২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তার জন্য তহবিল দাবি ঢাকা চেম্বারের

পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করায় সরকারকে ধন্যবাদ
-

করোনাভাইরাস-জনিত চলমান দুঃসময়ে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সুরক্ষায় স্বল্প এবং মধ্যমেয়াদি আর্থিক ও অনার্থিক নীতিপরিকল্পনানির্ভর সহায়তা প্রদান এবং প্রয়োজনীয় তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহবান জানানো হয়। একই সাথে রফতানিমুখী শিল্প সুরক্ষায় শ্রমিকদের বেতনাদি পরিশোধের সুবিধার্থে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করায় সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায় ডিসিসিআই।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ব্যবসাবাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি, রফতানিমুখী শিল্প-কলকারখানা, স্থানীয় বাজারনির্ভর উৎপাদন খাত, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প খাত, সেবা খাত, অতি ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ব্যবসায়, ট্রেডিং-নির্ভর ব্যবসা, পরিবহন ব্যবসা, হোটেল, রেঁস্তোরা, মুদি দোকান, অপ্রচলিত খাত যেমন ভাসমান অতি ক্ষদ্র ব্যবসায়ী ও দোকানপাট উদ্ভূত এ পরিস্থিতিতে মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
ডিসিসিআইর দাবি, ফরমাল (প্রচলিত) ও ইনফরমাল (অপ্রচলিত) খাতে অতি ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো (এমএসএমই) অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বর্তমানে এই এমএসএমই’দের আথিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। অর্থনীতির সব স্তরে এমএসএমই’র অর্ন্তভুক্ত সব খাত করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এখন অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক এমএসএমই সীমিত বেচাকেনা ও পুঁজি-সঙ্কটের কারণে খুব খারাপ সময় অতিবাহিত করছে। তাদের অনেকেই সময়মতো শ্রমিক এবং কর্মচারীদের বেতনাদি পরিশোধ করতে পারছে না, যা বেকারত্ব বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া এমএসএমই এবং অপ্রচলিত খাতের সুরক্ষায় বেতনাদি পরিশোধের সুযোগ করে দিতে ডিসিসিআই সরকারকে ১ শতাংশ সুদে তিন বছর মেয়াদি একটি জরুরি তহবিল গঠন করতে বিশেষভাবে আহ্বান জানাচ্ছে। যেসব এমএসএমই’র বার্ষিক টার্নওভার এক কোটি টাকা তাদের জন্য শতাংশ আর যেসব এমএসএমই’র বার্ষিক টার্নওভার এক কোটি টাকার উপর তাদের জন্য ২ শতাংশ সুদ হারে ওই তহবিল থেকে ঋণ প্রদান করা যেতে পারে। সারা দেশে বিসিক শিল্পনগরীর অন্তর্ভুক্ত কারখানাগুলোও এ বিশেষ জরুরি তহবিলের আওতায় আসতে পারে। আর এই ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে এমএসএমইর জন্য এক বছরের গ্রেস পিরিয়ড প্রদান করা যেতে পারে।
এমএসএমই’র ক্ষেত্রে অনাদায়ী দেনাগুলো আদায় হওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়বে জানিয়ে ডিসিসিআইর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেননা সব ব্যবসায়ীই একই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের অনিশ্চিত সময়ে এমএসএমই’র জন্য তারল্যসঙ্কট দেখা দিতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ডিসিসিআই এমএসএমই’র জন্য প্রদত্ত ঋণের সুদ আগামী এক বছরের জন্য মওকুফ করার আহ্বান জানাচ্ছে। পাশাপাশি ডিসিসিআই এমএসএমই’র অর্থায়ন সহজলভ্য করতে স্বল্প সুদে এবং সহজতর জামানত শর্তে বিদ্যমান পুনঃঅর্থায়ন (এসএমই রি-ফিন্যান্সিং) তহবিলকে পূর্ব-অর্থায়ন (এসএমই প্রি-ফিন্যান্সিং) তহবিলে রূপান্তরের সুপারিশ করছে। এহেন কঠিন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে তারল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। স্থানীয় ব্যবসাবাণিজ্যকে চাঙ্গা রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সরাসরি আর্থিক সহযোগিতায় এ অতিরিক্ত অর্থায়নের সংস্থান হতে পারে। ক্রমহ্রাসমান বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের কারণে স্বাভাবিক ব্যাংকিং ব্যাহত হচ্ছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের এই অতিরিক্ত অর্থায়নকে প্রস্তাবিত পূর্ব-অর্থায়ন স্কিমের আওতায় আনা যেতে পারে। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এমএসএমই খাতকে সাধারণ ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা যাবে। পাশাপাশি কোম্পানি আইনের আওতায় নিবন্ধিত সীমিত দায়বদ্ধ কোম্পানিগুলোকে ব্যাংক গ্যারান্টির শর্তকে আগামী ছয় মাসের জন্য শিথিল করতে ডিসিসিআই আহ্বান জানাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement