ইসলামী ব্যাংকের ১ হাজার ১১৪ কোটি টাকা লুটপাট
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫, আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৫
- জড়িত এস আলমের ২ ছেলে
- ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
জাল নথিপত্র তৈরি করে ঋণের নামে শুধু ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের চট্টগ্রামের জুবিলী রোড শাখা থেকে প্রায় এক হাজার ১১৪ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এই লুটের নেতৃত্ব দেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলম। আত্মীয়স্বজন ও নিজ কোম্পানির বেতনভুক্ত কর্মচারীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক দেখিয়ে মাত্র তিন বছরে ওই টাকা হাতিয়ে নেয় আলোচিত গ্রুপটি। এ ব্যাপারে ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক।
তথ্যানুযায়ী, আহসানুল আলম ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। আশরাফুল আলম কাগুজে প্রতিষ্ঠান ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস লিমিটেডের মালিক। দুই ভাইয়ের লুটপাটের এই কাজে সহযোগিতা করেন ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি ও পরিচালকসহ ডজনখানেক কর্মকর্তা।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন ও নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের চট্টগ্রামের জুবিলী রোড শাখায় মেসার্স ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া চৌধুরীকে সাপ্লাইয়ার হিসেবে দেখানো হয়। মূলত ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক অন্যান্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যাংকের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে এই অপকর্ম ঘটিয়েছেন।
অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা ব্যাংকিং অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের অনুকূলে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বরে ৮৯০ কোটি টাকা ঋণসুবিধা গ্রহণ করলেও তার বিপরীতে কোনো মালামাল ক্রয় এবং বিক্রয় না করে বিভিন্ন জাল কাগজপত্র তৈরি করে। এরপর ওই টাকা উত্তোলন ও বিতরণ করে রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে অপরাধ গোপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। ওই চক্রটি নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আবারো বিনিয়োগসীমা ৮৯০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০০০ কোটি করা হয়। আর ২৮টি ডিল সাজিয়ে চক্রটি ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সর্বমোট ৯৯৫ বার অর্থ উত্তোলন করে। এসব কাজে ব্যাংকিং নীতিমালা এবং ইসলামী ব্যাংকের জন্য প্রচলিত শরিয়াহ নীতি লঙ্ঘন করা হয়েছে।
অন্যদিকে ২০২৩ সালে নতুন করে ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে চারটি ডিল সৃষ্টি করে আরো ১৮১ কোটি টাকা উত্তোলন করে নতুন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এভাবে জুবিলি রোড শাখার গ্রাহক মেসার্স ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের নামে ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে ইস্যু করা অসমন্বিত ৩২টি ডিলে মোট এক হাজার ৭৪ কোটি ৮৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা ছাড় করা হয়, যা ব্যাংকের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বলে অডিট প্রতিবেদন কিংবা দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে প্রমাণ মিলে। পরে ২০২৪ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে জাল নথি তৈরি করে কৃত্রিম উপায়ে ১৩ কোটি ৫০ লাখ ৮৭ হাজার টাকা পরিশোধ দেখানো হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর পর্যন্ত ঋণ হিসাবে ৯৯৩ কোটি ৭০ লাখ ২৪ হাজার টাকা ও মুনাফা হিসাবে ১২০ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ মোট এক হাজার ১১৩ কোটি ৯৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ হয়েছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ মিলেছে। যার মাধ্যমে ব্যাংকের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে দুদক টিম মনে করছে।
গত ১৯ ডিসেম্বর দুদকের চট্টগ্রাম অফিসে চাকতাই শাখা থেকে এক হাজার ৯২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাত বাদি হয়ে ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যেখানে আসামি হয়েছেন ইসলামী ব্যাংকের তৎকালীন এমডি ও পরিচালকসহ ৩৪ কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক মো: আক্তার হোসেন বলেন, এক হাজার ৯২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এর আগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের (আইবিবিএল) সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান, এমডি ও একাধিক পরিচালকসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক। এ সংক্রান্ত আরো অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। অপরদিকে গত ৯ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ৯৯৩ কোটি ৭০ লাখ ২৩ হাজার ৪৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়।
বিভিন্ন নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের চাকতাই, জুবিলী রোড ও খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে ধাপে ধাপে ৩৩০০ কোটি টাকার ঋণ ছাড় করা হয়। এর মধ্যে মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের নামে ১০৫৪ কোটি, ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের নামে ১০৮৪ কোটি এবং সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টসের নামে ১১১৯ কোটি টাকার ঋণ দেয়া হয়।
