পুলিশের তত্ত্বাবধানে দু’বেলা খাবার পাচ্ছে কলকাতার পরিযায়ী শ্রমিকরা
- ফিরোজ আহমেদ কলকাতা
- ১১ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
লকডাউনের জেরে দিল্লিসহ গোটা দেশে পরিযায়ী শ্রমিকদের করুণ ছবি ফুটে উঠেছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তার বিপরীত ছবি ফুটে উঠেছে কলকাতার বানতলা চর্মনগরীতে। করোনার আতঙ্ক, লকডাউনের অসুবিধা, বাড়ি ফেরার তাগিদ থাকলেও খানিকটা স্বস্তিতে আছে পরিযায়ী শ্রমিকরা। কারণ দু বেলা দুমুঠো খাওয়ার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তাদের। খোদ পুলিশ কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ভিন রাজ্যের কয়েক হাজার শ্রমিক দিনরাত খাবার পাচ্ছে।
কলকাতার ঢিল ছোড়া দূরত্বে বানতলায় এশিয়ার বৃহত্তম চর্মনগরী।এই মুহূর্তে বানতলায় ছোট-বড় প্রায় সাড়ে ৬০০ চর্ম কারখানা আছে। প্রতিটি কারখানায় ম্যানেজার, সুপারভাইজার, নিরাপত্তাকর্মী, দারোয়ান মিলিয়ে তিন থেকে চারজন কর্মী আছে। এ ছাড়া অন্য রাজ্য থেকে ট্রাকে করে কাঁচা চামড়া বা চর্মজাত সামগ্রী নিয়ে এসেছে এমন গোটা ৫০ ট্রাক আটকে আছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে আড়াই থেকে তিন হাজার শ্রমিক বানতলায় আটকে আছে। শ্রমিকদের বেশির ভাগ বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা। স্থানীয় শ্রমিকরা ঘরে ফিরতে পারলেও এসব শ্রমিক আটকে আছে।
কলকাতার বাইরের আটকে পড়া শ্রমিকদের বন্ধু এখন পুলিশ। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বরূপকান্তি পাহাড়ির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শ্রমিকদের খাওয়ানোর জন্য প্যান্ডেল করা হয়েছে। এই কাজে যোগ্য সহায়তা করছেন তাড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রাকেশ রায় চৌধুরী। মূলত বানতলা লাগোয়া বেদের আইট কলোনি ও সোনাঠিকারী গ্রামে কয়েকশ পরিবার আছে হিন্দীভাষী। যাদের বেশির ভাগ বিহার, উড়িশা,ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তাদের জন্য প্রতিনিয়ত খাবার রান্না করে খাওয়াছেন। লেদার কমপ্লেক্স থানার আধিকারি স্বরূপকান্তি পাহাড়ি। ইতোমধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের কিভাবে খাওয়ানো হচ্ছে তা পরিদর্শন করে গিয়েছেন কলকাতা পুলিশের পূর্ব ডিভিশনের উপনগরপাল গৌরব লালসহ এসিপি বিশ্বজিৎ রায়। শুক্রবার পরিদর্শনে আসেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আইএনটিটিইউসির সভাপতি শক্তিপদ মণ্ডল।
এর পাশাপাশি বানতলার চারপাশে ভোজেরহাট, কাটাতলা, উসপাড়া, কোলেরাইট গ্রামেও প্রচুর হিন্দিভাষী শ্রমিক ঘর ভাড়া করে আছে। তারাও লকডাউনের জেরে আটকে পড়েছে। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ এই দুঃসময়ে শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে তাদের সুবিধা অসুবিধা এবং খাবারের সংস্থান করছে বলে জানা গেছে। বানতলার পাঁচ নম্বর প্লটের একটি কারখানায় ১০ বছর ধরে সুপার ভাইজারের কাজ করছেন বিহারের বাসিন্দা উমেশ রাম। তিনি বলেন, এত দিন আছি কেনো দিন থাকা-খাওয়ার জন্য কোনো কষ্ট হয়নি। পুলিশের দেয়া খাবার খেয়ে বেঁচে আছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা