এ ঘটনায় মারা যায় তার ছয় বছরের শিশুসন্তান জারিন হাসান রোজা। গুরুতর আহত হয়েছে ছেলে সাকিব হাসান রিজন (১৪) এবং গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে আহত হয় বাবা জাবেদ হাসান (৪৫)।
ঋণের হতাশা থেকেই সন্তানদের ও নিজেকে হত্যাচেষ্টা : পুলিশ
বিভিন্ন ব্যক্তি, সমিতি ও ব্যাংকে ঋণগ্রস্ত ছিলেন জাবেদ হাসান। এই ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে তিনি হতাশায় ভুগছিলেন। এতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে প্রথমে দুই সন্তানের গলায় ছুরি চালান এবং পরে জাবেদ নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
হাজারীবাগ থানার ওসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, হাজারীবাগের বোরহানপুরের ১০ নম্বর গলির বাসার নিচে মোবাইল ও কসমেটিকসের দোকান আছে জাবেদের। বিভিন্ন ব্যক্তি বা ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণ নেন তিনি। কিন্তু কিস্তি ঠিকমতো পরিশোধ করতে না পেরে চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। হতাশা দেখা দেয় তার মধ্যে। এসব সইতে না পেরে তিনি প্রথমে দুই সন্তানকে হত্যাচেষ্টা চালান এবং পরে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাবেদ দুই সন্তান রোজা, রিজন ও স্ত্রীকে নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বোরহানপুরের ওই বাসায় বাস করে আসছেন। জাবেদই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। কিন্তু করোনার কারণে তার ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছিল। পারিবারিক খরচ চালাতে তিনি আর্থিক অনটনে পড়েন।
জাবেদ হাসানের ভাই মেহেদি হাসান রিংকু বলেন, কারো সাথে ঠিকমতো কথাও বলতেন না জাবেদ। পরিবার-পরিজনের সাথে বিভিন্ন সময় খারাপ ব্যবহার করতেন। ঘটনার দিন বিকেলে দোতলার বাসা থেকে নিচে নেমে দোকানে আসেন। পরে আবার দোতলায় উঠে সবার অজান্তে দুই সন্তানের গলায় ছুরি চালান। এরপর জাবেদ নিজের গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement