৬ সরকারি ব্যাংককে খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে ২,১৪৪ কোটি টাকা
অর্থবছর ২০২০-২১- সৈয়দ সামসুজ্জামান নীপু
- ০৫ আগস্ট ২০২০, ০০:০০
চলতি অর্থবছরে (২০২০-২০২১) রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ২,১৪৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ১ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা এবং অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৫৩৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা আদায় করতে হবে। এই ছয় ব্যাংকের মধ্যে রয়েছেÑ সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল।
ওই দিকে, সমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল মোট ৩ হাজার ১০৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে শ্রেণীকৃত ঋণ থেকে ২ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা এবং অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ৪০২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।
সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর সাথে ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) আওতায় এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে করোনার কারণে লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করে কমিয়ে ধরা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে খেলাপি ঋণ আদায়, পরিচালন মুনাফা অর্জন, লোকসানি শাখা হ্রাস, মামলা নিষ্পত্তিকরণ ইত্যাদি সূচকের লক্ষ্যমাত্রা সমাপ্ত অর্থবছরের তুলনায় কমানো হয়েছে। তবে বিভিন্ন সূচকে লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করা হলেও অবলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা সামান্য বাড়ানো হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৭ হাজার ৮০২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছর শেষে অর্থাৎ আগামী জুন শেষে অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের জুন শেষে ছয় ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল ৫৩ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ২০২০ সালের জুন শেষে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ সমাপ্ত অর্থবছরে ছয়টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ১৩ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর বিপরীতে চলতি অর্থবছরে (২০২০-২০২১) খেলাপি ঋণের স্থিতি কমিয়ে আনতে হবে মাত্র ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
জানা গেছে ব্যাংক ছয়টির নিজস্ব হিসাবে করোনার প্রভাবে তাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে বলে তারা জানিয়েছে। তবে এর সাথে আরো ৭টি (মোট ১১টি) সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি যোগ করলে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা । করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এই ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের করা এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, প্রতিবেদনে আর্থিক ক্ষতির কারণ হিসেবে পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি, সুদ আয় কমে যাওয়া ও অন্যান্য সার্ভিস চার্জ হ্রাস এবং করোনাকালীন সময়ে দুই মাসের সুদ স্থগিত রাখাসহ আরো কয়েকটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এসব কারণে সোনালী ব্যাংকের ক্ষতির প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। জনতার ২,৫৩৩ কোটি টাকা, অগ্রণীর ১,০১৫ কোটি টাকা, রূপালীর ৮৫৬.৯০ কোটি টাকা, বেসিকের ৩১৯ কোটি টাকা, বিডিবিএলের ১৫০ কোটি টাকা, কৃষি ব্যাংকের ৪৪০ কোটি টাকা, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ১৭৯ কোটি টাকা, কর্মসংস্থান ব্যাংকের ৬১ কোটি টাকা, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ২৪৭ কোটি টাকা ও আসনার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের ক্ষতি হবে ৩১৬.২৫ কোটি টাকা। এর বাইরে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনও তাদের আর্থিক ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা