২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ

রংপুরে বাড়িতে ঢুকে আইনজীবীকে গলা কেটে হত্যা : গ্রেফতার ১

-

রংপুর মহানগরীর মডার্ন মোড় সংলগ্ন বারো আউলিয়া গ্রামে গতকাল দুপুরে জুমার নামাজ চলাকালে বাড়িতে ঢুকে গলাকেটে ও পেটে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে প্রবীণ আইনজীবী আসাদুল ইসলামকে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষুব্ধ আইনজীবী ও এলাকবাসী রতন নামে একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে।
নিহত আইনজীবী আসাদুল ইসলামের মুহুরি ইউসুফ জানান, রংপুরে করোনা পরিস্থিতিতে পরিবারকে গ্রামে পাঠানোর কারণে আমার বাড়িতেই খাওয়া-দাওয়া করতেন আইনজীবী আসাদুল। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তিনি মুরগি কিনে আমার বাসায় দিয়ে রান্না করতে বলেন। বেলা ১টা ১১ মিনিটে আমাকে ফোন দিয়ে বলেন জুমার নামাজ শেষে তোমার বাসায় গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করব। ওই সময় তিনি মসজিদে যাওয়ার জন্য অজু করতে ছিলেন কিন্তু দুপুরে সেই রান্না খেতে পারলেন না তিনি। বেলা ১টা ২০ মিনিটের দিকে বাড়িতে ঢুকে ঘরের ভেতরে নৃশংসভাবে তাকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নামাজ শেষ হতে না হতেই শুনি তাকে হত্যা করা হয়েছে।
হত্যাকারী সন্দেহে রতনকে আটককারী প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক জানান, পাশের মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করার জন্য যাওয়ার সময় অ্যাডভোকেট সাহেবের বাড়ির ভেতর থেকে গোঙানির শব্দ আসে। সাথে সাথে আমি চার- পাঁচজনকে নিয়ে পেছনের দিকে যাই। তখন দেখি দেয়াল টপকিয়ে রতন বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সাথে সাথে আমরা তাকে আটক করি। বাড়ির ভেতরে ঢুকে দেখি ঘরের ভেতর অ্যাডভোকেটকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তালা ভেঙে মেঝেতে পড়ে থাকা লাশটি আমরা বাইরে বারান্দায় নিয়ে আসি। পরে তাজহাট থানা পুলিশকে ডেকে রতনকে তাদের হাতে সোপর্দ করি।
রংপুরে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দেড় মাস আগে স্ত্রী এবং ছোট মেয়ে অংকনকে গ্রামের বাড়ি মিঠাপুকুরের বালুয়া মাছুমপুরে পাঠিয়ে দেন আইনজীবী আসাদুল। ছোট মেয়ে অংকন বগুড়া আজিজুল হক কলেজের অনার্সের ছাত্রী। তার বড় মেয়ে আশা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার পর এখন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে স্ত্রী ও ছোট মেয়ে ছুটে আসেন বাড়িতে।
নিহতের ছোট মেয়ে অংকন জানান, এর আগেও আটক রতন চুরির জন্য আমাদের বাড়িতে ঢুকেছিল। এ বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা করা হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আজ আমার বাবাকে ঘরে ঢুকে সে হত্যা করল। আমরা এর বিচার চাই।
নিহত আইনজীবীর স্ত্রী সাহেরা খাতুন জানান, করোনার কারণে আমরা গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। আমার স্বামীকে এভাবে যারা হত্যা করেছে তাদের আমি ফাঁসি চাই।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের আজহার থানার ওসি শেখ রোকনুজ্জামান জানান, তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যার পেছনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ইতোমধ্যেই আমরা জানতে পেরেছি। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে সেটি মিডিয়াকে জানানো হবে। তিনি বলেন, আটক রতনসহ দুর্বৃত্তরা বাড়ির পেছনের দেয়াল টপকিয়ে এবং জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে এবং আইনজীবী আসাদুল ইসলামকে গলাকেটে ও পেটে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী টের পেয়ে দরজা ভেঙে লাশ বাইরে আনে। আটক রতন নিহতের বাড়ির পাশের জাফর আলী ড্রাইভারের পুত্র। তার সাথে আর কারা ছিল তা জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল