১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
টানা বড় উত্থানে শেয়ারবাজার

শেয়ারবাজারে বেড়েছে বিদেশী বিনিয়োগ

-

একের পর এক বড় উত্থান ঘটছে শেয়ারবাজারে। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় উত্থানের মাধ্যমে টানা সাত কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকল শেয়ারবাজার। মহামারী করোনা শুরুর পর শেয়ারবাজারে এমন টানা উত্থান আর দেখা যায়নি। এক দিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন কমিশনের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, অন্য দিকে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে যাওয়ায় বাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ২৯৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মধ্যে টানা সাত কার্যদিবসের উত্থানে সূচকটি ২০৩ পয়েন্ট বাড়ল। প্রধান সূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৯৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ দিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে কমেছে ১১৬টির। আর ৯১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দিনভর বাজারে লেনদেন হয়েছে ৬৭৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৪৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১২৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
লেনদেনের গতি বাড়ার দিনে টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪ কোটি দুই লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ২১ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২০ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে পরের অবস্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।
এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ লাফার্জহোলসিম, গ্রামীণফোন, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, অ্যাকটিভ ফাইন, খুলনা পাওয়ার, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স এবং সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
অপর দিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৬৪ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি দুই লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৫৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৮টির, কমেছে ৮৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭০টির।
শেয়ারবাজারে বেড়েছে বিদেশী বিনিয়োগ : মহামারী করোনার ধাক্কায় দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। গেল (২০১৯-২০) অর্থবছর শেষে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) কমেছে ৩৬.১৭ শতাংশ। তবে উল্টো চিত্র শেয়ারবাজারে। একই সময় শেয়ারবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে ৬১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-জুন সময়ের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যের (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) ওপর করা হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেল অর্থবছরে দেশে এফডিআই এসেছে ৩১৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার, এর মধ্যে নিট বিদেশী বিনিয়োগ ১৮০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের চেয়ে এফডিআই কমেছে ৩৬ দশমিক ১৭ শতাংশ ও নিট কমেছে ৩১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরে (২০১৮-১৯) এফডিআই এসেছিল ৪৯৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার এবং নিট এফডিআই এসেছিল ২৬২ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
এ দিকে গত অর্থবছরে দেশের শেয়ারবাজারে বেড়েছে বিদেশী বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট)। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শেয়ারবাজারে নিট বিদেশী বিনিয়োগ এসেছিল ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাঁড়ায় ২৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। সেই হিসাবে পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট বেড়েছে ৬১ দশমিক ৪০ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১১ মাস (জুলাই-মে) সময়ে পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট ছিল মাত্র এক কোটি ২০ ডলার। কিন্তু অর্থবছরের শেষ মাস জুনে এসে তা দাঁড়ায় ২৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। অর্থাৎ এক মাসে শেয়ারবাজারে বিদেশীরা বিনিয়োগ করেছেন ২৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার।


আরো সংবাদ



premium cement