১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অবৈধ দখল-ব্যবসা বন্ধে কঠোর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন

-

অবৈধ দখল-ব্যবসা বন্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে ফুটপাথ-রাস্তার অবৈধ স্থাপনা, বিলবোর্ড-সাইনবোর্ড, তারের জঞ্জালসহ সব ধরনের জঞ্জাল অপসারণ করা হচ্ছে। ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স ফাঁকিবাজদের ধরতেও অভিযান চলছে নিয়মিত। এতে বেকায়দায় পড়েছে দুর্নীতিবাজ ও দখলদাররা।
রাজধানীতে বছরের পর বছর ধরেই ফুটপাথ-রাস্তা দখল করে ব্যবসার ধারা চলে আসছে। অনেকে বৈধভাবে দোকান পরিচালনা করলেও অবৈধভাবে এর সামনের ফুটপাথ-রাস্তায় মালামাল রেখে ব্যবসা করে থাকেন। আবার অনেকে নিজের জায়গায় বিল্ডিং তৈরি করলেও রাস্তার ওপর নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখেন দিনের পর দিন। এতে জনসাধারণের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। এ ছাড়া বিলবোর্ড-সাইনবোর্ডের অনুমোদন নিয়ে ব্যবসা করার কথা থাকলেও সেটিও মানেন না অনেকে। আবার ক্ষেত্রবিশেষে ছোট আকারের বিলবোর্ডের অনুমোদন নিয়ে বিশাল আকারের বিলবোর্ড টাঙিয়ে ব্যবসা করছেন। নগরীতে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করার নিয়ম থাকলে তাও মানেন না অনেক ব্যবসায়ী। বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ব্যবসা করে যাচ্ছেন তারা। আবার অনেকে একবার ট্রেড লাইসেন্স করার পর নিয়মিত নবায়ন করেন না। নগরবাসীকে সেবার বিনিময়ে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে থাকে সিটি করপোরেশন। কিন্তু অনেকেই ট্যাক্স ফাঁকি দিতে মরিয়া। সিটি করপোরেশনের কর কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশ করে ট্যাক্স কম দিয়ে থাকেন। অনেকে ভবনের তলা বৃদ্ধি করলেও সেগুলো ট্যাক্স দেয়া ছাড়াই ভাড়া দিয়ে আয় করে থাকেন। রাজধানীতে অনুমোদন নিয়ে ডিসলাইন পরিচালনার নিয়ম রয়েছে। অনেকে নিয়মানুযায়ী ট্যাক্স দিয়ে অনুমোদন নিয়ে পরিচালনা করলেও কেউ কেউ ব্যত্যয় ঘটিয়ে থাকেন। রাজধানী এখন তারের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। এসব অনিয়ম বন্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
ফুটপাথ-রাস্তাসহ সিটি করপোরেশনের জায়গায় থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও ক্যাবল অপসারণ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ জন্য নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে তারা। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিপরীত দিকে অবস্থিত পেট্রলপাম্পের পাশে নবনির্মিত পাওয়ার হাউজের দেয়াল ঘেঁষে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৮টি দোকান দখলমুক্ত করেছেন মেয়র। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ নগর ভবনের সামনের রাস্তার অবৈধভাবে গড়ে ওঠা লেগুনা স্ট্যান্ড স্থানান্তর করা হয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ডিএসসিসি এলাকার সড়কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে রাস্তা-ফুটপাথের অবৈধ দখল, রাস্তায় নির্মাণসামগ্রী রাখা, অবৈধ বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, শপসাইন, প্রজেক্ট সাইন ইত্যাদি অপসারণ, হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফাঁকিবাজদের ধরতে নিয়মিত অভিযান চলছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সবকিছুরই আইন আছে, নীতিমালা আছে। কিন্তু আমরা দেখছি কেউ কেউ কোন ধরনের আইনকে, নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে যে যার মতো সাইনবোর্ড, শপ সাইন, এলইডি সাইন লাগাচ্ছেন। অভিযানের সময় সবাই বলে, আমরা জানি না। কিন্তু আপনি যখন ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন, সেখানে সাইনবোর্ডের মাপও উল্লেখ করা হয়েছে। ৩ ফুট বাই ৪ ফুট সাইনবোর্ডের অনুমোদন নিয়ে যদি ৩০ ফুট বাই ৪০ ফুট সাইনবোর্ড তৈরি করেন, সেখানে যদি এলইডি লাইট লাগানো হয়, সেটা অবৈধ। এভাবে আইন অমান্য করে ঢাকা শহরে আপনারা ব্যবসা করতে পারবেন না। যা কিছুই করেন না কেন, সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিতে হবে।
ডিএনসিসি এলাকার সড়ক ও ফুটপাথে অবৈধভাবে রাখা সামগ্রী উচ্ছেদ ও নিলামে ডিএনসিসির ১০টি অঞ্চলে একযোগে মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। ফুটপাথ ও সড়কে রাখা নির্মাণসামগ্রী আটক করে সেগুলোতে নিলাম বিক্রি করে দিচ্ছে ডিএনসিসি। মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম বলেন, যত ক্ষমতাবানই হোন না কেন এই শহরের ফুটপাথে কোন ধরনের নির্মাণসামগ্রী বা অন্য কোন সামগ্রী রেখে ব্যবসা করতে পারবেন না।

 


আরো সংবাদ



premium cement