২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
খালেদা জিয়ার বাসায় পুলিশি নিরাপত্তা দাবি

তথ্য গোপন করে মহামারী এড়ানো যাবে না : রিজভী

-

রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় পুলিশের নিরাপত্তা দেয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। সেইসাথে বর্তমান মহামারী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের সমালোচনা করে দলটি বলছে, সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া এ বিপদ ঠেকানো সম্ভব নয়। তথ্য গোপন করে এই মহামারী এড়ানো যাবে না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে রোগের পরীক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে দেশে পরীক্ষা নিয়ে নানা জটিলতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী কিংবা সরকারি পরিসংখ্যানের আপডেট এখন কেউ আর বিশ্বাস করছে না। অন্ধ হলেই কি বন্ধ হবে প্রলয়? গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়ার বাসার নিরাপত্তা প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বারবার যিনি গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছেন, তাকে দীর্ঘ ২৬ মাস বিনা দোষে কারাগারে আটকিয়ে রাখা হয়েছিল। তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়েছে। তিনি গুলশানস্থ নিজ বাসায় অবস্থান করছেন। এমতাবস্থায় তার নিরাপত্তার জন্য চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বরাবরে আবেদন করলেও এ বিষয়ে এখনো পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে আমি অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশের আইজিপির কাছে অনুরোধ করছি। বৈশি^ক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারের প্রস্তুতির প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘সরকার বলছে, সবকিছু নিয়ন্ত্রণে, পশ্চিমা মিডিয়া বলছে- আগামী দুই সপ্তাহ বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। মৃত্যু হানা দিচ্ছে দেশে দেশে। আর করোনা যদি এখনই কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে তা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে। ইতোমধ্যে বিদেশী কূটনীতিকরা দলে দলে ঢাকা ছাড়ছেন। করোনা প্রতিরোধ বা মোকাবেলায় বাংলাদেশ যদি এতটাই সক্ষম হতো তাহলে ইউরোপীয়, আমেরিকান ও জাপানিরা দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন কেন?
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, সরকারের নীতির কারণেই দেশের করোনা পরিস্থিতির আসল চিত্র ফুটে উঠছে না। ভেতরে ভেতরে সংক্রমণ হতে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে। আজকের (গতকাল) পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, গতকাল ২৪ ঘণ্টায় করোনার উপসর্গ জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মারা গেছেন কয়েকজন। আর সরকারি হিসেবে মারা গেছেন একজন। এক্ষেত্রে পরীক্ষা বাড়ানোর পাশাপাশি লকডাউন ও হোম কোয়ারেন্টিনকে গুরুত্ব দিতে হবে।
রিজভী বলেন, তথ্য গোপন করে এই মহামারী এড়ানো যাবে না। সঠিক তথ্য দিয়ে এই রোগের ভয়াবহতা বুঝিয়ে জনগণকে কোয়ারেন্টিন মেনে চলতে অনুপ্রাণিত করতে হবে। আমরা মনে করি, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ, সুরক্ষা ও প্রতিকারে সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য দিয়ে মানুষের আস্থা তৈরি করা উচিত। সরকারের তথ্য গোপন পলিসির সমালোচনা করার কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত কয়েকদিনে বিএনপির ১২ নেতাকর্মী ও চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করছি।
‘বিএনপির নেতাকর্মীরা সঙ্কটের সময় জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, কাদের সাহেবের বক্তব্য সঠিক নয়। তাকে বলতে চাই, গণতন্ত্রকে জাদুঘরে পাঠিয়েছেন বলেই সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরাকে অপতৎপরতা হিসেবে অভিহিত করছেন। সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে সমালোচনা করাকে প্রকৃত গণতন্ত্রে অপতৎপরতা হিসেবে গণ্য করে না। আপনাদের গণতান্ত্রিক মানস নেই বলেই সমালোচনা শুনলেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এই মহাদুর্যোগে যখন মানুষ জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে তখন ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য বিভাজন ও বিভেদেরই প্রতিফলন। কী কারণে আপনারা সমালোচনার শঙ্কায় অস্থির থাকেন?
তিনি বলেন, যখন করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হলো তখন আমরাই রাজপথে নেমেছি, সারা দেশে প্রথম সচেতনতা শুরু করেছি। আমরা এবং আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব এই দুঃসময়ে দেশের সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, শ্রেণী-পেশার সংগঠন অর্থাৎ সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি একমাত্র দল যারা দেশের প্রতিটি দুঃসময়ে জনগণের পাশে থেকেছে এবং আছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement