পিরোজপুরে স্বামী, স্ত্রী ও শিশু সন্তানের হাত বাঁধা ঝুলন্ত লাশ
- পিরোজপুর সংবাদদাতা
- ০৫ আগস্ট ২০২০, ০০:০০
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় একই পরিবারের তিনজনের হাত বাঁধা ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার সকালে জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ধানীসাফা ইউনিয়নের ধানীসাফা গ্রামের একটি ঘর থেকে একই পরিবারের স্বামী, স্ত্রী ও শিশু সন্তানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানান মঠবাড়িয়া থানার ওসি মাকসুদুজ্জামান মিলু।
নিহতরা হলেন মঠবাড়িয়া উপজেলার ধানীসাফা বাজারসংলগ্ন ধানীসাফা গ্রামের মৃত রতন হাওলাদারের ছেলে অটোচালক আয়নাল হক হাওলাদার (৩৫), আয়নাল হকের স্ত্রী খুকুমনি (২৫) ও তাদের তিন বছরের মেয়ে আসফিয়া ইসলাম।
পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহত আয়নাল হকের আপন বড় ভাই হেলাল হাওলাদার (৮০), প্রতিবেশী চাচা মালেক হাওলাদার (৫২), চাচাতো ভাই বেল্লাল হাওলাদার (৪৫) ও একই গ্রামের মাহবুব হাওলাদারকে (১৮) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, মো: আয়নাল হক হাওলাদার নিজ ইউনিয়ন ধানীসাফা বাজারের কাছে সড়কের পাশে গত পাঁচ মাস ধরে একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী খুকু মণি ও তাদের তিন বছর বয়সী মেয়ে আসফিয়াকে নিয়ে বসবাস করতেন। গত বৃহস্পতিবার দিনভর আয়নাল অটোচালিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। রাতের খাবার শেষে পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে অজ্ঞাত একদল দুর্বৃত্ত ঘরের মেঝের সিঁদ কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর দুর্বৃত্তরা পরিবারের গৃহকর্তা, তার স্ত্রী ও একমাত্র শিশু কন্যাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। পরে লাশের হাত-পা বেঁধে ঘরের আড়ার সাথে লাশ ঝুলিয়ে রেখে ঘরের মালামাল তছনছ করে পালিয়ে যায়।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নিকট প্রতিবেশী চাচাতো বোন মহিমা খাতুন (১৫) ওই বাড়িতে যায়। এ সময় সে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে দরোজায় ধাক্কা দিলে দরোজা খুলে যায়। এরপর তিনজনের লাশ ঝুলতে দেখে সে চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুরে মর্গে পাঠায়।
আয়নালের বড় বোন দুলীয়া বেগম (৩৮) বলেন, আমার ভাইয়ের তেমন কোনো শত্রু ছিল না। তবে আট বছর আগে চাচা মালেক হাওলাদারের কাছ থেকে পাঁচ কাঠা জমি ক্রয় করলেও জমিতে দখল পাননি আমার ভাই। এ নিয়ে তার সাথে বিরোধ ছিল।
নিহত আয়নালের স্ত্রীর চাচা আব্দুল মান্নান (৪০) জানান, আয়নালের পরিবার ভাড়া বাসায় থাকত। বাসাটি তেমন নিরাপদ ছিলনা বলে তাদেরও কিছু স্বর্ণালঙ্কার বাসার মালিক মোজাম্মেল হোসেনের স্ত্রী হাওয়া বেগমের কাছে নিরাপত্তার জন্য গচ্ছিত রাখা ছিল। ঈদ উপলক্ষে ওই স্বর্ণালঙ্কার গত বুধবার বাসায় নিয়ে আসে। এরপরই বৃহস্পতিবার রাতে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মঠবাড়িয়া অফিসার ইনচার্জ মো: মাসুদুজ্জামান মিলু বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তিনজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এটি কোনো আত্মহত্যার ঘটনা নয়। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যার রহস্য উদঘাটনে চারটি গোয়েন্দা সংস্থা কাজ শুরু করেছে। এ ঘটনায় নিহত খুকু মনির বাবা আবুল কালাম সর্দার বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গত একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়নি বলে জানান মামলার তদন্তকারী অফিসার এস আই মো: বশির আহমেদ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা