২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুবাই ও আবুধাবিগামী যাত্রীরা হয়রানির শিকার

রিটার্ন প্যাসেঞ্জার যাওয়ার পর ফাঁকা থাকলে নতুন টিকিট বিক্রি -বিমান এমডি
-

ছুটিতে এসে আটকা পড়া দুবাই ও আবুধাবিগামী ফ্লাইটের যাত্রীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিট সেলস অফিসে গিয়ে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে নির্ধারিত দিনের ফ্লাইটের টিকিট কাটতে না পেরে এখন অনেকে চাকরি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন। এর সাথে আবার যোগ হয়েছে কোভিড-১৯ পরীক্ষার রিপোর্ট যথাসময়ে পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা।
গত দু’দিন ধরে ঢাকার মতিঝিলের বিমান অফিস ও চট্টগ্রামের বিমান অফিসে দুবাই ও আবুধাবিগামী ফ্লাইটের যাত্রীরা ফিরতি টিকিট কনফার্ম করানো ও নতুন টিকিট কাটতে ভিড় জমান। অনেকে আবার ফিরতি টিকিট কেটে দেশে আসার পর কোভিড-১৯ পরীক্ষার রিপোর্ট না পাওয়ার কারণে টিকিট কনফার্ম করতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ সময় বিমান অফিসে অবস্থান করার পরও অনেকে নির্ধারিত দিনের টিকিট কাটতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
গতকাল আবুধাবি থেকে ছুটিতে এসে আটকা পড়া গোপালগঞ্জের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান নয়া দিগন্তকে তার হয়রানি ও ভোগান্তির কথা জানিয়ে বলেন, আমি আবুধাবি থেকে দেশে আসার সময়ই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের রিটার্ন টিকিট কেটেই এসেছিলাম। করোনার কারণে আটকা পড়ায় এখন আমাকে যেভাবেই হোক আবুধাবি যেতে হবে; কিন্তু বিমানের মতিঝিল অফিসে আসার পর আমাকে করোনা টেস্ট সম্পন্ন করে রিপোর্ট নিয়ে আসতে বলা হলো। সাথে তারা আরো চারটি ল্যাবের যেকোনো একটি ল্যাব থেকে টেস্ট করিয়ে সেটির রিপোর্টও করিয়ে আনতে বলা হয়েছে। তাদের কথামতো গতকাল মহাখালী থেকে করোনার পরীক্ষা করিয়ে এসেছি। তখন সেখানে থাকা সেনাবাহিনীর একজন সদস্যকে আরো একটি ল্যাব থেকে পরীক্ষা করানোর কাগজ দেখালে তখন সেটি দেখে তারা আমাকে বলেছেন, করোনার পরীক্ষার টেস্ট এক জায়গা থেকেই শুধু হয়। কে বলেছে এই রিপোর্ট করাতে। ওই স্যার তার মোবাইল নাম্বার দিতে বলেছিলেন আমাকে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি কাল (শনিবার) আবার যাবো মহাখালী। করোনা ভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট আনতে। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তখন ১৬ আগস্টের ফ্লাইটে আবুধাবি যাওয়ার জন্য টিকিট কনফার্ম করব। এখন আমি গুলিস্তানে অবস্থান করছি। এ সময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বায়রা যারা যাচ্ছে তাদের কাইট্যা খাওয়ার বুদ্ধি আরকি’। তবে তিনি বলেন, আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। এখন রিপোর্ট কী আসে দেখা যাক।
এর আগে ফেনী দাগনভূঞার বাসিন্দা দুবাইগামী যাত্রী মিজান বিমান অফিসে এ প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, দুবাই যাওয়ার টিকিটের দাম সর্বোচ্চ ৩৩-৩৫ হাজার টাকা; কিন্তু সেই টিকিটের দাম এখন তারা চাচ্ছে ৮০ হাজার টাকা। আমরা গরিব মানুষ এত টাকা দিয়ে টিকিট কাটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এ কথা বলে বিমান অফিস ত্যাগ করেন। গতকাল মিজানের মোবাইলে কথা বললে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। শুধু মিজান আর মনির নয়, ঢাকা ও চট্টগামের বিমান অফিসে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শত শত বিদেশগামী যাত্রী ফ্লাইট ধরার জন্য ভিড় করেন। কিন্তু তাদের কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দিতে পারেননি বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, হঠাৎ যাত্রীদের চাপ বাড়ার কারণে বিমান সংস্থাগুলো কিছুটা বিপাকে পড়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ থেকে শুধু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, এমিরেটস, কাতার এয়ারওয়েজ ও টার্কিশ এয়ারলাইন্স সীমিত সংখ্যায় মধ্যপ্রাচ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বলে এয়ারলাইন্স-সংশ্লিøষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এরমধ্যে বিমান মধ্যেপ্রাচ্যে শুধু দুবাই ও আবুধাবি রুটে ফ্লাইট চালাচ্ছে।
