ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়ি খাতে জরুরি সাহায্য দাবি বিএসএফএফের

দেশের ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং রফতানি আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী চিংড়ি খাত বর্তমানে যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে তা পর্যালোচনার জন্য গত ২ জুন বাংলাদেশ শ্রিম্প অ্যান্ড ফিশ ফাউন্ডেশনের (বিএসএফএফ) কার্যনির্বাহী বোর্ডের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় চিংড়ি খাতে কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতির স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ও সম্ভাব্য করণীয় বিষয় পর্যালোচনা করা হয়।
সভায় বলা হয়, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি কারণে চিংড়ি খাত গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের চিংড়ি খাতও গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বিশেষ করে চিংড়ি হ্যাচারিগুলো এবং মাঠপর্যায়ের খামারিরা ও কর্মরত কর্মচারীরা সমস্যায় পড়েছেন। এ সমস্যাগুলো এখনই মোকাবেলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এক দিকে যেমন হ্যাচারি পর্যায়ে পিএল উৎপাদন ব্যাহত হবে এবং অন্য দিকে খামার পর্যায়ে উৎপাদন হ্রাস পাবে। চিংড়ি উৎপাদন হ্রাস পেলে প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলো প্রয়োজনীয় কাঁচামাল পাবে না। ফলে সামগ্রিকভাবে এ খাতের কর্মসংস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এ ছাড়াও সাম্প্রতিক আমফান ঝড়ের কারণেও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চিংড়ি খাত ও চিংড়ি খামারিরা গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এ এলাকার চিংড়িঘের ও খামারগুলোর বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে খামারিদের প্রস্তুতকৃত ঘের ও পুকুরগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
এ প্রসঙ্গে চিংড়ি খাতের ক্ষতির প্রকৃতি এবং ব্যাপকতা নিরূপণ করে চিংড়ি খামার ও হ্যাচারিগুলোর জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিএসএফএফের পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ করা হয়। বিশেষ করে স্বল্প সুদে ঋণ ও অন্যান্য উপকরণ সরবরাহের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজনীয় বলে বিএসএফএফ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছে। চিংড়ি খাদ্য ও অন্যান্য উৎপাদন উপকরণ আমদানি ও বিপণন ত্বরান্বিত ও সহজীকরণের জন্য, প্রয়োজন হলে বিকল্প উৎস থেকে এসব উপকরণ আমদানির আশু ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিএসএফএফ আবেদন করেছে। এ ছাড়া আমদানির জন্য ব্যবহৃত বন্দরগুলোয় শুল্ক ছাড়পত্র সহজীকরণের জন্য বিএসএফএফের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হচ্ছে। বিএসএফএফ আগামী অর্থবছরের বাজেটে চিংড়ি খাতবান্ধব শুল্কনীতি গ্রহণের আবেদন জানায়।
বিএসএফএফের বোর্ড মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএসএফএফ চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহমুদুল হক। এতে পরিচালকদের মধ্যে এম এম ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান ইস্পাহানী, উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ ড. সুলতান হাফিজ রহমান, সাবেক মুখ্যসচিব আব্দুল করিম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মো: গোলাম হুসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত লিয়াকত আলী চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত শফি ইউ আহমেদ, এনসিসি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মেঘনা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নুরুল আমিন, বিশ^ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন (সাসার্ড) বিভাগের সাবেক সিনিয়র সেক্টর অপারেশনাল অফিসার ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমদ, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) অপারেশনস ডিরেক্টর ও বিশ^ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সেক্টর ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট ড. জি এম খুরশিদ আলম, প্রাগ্রশোরের (লিঙ্গ ও নারীবাদী প্রশিক্ষণ ও সংস্থান কেন্দ্র) সম্মানিত নির্বাহী পরিচালক ফউজিয়া খন্দকার উপস্থিত ছিলেন।