২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পতন দিয়ে অর্থবছর শুরু পুঁজিবাজারের

-

সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও সপ্তাহের শেষ ও অর্থবছরের প্রথম কার্যদিবস গতকাল বৃহস্পতিবার পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ২ পয়েন্ট এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট। সেই সাথে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ৩ হাজার ৯৮৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৩৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ ২ পয়েন্ট কমে ৯২২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬টির। আর ২১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৫৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪৭৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ১০ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস ৭ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এর পরের স্থানে রয়েছে ওয়াটা কেমিক্যাল। এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্লাস্কোস্মিথকেইন, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, যমুনা ব্যাংক, এমজেএল বিডি, ফার্মা এইড এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১১ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ১২৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৮টির, কমেছে ২৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৯টির।
ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ : শেয়ার ও ইউনিট বেচাকেনার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীদের তথ্য চেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ব্রোকারেজ হাউজটির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন এর মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদ উল্লাহ। এতে হাউজটির মাধ্যমে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ব্রোকারেজ হাউজটির কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও টাকা আটকে রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের এসব টাকা ও শেয়ার ফিরিয়ে দেয়ার অংশ হিসেবেই বিনিয়োগকারীদের তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ এখন বন্ধ। এ জন্য ব্রোকারেজ হাউজটির বৈধ গ্রাহকদের তাদের শেয়ার ও অর্থ ফেরত পেতে ডিএসইর প্রধান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার (সিআরও) কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া তথ্য ও সহায়তার জন্য ০২-৯৫৬৪৬০১ টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি হটলাইনও চালু করেছে ডিএসই। এই হটলাইনে তথ্য ও সহায়তার জন্য যোগাযোগ করা যাবে। এ ক্ষেত্রে ০১৭১৩২৭৬৪১৬ মোবাইল নম্বরে অথবা রপধষফ@ফংব.পড়স.নফ ই-মেইলে যোগাযোগ করতে হবে।
এর আগে গত রোববার এ বিষয়ে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে ডিএসই। ওই সময় ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক বলেন, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ একটি পুরাতন প্রতিষ্ঠান। এ হাউজটির আর্থিক হিসাব খারাপ ছিল না। এমনকি মে মাসেও সমন্বিত আর্থিক হিসাবে ঘাটতি ছিল না। তারপরেও অনাকাক্সিক্ষতভাবে একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেছে, যা সমাধানে ডিএসই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
হাউজটির মালিকরা যেন বিদেশে যেতে না পারে, সে লক্ষ্যে পল্টন থানায় অভিযোগ করা হয় এবং মালিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার জন্য পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করে। এখন তাদের ১০টির বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের ৮২ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট ফ্রিজ করা হলেও বিনিয়োগকারীদের দেনা-পাওনার বিষয়টি এখনো পরিষ্কার না। ৮২ কোটি টাকার বাইরে ওই হাউজে বিনিয়োগকারীদের কত টাকার শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে বা নগদ কত টাকা পাওনা রয়েছে, তা পরিষ্কার না। তবে ফ্রিজ করা শেয়ারের বাইরে যদি পাওনা থাকে, তাহলে ট্রেক বিক্রি করে তা মেটানো হবে।


আরো সংবাদ



premium cement