বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে মনে হয় বেগম জিয়া কারাগারে থাকলেই ভালো হতো : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বেগম জিয়ার প্রতি প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেতাদের কথাবার্তায় মনে হয়, সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বেগম জিয়া কারাগারে থাকলেই ভালো হতো।
গতকাল রোববার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী। বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহে অন্তরীণ রাখা হয়েছেÑ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের প্রতি সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুলের বক্তব্যকে হাস্যকর অভিহিত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিআরপিসিতে (দণ্ডবিধি) উল্লিখিত তার ক্ষমতাবলে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে প্রথমে ৬ মাস মুক্তি দিয়েছেন, পরে আরো ৬ মাস সেটি বর্ধিত করেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের উচিত ছিল এই মহানুভবতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো, কৃতজ্ঞতা জানানো। কারণ তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তার তো কারাগারের ভেতরেই থাকার কথা ছিল, তিনি আদালত থেকে জামিন পাননি। কিন্তু তার পরিবর্তে তারা যেভাবে কথাবার্তা বলছেন, এতে মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী যে মহানুভবতা দেখিয়েছেন, এটি না দেখালেই ভালো হতো।
ড. হাছান মাহমুদ শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীনভাবে সাজাপ্রাপ্ত বেগম জিয়াকে মুক্তি দেয়ার পরও বিএনপি নেতাদের কথার কারণে জনগণের পক্ষ থেকে বেগম জিয়াকে আবার কারাগারে পাঠানো দাবি উঠতে পারে। এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর বক্তব্য ‘বিএনপি কখনো হত্যার রাজনীতি করে না’Ñ এ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই তো বিএনপির উন্মেষ। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই ক্ষমতা দখল এবং ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করেন। সেই ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য জিয়াউর রহমান হাজার হাজার সেনাসদস্য এবং আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। বেগম খালেদা জিয়াও সেই হত্যার রাজনীতি অব্যাহত রেখেছিল। তাদের মুখে এ কথা মানায় না।
এ সময় সাংবাদিকরা আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু এবং হাটহাজারী মাদরাসায় বিশৃঙ্খলার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, মাওলানা আহমদ শফীর জন্ম আমার নির্বাচনী এলাকার নিজের উপজেলায় এবং আমার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে। তিনি আলেমদের মধ্যে এবং ঐ অঞ্চলে কতটুকু জনপ্রিয় ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন, সেটি তার নামাজে জানাজা থেকে বোঝা যায়। হাটহাজারী মাদরাসার বিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু সেটি যে মাদরাসার দীর্ঘদিনের মহাপরিচালকের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করে থাকবে, সেটিই স্বাভাবিক। এ সময় হেফাজতে ইসলামের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, এটি হেফাজতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এগুলো নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না।
সিনেমা হল খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সিনেমা হলগুলো খুলে দেয়ার জন্য সিনেমা হলের মালিক, সিনেমার পরিচালক, প্রযোজকদের পক্ষ থেকে দাবি আছে। তাদের সাথে এ মাসের শুরুতে আমি বসেছিলাম। শিগগিরই আবার তাদের সাথে বসে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। মন্ত্রিপরিষদে রদবদল প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি ছাড়া অন্য কেউ এ নিয়ে বলার ক্ষমতা রাখেন না।