২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হুমকির মুখে রংপুরের শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু

সংযোগ সড়কে ভাঙন
রংপুরে তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়কের পাশে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা : নয়া দিগন্ত -

রংপুরে তিস্তা নতুন গতিপথে মোড় নিয়ে আঘাত করেছে শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়কে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যেকোনো মুহূর্তে সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়ে রংপুর-লালমনিরহাটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। জরুরি ভিত্তিতে বস্তা ফেলে সড়কটি রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে এলজিইডি। ঈদের আগে এই বিষয়ে একটি সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল নয়া দিগন্ত।
ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা গেছে গঙ্গাচড়ার শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুর উত্তরে রংপুর-লালমরিহাট সংযোগ সড়কের এসকেএস বাজারসংলগ্ন কৈলাশগঞ্জ ব্রিজের পাড়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে আঘাত হানে তিস্তা। ব্রিজটির উত্তরপাশের ৫০ মিটার অংশজুড়ে ব্লক ও পিচিং ধসে যায়। ভয়াবহ এই ভাঙন দেখতে সেখানে ভিড় জমান সাধারণ মানুষ। আতঙ্কিত মানুষের দাবি যদি দ্রুত গতিতে বস্তা ফেলানো না যায় তাহলে ব্রিজটি ভেঙে পূর্ব পাশেও হাজার হাজার বাড়িঘর আবাদি জমি তিস্তাতে চলে যাবে। শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতু অচল হয়ে পড়বে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে রংপুরের সাথে লালমনিরহাটের সড়ক যোগাযোগ। আবার ৬০ কিলোমিটার ঘুরে সড়ক পথে আসতে হবে লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ, পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা ও আদিতমারীর হাজার হাজার মানুষকে।
স্থানীয় লক্ষ্মিটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হাদি জানিয়েছেন, বিলীন হয়ে যাওযা শংকদর গ্রামের পাশের একমাত্র রাস্তাটি রক্ষা করার জন্য আমরা শত আকুতি জানিয়েছিলাম ডিসিসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে। কিন্তু মাত্র ছয় হাজার বস্তা দিয়ে রক্ষা করা যায়নি। আমরা ২০ হাজার বস্তা দাবি করেছিলাম। পাউবো সেটি দেয়নি। সে কারণে রাস্তাটি ভেঙে তিস্তা নতুন গতিপথ তৈরি করেছে। গেলো এক সপ্তাহের ব্যবধানে পশ্চিম ইচলি, পূর্ব ইচলিসহ পাঁচটি গ্রামের প্রায় ৫০০ বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। সোমবার রাতে আবারও পানি বৃদ্ধির কারণে গতকাল সকালে ভাঙন এসে ধরেছে শেখ হাসিনা তিস্তা সংযোগ সেতুর এসকে এস বাজারসংলগ্ন ব্রিজের উত্তর পাশে। সেখান থেকে পিচিং ও বোল্ডার সরে যাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে সড়কটি ভেঙে যাবে।
গতকাল বিকেল ৫টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকৌশল দফতরের সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইবরাহিম জানান, এসকেএস বাজারের পাশের তিস্তা সড়ক সেতুর সংযোগ সড়কের ব্রিজের উত্তর পাশে পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙন ধরেছে। ব্লক ও পিচিং সরে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু ও সংযোগ সড়ক লালমনিরহাট এলজিইডি বাস্তবায়ন করলেও বিষয়টি জানতে পেরে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। এক হাজার ২০০ বস্তা দিয়ে ভরাটের কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত ৭০০ বস্তা ফেলানো হয়েছে। আরো এক হাজার বস্তা আনা হচ্ছে।
তবে একই সময়ে সেখানে উপস্থিত এলাকার লোক রফিকুল ইসলাম, আব্দুল গফুর, দুলাল উদ্দিন, শাহজাহানসহ অন্যরা জানিয়েছেন বিকেল ৫টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ আড়াইশ বস্তা ফেলা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এখানে ১০ হাজার বালুর বস্তা ফেলা না হলে এটি কোনোভাবেই টেকানো যাবে না। কারণ সেখানে ভাঙনের কারণে গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি স্রোতও বাড়ছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, সোমবার রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়ছে। তবে তা এখনো বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। রাত অবধি সেটি বাড়তে থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু অববাহিকা এলাকার ৫০ হাজার মানুষ চরম আতঙ্কে সময় পার করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement