১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মহিলাদের আয়ুষ্কাল পুরুষের চেয়ে বেশি

দেশে জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৭৪ লাখ, আয়ুষ্কাল ৭২.৬ বছর
-

দেশে জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৭৪ লাখ ৩০ হাজার। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২০ সালের ১ জানুয়ারির তথ্যানুযায়ী জনসংখ্যা ২ লাখ ৮৩ হাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। আর গড় আয়ুষ্কাল বেড়ে হয়েছে ৭২ দশমিক ৬ বছর। তবে মহিলাদের আয়ুষ্কাল পুরুষের চেয়ে বেশি। পুরুষের আয়ু ৭১.১ বছর আর মহিলাদের ৭৪.২ বছর। আর জনসংখ্যার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি। পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ৩৮ লাখ এবং মহিলা হলো ৮ কোটি ৩৬ লাখ ৩০ হাজার বলে পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ দিকে, প্রকাশনা অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার নির্দেশনা পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আমলে নিচ্ছে না। তিনি বিবিএসের সব প্রকাশনা ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় করার জন্য নির্দেশ করলেও তা পালন করছে না প্রতিষ্ঠানটি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিবিএস ভবনের অডিটোরিয়ামের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস অব বাংলাদেশ (এমএসভিএসবি) ৩য় পর্যায়’ প্রকল্পের ‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস-২০১৯’ এর প্রতিবেদনটি প্রকাশ অনুষ্ঠানে জুমে যুক্ত হয়ে মন্ত্রী এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনটি পুরোপুরি ইংরেজিতে প্রকাশ করেছে বিবিএস। ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাতে প্রতিবেদনটি না তৈরি করায় ক্ষোভ ও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। এ ছাড়াও বক্তৃতা করেন বিবিএসের উপ-মহাপরিচালক ঘোষ সুব্রত। মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক এ কে এম আশরাফুল হক।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মূল বইটা পুরোপুরি ইংরেজিতে করা হয়েছে। আমি বারবার বলে আসছি, ইংরেজিকে সম্মান করি, খুবই প্রয়োজন আছে। প্রতিবেদনটা দেশের মানুষের মধ্যে, জেলা, উপজেলা, প্রশাসনে, রাজনীতিতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, কলেজে ছড়াতে হলে এটা বাংলায় করতে হবে। বাংলায় করলে প্রতিবেদনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। বোধগম্য হবে।
এম এ মান্নান বলেন, পরিসংখ্যানের গুরুত্ব যে কত বেশি, আমি বুঝিয়ে বলতে পারব না। এর গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। আমরা অনেকেই এখনো এ বিষয়ে সচেতন নই। তবে সচেতন হতে বাধ্য হবো। কারণ পরিসংখ্যানের কোনো বিকল্প নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের হিসাবে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল ৭২ দশমিক ৬ বছর, যা ২০১৮ সালে ছিল ৭২ দশমিক ৩ বছর। এ ছাড়া ২০১৭ সালে ৭২ বছর, ২০১৬ সালে ৭১ দশমিক ৬ বছর এবং ২০১৫ সালে ছিল ৭০ দশমিক ৯ বছর। ২০১৯ সালে পুরুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু হচ্ছে ৭১ দশমিক ১ বছর। ২০১৮ সালে ছিল ৭০ দশমিক ৮ বছর, ২০১৭ সালে ৭০ দশমিক ৬ বছর, ২০১৬ সালে ৭০ দশমিক ৩ বছর এবং ২০১৫ সালে ছিল ৬৯ দশমিক ৪ বছর। অন্য দিকে মহিলাদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ২০১৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে প্রত্যাশিত গড় আয়ু হচ্ছে ৭৪ দশমিক ২ বছর, ৭৩ দশমিক ৮ বছর, ৭৩ দশমিক ৫ বছর, ৭২ দশমিক ৯ বছর এবং ৭২ বছর।
বিবিএস প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময়ে পুরুষদের প্রথম বিবাহের গড় বয়স কিছুটা কমেছে। তবে বেড়েছে মহিলাদের। পুরুষদের বিবাহের গড় বয়স ২০১৫ সালে ছিল ২৫ দশমিক ৩ বছর। সেটি কমে ২০১৯ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক দুই বছরে। পক্ষান্তরে ২০১৫ সালে মহিলাদের বিবাহের বয়স ছিল ১৮ দশমিক চার বছর। সেটি কিছুটা বেড়ে ২০১৯ সালে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক পাঁচ বছরে।
আগমন ও বহির্গমনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে আগমন ও বহির্গমন উভয়ই এসভিআরএস নমুনা এলাকায় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ২০১৯ সালের প্রাপ্ত তথ্যে ফলাফলে প্রতি হাজার জনসংখ্যার মধ্যে আগমন করে ৭২ দশমিক চারজন, ২০১৫ সালে এটি ছিল ৫৪ দশমিক দু’জন। বহির্গমনের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে নমুনা এলাকার প্রতি হাজার জনসংখ্যার মধ্যে বহির্গমন করে ৭২ দশমিক সাতজন। ২০১৫ সালে এটি ছিল ৫৪ দশমিক চারজন। এ ক্ষেত্রে শহর এলাকায় আগমন ও বহির্গমন উভয়ই উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আর শিক্ষার হারের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সাত থেকে তার বেশি বয়সী জনসংখ্যার মধ্যে এখন শিক্ষার হার ৭৪ দশমিক চার শতাংশ। এ ছাড়া ১৫ বছর থেকে তার ওপরের জনসংখ্যার মধ্যে শিক্ষার হার ৭৪ দশমিক সাত শতাংশ।
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিবিএস প্রতিবেদন বলছে, গত পাঁচ বছরে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার বাড়েনি। প্রায় একই রকম রয়েছে।
প্রতিবেদনে খানার (পরিবারের) বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে পরিবারের আলোর উৎস হিসেবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে ৯৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ পরিবার। যেখানে ২০১৫ সালে ছিল ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ। স্যানিটারি পায়খানা ব্যবহার করে ৮১ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার, যেটি ২০১৫ সালে ছিল ৭৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ। খানা প্রধানের ক্ষেত্রে পুরুষ ৮৫ দশমিক চার শতাংশ এবং মহিলা ১৪ দশমিক ছয় শতাংশ। যেটি ২০১৫ সালের তুলনায় মহিলাদের ক্ষেত্রে বেড়েছে। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে কমেছে। ট্যাপ বা নলকূপের পানি ব্যবহার করছে ৯৮ দশমিক এক শতাংশ পরিবার, যেটি ২০১৫ সালে ছিল ৯৭ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে এখনো ১.৫ শতাংশ মানুষ উন্মুক্ত স্থানে পায়খানা করছে।
বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্বও বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ২০১৫ সালে ছিল এক হাজার ৭৭ জন, সেটা ২০১৯ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে এক হাজার ১২৫ জন।


আরো সংবাদ



premium cement
দেশে করোনায় আরো একজনের মৃত্যু উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনের অংশ নিতে মানা সবল-দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার কাজ শেষ হতে কত দিন লাগবে? জনগণের শক্তির কাছে আ'লীগকে পরাজয় বরণ করতেই হবে : মির্জা ফখরুল টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল কাদের ট্রাকচাপায় নিহত ১৪ : তদন্ত কমিটি গঠন, চালক-হেলপার গ্রেফতার নেতানিয়াহুর একগুঁয়েমির কারণে মধ্যস্তকারীর ভূমিকা থেকে সরে যাবে কাতার! আফ্রিদির সাথে বিবাদের বিষয়ে কথা বললেন বাবর বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস হচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের সাথে টেস্ট খেলতে চান রোহিত

সকল