নির্বাচনী সহিংসতায় আহত পোলিং এজেন্টের মৃত্যু, বিচারের দাবি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দ্বিতীয় ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিনে মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকদের হামলায় আহত আনারস প্রতীকের পোলিং এজেন্ট ও ওয়ার্ড মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

রোববার (২৬ মে) ভোরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই নেতার মৃত্যু হয়।

নিহত তরিকুল ইসলাম তারিক (৪৫) উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া এলাকার গোলাম মোস্তাফার ছেলে এবং তিনি চাপরা ৩ নম্বর ওয়ার্ড মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বলে জানা গেছে।

গত ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তরিকুল ইসলাম চাপড়া ইউনিয়নের জয়নাবাদ কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আনারস প্রতীকের পোলিং এজেন্ট নিযুক্ত ছিলেন।

ভোট গ্রহণ শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে পৌঁছালে মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থক আদিলুর রহমান লাল, মধু, দুদু, সাদ্দাম ও শাকিলসহ ১০-১৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।

হামলায় আহত তরিকুলকে মারাত্মক আহত অবস্থায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তরিকুলের অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচ দিনের মাথায় (রোববার) মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৩ মে ১২ জনকে আসামি করে কুমারখালী থানায় মামলা করেন নিহতের ভাই তারিকুল ইসলাম তরিক।

এদিকে তরিকুল হত্যার বিচার দাবিতে রোববার চাপরা ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করেন তারা। প্রতিবেদনটি লেখা প্রর্যন্ত লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছিল তার নিজ এলাকায়।

এলাকার অবস্থা বেশ থমথমে রয়েছে, অতিরক্তি আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর টহল ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আশাদুর রহমান আশা দৈনিক নয়া দিগন্তকে জানান, দ্বিতীয় ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিহত তরিকুল ইসলাম তারিক আনারসে নির্বাচন করেছে। এই কারণেই চাপড়া ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুর মদদে পরিকল্পিতভাবে লালসহ ওই এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা আনারসের পোলিং এজেন্ট তরিকুল ইসলাম তারিককে কুপিয়ে আহত করে এবং আজ (রোববার) তার মৃত্যু হয়। আমি এই হত্যার পেছনে যারা জড়িত আছে তাদের আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার দাবি করছি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকিবুল ইসলাম জানান, ভোটের দিন নির্বাচনী সহিংসতায় আহত পোলিং এজেন্ট রোববার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে আগেই থানায় মামলা করেছেন নিহতের বড় ভাই।