গতকাল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোকাব্বির হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, দুবাই-আবুধাবি রুটে ফ্লাইট বাড়ানোটা আমাদের ওপর নির্ভর করে না। আবুধাবিতে যে রেসট্রিকশন ছিল সেটি তুলে দেয়ায় প্যাসেঞ্জার বাড়ছে; কিন্তু এই মাসে যে কয়টা ফ্লাইট ছিল সেগুলো শেষ। আগামী মাসের শিডিউলটা দিলেই সমস্যাটা মিটে যেত। কিন্তু দুবাই এখনো দেয়নি। আশা করছি আগামী সপ্তাহে দেবে। দিলেই সমস্যাটা মিটে যাবে। তিনি বলেন, আগামী মাসের ফ্লাইটগুলো ওপেন করে দিতে পারলে আমাদের যেসব রিটার্ন প্যাসেঞ্জার এবং যাদের টিকিট আছে তাদেরকে আমরা আগে দিয়ে দেবো। এরপর যদি থাকে তখন নতুন টিকিট বিক্রি করব। এমন ডিসিশন দিয়ে দিয়েছি গতকাল। এ সময় তিনি বলেন, আগে তো আমাদের ফ্লাইট আন্ডারলোড যেত। তখন মানুষ যায়নি। এগুলো তাদের এখান থেকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হতো। পারমিশন করতে হতো। পারমিশন হতো আবার হতো না। এমনও হয়েছে, ক্লিয়ারেন্স না হওয়ায় ফ্লাইটে ৪০ জন যেতে পারেনি। এখন ১১ আগস্ট থেকে এটি তুলে দেয়া হয়েছে। এখন সবাই একসাথে যেতে চাইছে। এটা তো সম্ভব না। পাঁচ মাসের প্যাসেঞ্জার আটকা আছে। ছয়টি ফ্লাইটে তো আর হবে না। আগামী মাসে ফ্লাইটের শিডিউলগুলো যদি এই সপ্তাহে পেয়ে যাই তাহলে ফ্লাইটগুলো ওপেন করে দেবো। টিকিট যাদের হাতে আছে অলরেডি এগুলো আমরা দিয়ে দেবো। যাওয়ার পর যদি ফাঁকা থাকে তাহলে আমরা নতুন করে টিকিট বিক্রি করব। টিকিট বিক্রির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের ফ্লাইটে সিট যাই থাকুক আমরা ২০০-এর বেশি যাত্রী নিতে পারছি না। এমিরেটস গভর্মেন্টের রেসট্রিকশন এটি। ২ শ’ নিলে এমনিতেই আমার এক শ’ নাই। তারপরে কোভিডে ১০ থেকে ১৫ জন যেতে পারে না। তাহলে আমি খরচটা কিভাবে তুলব। আমিরাত কাতার এয়ারওয়েজ ফুয়েল পায় ফ্রি। আমার তো সেখানে ৩০ পারসেন্টস খরচ করি।’ বিমান অফিসের কাউন্টার থেকে যাত্রীদের চারটির মধ্যে যেকোনো একটি ল্যাবে গিয়ে (অ্যাপ্রুভাল আনার জন্য) পরীক্ষা করাতে বলা হচ্ছেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার অফিস থেকে কোনো ল্যাবের ঠিকানা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি যাত্রীরা প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আমি তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো। সাথে সাথে বের করে দেবো।


আরো সংবাদ



premium cement
পলাশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মনা, সম্পাদক রনি তীব্র গরমে আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না বগুড়া পশ্চিম সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের উদ্যোগে ভার্চুয়ালি রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত তেঁতুলিয়া নদীর তীরে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার নওগাঁ সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত বান্দরবানে কেএনএফের তৎপরতার প্রতিবাদে ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পেনশন স্কিম পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে দেশে বৃদ্ধাশ্রম থাকবে না : ডিসি নারায়ণগঞ্জ চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু ফরিদপুরে সেদিন কী ঘটেছিল : বিবিসির প্রতিবেদন ইসরাইলের কাছে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করবে যুক্তরাষ্ট্র স্বর্ণের দাম কিছুটা কমলো

সকল