স্থানীয় মার্কেট থেকে কাঁচামাল ক্রয় করে রফতানি করার শর্তে ওই ঋণ ছাড় করা হয়। ঋণের টাকা আত্মসাতে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকের হিসাবে স্থানান্তরে বিভিন্ন জাল নথি তৈরি করা হয়। এটি করতে মানিলন্ডারিং আইনের পুরনো কৌশল ব্যবহার করা হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত এস আলম গ্রুপের ব্যাংক হিসাবে পৌঁছে ওই টাকা হাওয়া হয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকের তিনটি শাখা থেকে ৩,৩০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য দুদক থেকে আমলে নেয়া হয় গত বছরের প্রথম দিকে। তখন অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয় দুদকের উপপরিচালক সিরাজুল হককে। তিনি কয়েক দফা চিঠি দিয়ে নথিপত্র চেয়ে পাঠালেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে অভিযোগটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয় দুদকের উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের অনুসন্ধান দলকে। অভিযোগ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৭ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে এস আলম পরিবারের ছেলে ও ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমকে তলব করা হলেও তিনি হাজির হননি।
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা : ক্ষমতার প্রভাব ও বিভিন্ন অনিয়ম-জালিয়াতি করে ইসলামী ব্যাংক চট্টগ্রামের জুবিলী রোড শাখা থেকে এক হাজার ১১৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ৫৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলম ভ্রাতৃদ্বয়কে। উল্লেখ্য, আহসানুল আলম ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান। বৃহস্পতিবার দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো: মোস্তাফিজুর রহমান বাদি হয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়ে ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর সময়ের মধ্যে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো: গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির সাবেক পরিচালক ও ইসি কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সাবেক নমিনী পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ, সাবেক ভাইস চেয়ারমান ডা: তানভীর আহমদ, সাবেক পরিচালক মো: কামরুল হাসান, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক ড. মোহাম্মদ সালেহ জহুর, সাবেক পরিচালক ড. মো: ফসিউল আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, সাবেক পরিচালক জামাল মোস্তফা চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য আবু সাইদ মোহাম্মদ কাশেম, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী।
ব্যাংকটির সাবেক ডিএমডি (সিআরও) মোহাম্মদ আলী, সাবেক ডিএমডি (সিএইচআরও) মো: মোস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, সাবেক এসইভিপি ও বর্তমানে এএমডি মো: আলতাফ হোসেন, সাবেক ডিএমডি মোহাম্মদ সাব্বির, এসইভিপি জি এম মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন কাদের, সাবেক ডিএমডি মিফতাহ উদ্দিন, সাবেক এসইভিপি মোহাম্মদ উল্লাহ, সাবেক ডিএমডি আবুল ফাইয়াজ মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, সাবেক এসইভিপি এবং বর্তমানে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: রফিকুল ইসলাম, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: ফরিদ উদ্দিন, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (চুক্তিভিত্তিক) কাজী মো: রেজাউল করিম, জুবিলী রোড শাখার সাবেক শাখাপ্রধান ও বর্তমানে বংশাল শাখার ম্যানেজার এসভিপি সোহেল আমান, জুবিলী রোড শাখার সাবেক প্রধান ও বর্তমানে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ইসলামী ব্যাংক ট্রেইনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: শাহাদাৎ হোসেন। ইসলামী ব্যাংকের জুবিলী রোড শাখার সাবেক ইনচার্জ ও বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক ট্রেইনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমির এভিপি মো: মাইন উদ্দিন, জুবিলী রোড শাখার এফএভিপি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সাবেক এসইভিপি ও চট্টগ্রাম উত্তর জোনের প্রধান (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) মো: নাইয়ার আজম, বর্তমানে ঢাকার মোহাম্মদপুরের ইসলামী ব্যাংক ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমিতে কর্মরত সাবেক ইভিপি ও চট্টগ্রাম উত্তর জোনের প্রধান মুহাম্মদ নূরুল হোসাইন কাওসার, এসএভিপি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী। বাণিজ্য বিতান করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী মো: তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরী, অ্যাপার্চার ট্রেডিং হাউজ স্বত্বাধিকারী এস এম নেছার উল্লাহ, ড্রিমস্কেপ বিজনেস সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মহসিন মিয়াজী, এক্সিসটেন্স ট্রেড এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো: সালাহ উদ্দিন (সাকিব), ফেন্সিফেয়ার করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মজিদ খোকন, এপিক অ্যাবল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো: ইকবাল হোসেন, ফেমাস ট্রেডিং করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী আরশাদুর রহমান চৌধুরী, জিনিয়াস ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আবুল কালাম, গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো: রাশেদুল আলম এবং পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুস সবুর, ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফারজানা বেগম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল ওয়াহিদ, চেমন ইস্পাত লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আনছার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আনছারুল আলম চৌধুরী, রেইনবো করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী রায়হান মাহমুদ চৌধুরী, গ্রিন এক্সপোজ চট্টগ্রামের স্বত্বাধিকারী এম এ মোনায়েম, সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মাহাফুজুল ইসলাম, মেসার্স শাহ আমানত ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী চৌধুরী, সোনালী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সহিদুল আলম ও মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ গোলাম সরওয়ার চৌধুরী।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা