২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কৃষক প্রশিক্ষণে ১৪০ কর্মকর্তার বিদেশ সফর

ব্যয় ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা; প্রকল্পের খরচ বাড়ছে ৮৪ কোটি টাকা
-

সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের বিভিন্ন খাতের খরচের ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনেরই প্রশ্ন রয়েছে। এমন অনেক প্রকল্প আছে যেখানে বিদেশ সফর বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন না থাকলেও সেখানে এ খাতটি রাখা হয়, যা নিয়ে ইতোমধ্যে সারা দেশে বেশ সমালোচনাও হয়েছে। তারপরও উপজেলা পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রকল্পে ১৪০ জন কর্মকর্তাকে বিদেশে শিক্ষাসফরে যেতে হবে। এ জন্য ব্যয় হবে ছয় কোটি ৯ লাখ টাকা। পাঁচ বছরের এই প্রকল্পে দুই বছর অতিক্রম করতেই ব্যয় বাড়ছে ৮৪ কোটি টাকা। প্রকল্পে দেড় বছরে ২৪.৫৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে বলে প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে।
সংশোধিত প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, কৃষির উন্নয়নে তৃতীয় পর্যায়ে সরকারি অর্থায়নে নেয়া এই প্রকল্পটি ২০১৮ সালে ৩১৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদন পায় পাঁচ বছরে সমাপ্ত করার জন্য। প্রকল্পের মূল কাজ হলোÑ কৃষক প্রশিক্ষণকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের জন্য সরকারি জমিতে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত ১০৬টি কৃষক প্রশিক্ষণকেন্দ্র এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ২০টি কৃষক সেবাকেন্দ্র স্থাপন, কারিগরি দক্ষতা উন্নয়নের জন্য আট হাজার ১৮৫ ব্যাচে কৃষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে কৃষির অভিযোজন কৌশল ও টেকসই কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এ ছাড়া কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য পাঁচ হাজার ৪০টি দানাদার ফসল ও এক হাজার ৮৯০টি ভার্মিকম্পোস্ট এবং এক হাজার ৮৯০টি একক বা দেশী বা মিশ্র ফল বাগান প্রদর্শনী স্থাপন করা।
এ দিকে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটি জুলাই ২০১১ থেকে জুন ২০১৭ পর্যন্ত ১৭৮ কোটি ৭৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৪৬টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হয়েছে বলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে। প্রথম পর্যায়ে ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পটি শুরু করা হয় ২০০৫ সালে।
প্রকল্পের ব্যয় বিভাজন থেকে জানা যায়, এই প্রকল্পে ৭০ জন কর্মকর্তাকে বিদেশে শিক্ষা সফরে পাঠানো হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন কোটি টাকা। এখন ১৪০ জনের জন্য ধরা হয়েছে ছয় কোটি ৯০ লাখ টাকা। ফলে মাথাপিছু খরচ হবে চার লাখ ৯২ হাজার ৮৫৭ টাকা। এখানে কৃষক প্রশিক্ষণের জন্য ধরা হয়েছিল ২২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এটাকে বাড়িয়ে এখন ৩১ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এখানে কৃষকদের জন্য মাথা পিছু খরচ হবে ৩৮ হাজার টাকার কিছু বেশি। প্রকল্পে প্রশাসনিক খাতে স্ট্যাম্প বাবদ ব্যয় এক লাখ টাকা ধরা হয়েছে। আবার অন্য অঙ্গে স্ট্যাম্প ও সিল বাবদ পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন খাতের ব্যয়ের অঙ্ক নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণ কক্ষে সাউন্ড সিস্টেম, এসি, ফটোকপিয়ার, আসবাবপত্র খাতে মোট সোয়া ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসব ব্যয় যৌক্তিকভাবে হ্রাস করার জন্য বলা হয়েছে। প্রকল্পে জ্বালানি খাতে যাবে সাত কোটি ৩২ লাখ টাকা। প্রকল্পগুলো অনুমোদনের সময় যে রেট শিডিউল ধরে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়, প্রকল্পের মেয়াদের মাঝপথে এসে সেই রেট শিডিউল পরিবর্তন করায় ব্যয় স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়।


আরো সংবাদ



premium cement