২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গ্রামগঞ্জে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না

হাটবাজারে গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বেচাকেনা
-

ক্রমশই ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রামক ব্যাধি করোনাভাইরাস। ঢাকাসহ শহরাঞ্চলে মোটামুটি সরকারি নির্দেশ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হলেও মানা হচ্ছে না গ্রামগঞ্জে। প্রায় আগের মতোই হাট-বাজারে লোকসমাগম হচ্ছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে গ্রামে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকে ইচ্ছা মতো ঘোরাফেরা করছে মানুষ। এ নিয়ে আতঙ্কিত সচেতন মহল।
বাংলাদেশে প্রবাসীদের মাধ্যমেই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। অনেক চেষ্টা ও কঠোর ব্যবস্থার পর প্রবাসীদের কোয়ারেন্টিন ও তাদের যাতায়াত বন্ধ হলেও গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার ছুটি ঘোষণার পর ঢাকা ও এর আশপাশ থেকে লাখ লাখ মানুষ গ্রামে ছুটে গেছে। তাদের অধিকাংশই হোম কোয়ারেন্টিন পালন করেনি। বিশেষ করে করোনার প্রাদুর্ভাব হওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা এবং পোশাক কারখানা অধ্যুষিত গাজীপুর থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন প্রান্তে পোশাক শ্রমিকরা ছুটিতে গেছে। তাদের অনেকে আবার ৫ এপ্রিল কারখানা চালু হওয়ার খবরে কর্মস্থলে এসে ছুটি পেয়ে ফের এলাকায় গেছে। তাদের বেশির ভাগই নিজ নিজ এলাকায় স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে সংশ্লিষ্ট গ্রামের সচেতন মানুষজন।
অন্যদিকে করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী একজন থেকে আরেকজন কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা মানা হচ্ছে না। আগের মতোই বসছে গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজার। যেখানে হাজার হাজার মানুষ গায়ের সাথে গা লাগিয়ে চলাফেরা বা কেনাকাটা করছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে দুটি ছবি দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সোহেল রানা নামে সিরাজগঞ্জের এক সংবাদকর্মী। যেখানে তিনি লিখেছেন, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পাঁচলিয়া হাটের চিত্র এটি। সামাজিক দূরত্ব কেউ মানছে না। ছবিতে দেখা যায়, শত শত মানুষ বাজার করছে,পণ্য বেচা-বিক্রি করছে। তাদের শরীর একজনের সাথে আরেকজন লাগোয়া। মাস্ক ব্যবহার করেছে এমন সংখ্যা খুবই কম।
সোহেল রানার ফেসবুক স্ট্যাটাসের নিচে মহিউদ্দিন খোন্দকার মিঠু নামে আরেকজন একটি ছবি দিয়ে মন্তব্য করেছেন। এতে তাড়াশ উপজেলার বারুহাঁস হাটের ছবি দেয়া হয়েছে। এতে দেখা যায়, মাছের বাজারে আগের মতোই গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বেচাকেনা হচ্ছে। আক্তার হোসেন নামের একজন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ থেকে অনেকেই গ্রামে এসেছে। কিন্তু কারো কথাই তারা শুনছে না (চলাফেরা করছে)। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সাংবাদিক সোহেল রানা বলেন, গত কয়েক দিনে দেখেছি সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা, তাড়াশ এবং চলনবিলের মহিষলুটি মাছের আড়তসহ হাটবাজারগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না। পুলিশ দেখে একটু মানুষজন কমে, চলে গেলে আগের মতোই হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু সিরাজগঞ্জের এসব হাটবাজারই নয়। এমন দৃশ্য সারাদেশের হাটবাজারের। করোনা ঝুঁকি নিয়ে মানুষজন গায়ের সাথে গা লাগিয়ে হাটবাজারগুলোতে বেচা-কেনা করছে।
গত কয়েক দিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে পালিয়ে ট্রলারে বরগুনায় গিয়ে ধরা পড়েছে শতাধিক মানুষ। করোনা অধ্যুষিত নারায়ণগঞ্জ থেকে পালিয়ে তারা গাদাগাদি করে ট্রলারে এত পথ পাড়ি দিয়ে গ্রামে চলে গিয়েছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ধরে কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে দিয়েছে। এভাবে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর এলাকা থেকে সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। আবার স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারের নির্দেশনা না মেনে আগের মতোই হাটবাজার চলছে গ্রামে গঞ্জে। এসব নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আরো কঠিন বাস্তবতায় পড়ার আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।


আরো সংবাদ



premium cement