২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
দুবাই ড্যান্স ক্লাবে নারী পাচার

গডফাদার আজম দুই সহযোগীসহ গ্রেফতার

দুবাইয়ের চার তারকা হোটেল মালিক আজমকে সহযোগীসহ নারী পাচারের দায়ে আটক করে সিআইডি পুলিশ : নয়া দিগন্ত -

দুবাই ড্যান্স ক্লাবে নারী পাচার চক্রের গডফাদার আজম খানকে দুই সহযোগীসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজমের দুই সহযোগী হলোÑ আলামিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ড এবং ময়না। সিআইডি বলছে, আজম দীর্ঘ ৮ বছর ধরে দুবাইতে বিভিন্ন ড্যান্স ক্লাবে নারী পাচার করে আসছিল বলে স্বীকার করেছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, একটি চক্র দীর্ঘ দিন ধরে দুবাইতে উচ্চ বেতনে কাজের প্রলোভনে বিভিন্ন ড্যান্স ক্লাবে নারী পাচার করে আসছে। ওই অভিযোগ তদন্তে নেমে গডফাদার আজম খানও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়।
দুবাইতে ড্যান্স ক্লাবে ও হোটেলে উচ্চ বেতনে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে দেশ থেকে কমবয়সী নারীদের দুবাই পাচার করত আজম। আজমের সহযোগীরা তরুণীদের ড্যান্স প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে মোটা অঙ্কের বেতনের চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখাত। এ জন্য তাদের অগ্রিম ১ মাসের বেতন ২০, ৩০ অথবা ৫০ হাজার টাকা দিতেন তারা।
দুবাইতে ফরচুন পার্ল হোটেল অ্যান্ড ড্যান্স, হোটেল রয়েল ফরচুন, হোটেল ফরচুন গ্রান্ড ও হোটেল সিটি টাওয়ারের মালিকদের একজন আজম। এসব ক্লাব ও হোটেলগুলোতে কাজের নামে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কম বয়সী সুন্দরী তরুণীদের আনা হতো। এরপর তাদের নানা অপকর্মে লিপ্ত হতে বাধ্য করত আজম ও তার সহযোগীরা।
ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ আরো বলেন, গডফাদার আজম গত ৮ বছর ধরে সহ¯্রাধিক বাংলাদেশী তরুণীকে দুবাই পাচার করেছে। এই কাজে সহযোগিতা করার জন্য দেশে তার অর্ধশতাধিক সহযোগী দালাল রয়েছে। নারী পাচারের জন্য নির্দিষ্ট কিছু এজেন্সি আছে এবং একটি বিশেষ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে সে নারী পাচার করত।
নারীরা তাদের কথামতো কাজ করতে রাজি না হলে তাকে টর্চার, ইলেকিট্রিক শক, মারধর করা হতো। নারীদের নির্যাতনের অনেক ভয়েস রেকর্ড আমরা আজমের মোবাইল থেকে পেয়েছি। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুবাই সরকার আমাদের অ্যাম্বাসিকে জানালে চক্রের গডফাদার আজমের পাসপোর্ট জব্দ করে তাকে দেশে ফেরত পাঠায় কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, নারী পাচারের অভিযোগে দুবাই পুলিশ আজমকে গ্রেফতার করেছিল। এক মাস সে জেলে ছিল। সেখানে তার পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। এরপর তাকে দুবাই থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে আসার পর আজম আত্মগোপনে যায়। বারবার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে। নতুন পাসপোর্ট করে সে সীমান্ত দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে পালানোর চেষ্টা করে। তবে এর আগেই তার দুই সহযোগীসহ তাকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গডফাদার আজম স্বীকার করেছে, গত ৮ বছরে সে সহ¯্রাধিক বাংলাদেশী তরুণীকে দুবাই পাচার করেছে। গডফাদার আজমের বিরুদ্ধে দেশে ১৫টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ৬টি হত্যা মামলা। সিআইডি বাদি হয়ে গত ২ জুলাই রাজধানীর লালবাগ থানায় আরো একটি মামলা করেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement