কাশ্মিরের জনগণের অধিকার আদায়ে বিশ্ব নেতাদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১০ আগস্ট ২০১৯, ০০:৩৫, আপডেট: ১০ আগস্ট ২০১৯, ০১:০৯
কাশ্মিরের জনগণের অধিকারের পক্ষে বিশ্ব নেতৃবৃন্দসহ সবাইকে সোচ্চার হওয়ার ও অবিলম্বে কাশ্মির সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের আলেম সমাজ। তারা বলেছেন, মুসলিম বিশ্বকে কাশ্মিরের মুসলিমদের রক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ১৯৪৮ সালে জাতিসঙ্ঘ কাশ্মির চুক্তির পর থেকে ভারত অস্ত্রের বলে কাশ্মিরকে একাধারে জুলুমের রাজ্যে পরিণত করে রেখেছে। বর্তমানে দেশটির নরেন্দ্র মোদি সরকার ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মিরে স্মরণকালের পৈশাচিক-অমানবিক নির্যাতন ও মুসলিম নিধন চালাচ্ছেন, যা কোনো বিবেকবান মানুষ সহ্য করতে পারে না।
কাশ্মিরে বিশেষ সুবিধা প্রত্যাহার করে নিয়ে বিভক্ত করা, স্বায়ত্তশাসন তুলে নেয়া এবং সেখানে কারফিউ জারি, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ কাশ্মিরি মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে গতকাল রাজধানীতে কাশ্মির সংহতি পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ আহ্বান জানান।
গতকাল জুমার নামাজের পর ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে কাশ্মির সংহতি পরিষদের ব্যানারে দেশের আলেমসমাজ। রাজধানীতে জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল বের হয়।
কাশ্মির সংহতি পরিষদের আহ্বানে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা আবু তাহের জিহাদী। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ঐক্যজোট চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নিজামী, ফুরফুরা দরবার শরিফের পীর শায়খ মাওলানা আবদুল কাইয়ুম, ইসলামী চিন্তাবিদ ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদী, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমেদ আলী কাসেমী, জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতি ফখরুল ইসলাম, ইসলামী কানুন বাস্তবায়ন কমিটির মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ আশরাফি, খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আলী আজগর, নাস্তিক মুরতাদ নির্মূল পরিষদ সভাপতি মাওলানা আজিজুর রহমান আজিজ, মুফতি ফয়জুল হক জালালাবাদী, শর্ষিনার পীর মাওলানা আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী, মুফতি জুবায়ের আহমাদ, প্রিন্সিপাল মোশাররফ হোসাইন, প্রিন্সিপাল রফিকুল ইসলাম, প্রিন্সিপাল আলাউদ্দীন প্রমুখ।
মাওলানা আব্দুল লতিফ নিজামী বলেন, প্রয়োজনে সংগ্রাম করে হলেও কাশ্মিরের বিজয় ছিনিয়ে আনা হবে। মুসলিম বিশ্বকে কাশ্মিরের মুসলিমদের রক্ষায় অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সমাবেশে অন্য বক্তারা আরো বলেন, মোবাইল-ইন্টারনেটসহ সব মিডিয়া বন্ধ করে দিয়ে কাশ্মিরের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। কাশ্মির সমস্যা উদ্ভবের পর বহু নতুন নতুন সৃষ্ট সঙ্কটের সমাধান হয়েছে। কিন্তু যুগের পর যুগ চলে যাচ্ছে, কাশ্মিরি মুসলমানরা গণহত্যা গুম ও ধর্ষণের শিকার হওয়া থেকে বাঁচতে পারছেন না। এ সত্ত্বেও বিশ্ব নেতারা রহস্যজনকভাবে কাশ্মির সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগই গ্রহণ করছেন না। বিশেষ করে মুসলিম নেতাদের ব্যর্থতা আরো লজ্জাজনক। আজ বিশ্ববাসীর কাছে পরিষ্কার, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের পেছনে মূল উদ্দেশ্যে হচ্ছে মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মিরের ‘ডেমোগ্রাফি’ বা জনসংখ্যাগত চরিত্র বদলে দেয়া। জম্মু-কাশ্মিরে মুসলমানদের অস্তিত্ব বিলীন করে আরেকটি ফিলিস্তিন তৈরির ‘মহাপরিকল্পনা’র অংশ হিসেবে ৩৭০ ধারা বিলোপ। এ অবস্থায় বিশ্ববাসী কিছুতেই চুপ থাকতে পারে না। অবিলম্বে জম্মু-কাশ্মিরের মুসলমানদের অস্তিত্ব রক্ষা ও তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বক্তারা দ্রুত কাশ্মিরের জনগণের ওপর জুলুম নির্যাতন বন্ধ করে তাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। একই সাথে জাতিসঙ্ঘ, মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্ববাসীকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা