২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সোহরাওয়ার্দীসহ শেরেবাংলা নগরের ১০ হাসপাতাল রোগীশূন্য

করোনা আতঙ্ক
-

করোনা আতঙ্কে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশাপাশি এবার রোগীশূন্য হয়ে পড়েছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের ১০টি হাসপাতাল।
এ দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে রোগীশূন্য। প্রতিদিন যেখানে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী ভর্তি হতেন, সেখানে এখন ঘণ্টায় দুই থেকে তিনজন ভর্তি হচ্ছেন।
সাধারণত অন্যান্য সময় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল), জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, ২৫০ শয্যা টিবি হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং জাতীয় বাতজ্বর ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে রোগী ও তার স্বজনদের ভিড় লেগে থাকত। বর্তমানে করোনা আতঙ্কের কারণে এসব হাসপাতালে রোগী নেই বললেই চলে।
এসব হাসপাতালগুলোর সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে হাসপাতাল থেকে রোগীরা স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছে। নতুন করে ভর্তির সংখ্যা একেবারেই কম। আবার হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে যারা ভর্তি আছেন, তারা একান্ত বাধ্য হয়েই আছেন।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে রোগী বা তার স্বজনদের কোনো ভিড় নেই। জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার একেবাই ফাঁকা। হাঁচি, সর্দি ও কাশির জন্য আলাদা কাউন্টার থাকলেও সেখানে কেউ আসছে না।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, এখানে আগে প্রতিদিন সারা দেশ থেকে অনেক রোগী আসত। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সারা দিনে খুব কম রোগী আসছে। আবার কারো মধ্যে করোনার কোনো উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা গেলে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
পঙ্গু হাসপাতালেরও একই অবস্থা। জরুরি বিভাগে নতুন করে তেমন কোনো রোগী ভর্তি হচ্ছে না। বেড সব ফাঁকা পড়ে আছে। হাসপাতালের কর্মচারীরা জানান, এখানে সাধারণত প্রতি দিন সারা দেশ থেকে হাজার হাজার রোগী আসত। কিন্তু লকডাউনে একেবারেই রোগী আসছে না।
ঢাকা শিশু হাসপাতালেও কোনো নতুন রোগী তেমন আসছে না বলে জানা গেছে। হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে একেবারেই নতুন করে রোগী ভর্তি হচ্ছে না।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল সারা দিনে ৫ জন রোগী এসেছে।
ঢামেক হাসপাতালে ঘণ্টায় ৩ জন রোগী ভর্তি : ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বর্তমানে রোগীশূন্য। প্রতিদিন যেখানে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী ভর্তি হতো, সেখানে এখন ঘণ্টায় দুই থেকে তিনজন ভর্তি হচ্ছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আগে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা নিতো। দিনে পাঁচ শতাধিক রোগী ভর্তি হলেও বর্তমানে এ সংখ্যা এক-চতুর্থাংশে নেমে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেখা গেছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারে রোগীর ভিড় নেই। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ সবাইকে অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। থজরুরি বিভাগে কর্তব্যরত টিকিট বিক্রেতা হাবিবুর রহমান জানান, বুধবার রাত ১২টা থেকে গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত জরুরি বিভাগে মাত্র ১৯১ জন রোগী এসেছে। এর মধ্যে মাত্র ৪১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। ঈদের ছুটিতেও এত কম রোগী হয় না বলে তিনি জানান।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা: মো: আলাউদ্দিন জানান, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ দিয়ে প্রতিদিন সাধারণত জেনারেলভাবে ভর্তি হয় সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী। আর দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয় ৯০ থেকে ১১০ জন রোগী। বর্তমানে জেনারেলভাবে ১০০ থেকে ১১৫ জন রোগী, দুর্ঘটনায় ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। অপর দিকে বহির্বিভাগ দিয়ে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ রোগী ভর্তি হয়। বর্তমানে ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। তিনি বলেন, হাসপাতালের ভেতরে ওয়ার্ডে আগে রোগীর চাপে বেড ফাঁকা থাকত না। রোগীদের ফ্লোরে রাখতে হতো। বর্তমানে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এখন বেড খালি পড়ে আছে।


আরো সংবাদ



premium cement