বাংলাদেশ-মিয়ানমার অপরূপ মৈত্রী সড়ক
- হুমায়ুন কবির জুশান (উখিয়া, কক্সবাজার)
- ১৫ আগস্ট ২০২০, ০৬:০৮
বিশাল আকাশের নিচে বিস্তৃত এক অপরূপ সাজে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক। এর পাশ দিয়ে চলে গেছে ঘুমধুমের আঁকাবাঁকা রাস্তা। বালুখালী কাস্টমস ঘেঁষে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়কটিতে প্রাতঃভ্রমণে আসেন অনেকেই। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন বিকেলে এনজিওকর্মী তরুণ-তরুণীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো ছিল। সারা দিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ শেষ করে বিকেলে মুক্ত বাতাস খেতে আসতেন তারা। করোনার ভয়ে এখন আর আসেন না। তাই এই মনভুলানো সড়কটি এখন ফাঁকা। আকাশের পানে চেয়ে যতদূর যাওয়া যায় দেখা মিলেছে মেঘের মিতালির। সে মিতালির পরশ মেখে অপরূপ রূপে সেজেছে সড়ক।
উখিয়ার বালুখালী আর নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা ঘুমধুমের বিস্তৃত ভূমি নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক ভ্রমণপ্রেমিকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়ার ঘাট হয়ে প্রবেশপথ। এশিয়ান হাইওয়ের ট্রান্স রোডের অংশ হিসেবে দুই কিলোমিটার সড়কের ৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্পন্ন হয়েছে এ মৈত্রী সড়ক। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্য প্রসারে এ সড়ক নির্মাণ করা হয়।
বাণিজ্যিকভাবে ওই সড়ক চালু না হলেও পর্যটন স্পট হিসেবে এটি ইতোমধ্যে প্রসার লাভ করেছে। নানা রঙের বাহারি সাজে সেজেছে এটি। মিয়ানমারের সীমান্ত কাঁটাতারের বেড়া, এই সড়কটির আশপাশ পাহাড় ও লতাপাতায় ঘেরা সড়ককে দিয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। অনেকেই এখানে বেড়াতে আসেন। সকাল-দুপুর-বিকেল-সন্ধ্যা একেক সময়ে একেক রূপে দেখা দেয় মৈত্রী সড়ক। আকাশে কখনো সাদা মেঘের ভেলা, কখনো কালো মেঘের আনাগোনা, কখনো ধূসর আর গোধূলি বেলায় আবিরের রঙে সাজে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়কের আকাশ। সন্ধ্যায় ওপরে আকাশের আবিরের রঙ প্রতিফলিত হয় নিচের বিশাল সড়কের ওপর। সবমিলে এক অসাধারণ দৃশ্যের দেখা মেলে সেখানে। দিগন্তজুড়ে দেখা মেলে সবুজের আলপনা। তাই সড়কটির নিরিবিলি পরিবেশ দেখতে ভ্রমণপিপাসুরা এখানেই চলে আসেন। আশপাশে কোথাও নগরায়ণের ছোঁয়া নেই, নেই অবকাঠামো আর হোটেল-মোটেলের সুবিধা। তাই প্রত্যন্ত গ্রামীণ বাস্তবতায় মৈত্রী সড়ক দেখতে নাগরিক সুবিধায় অভ্যস্তরা এখানে আসতে পারছেন না। এসব অবকাঠামো উন্নয়ন করতে পারলে তারাও আসতে পারতেন বাংলাদেশ- মিয়ানমার মৈত্রী সড়কের সৌন্দর্য উপভোগ করতে।