১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

‘আমার শিশু মেয়েটির যে সর্বনাশ সে করেছে’

‘আমার শিশু মেয়েটির যে সর্বনাশ সে করেছে’ -

যশোরের চৌগাছায় এক শিশু (১১) ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষক রবিউল ইসলাম (৪৪) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছেন চৌগাছা থানা পুলিশ। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) আটক রবিউল ইসলামকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের স্বর্পরাজপুর গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, মেয়েটি একই আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশাপাশি ঘরের বাসিন্দা। ধর্ষক রবিউল উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের বড় নিয়ামতপুর গ্রামের মৃত শাহাদৎ হোসেন মন্ডলের ছেলে ও পেশায় ভ্যানচালক।

মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পে ভিকটিম মেয়েটির ও ধর্ষক রবিউল ইসলামের ঘর পাশাপাশি। সোমবার রাতে রবিউল ইসলামের স্ত্রী ও ভিকটিম রবিউল ইসলামের ঘরের বারান্দায় ঘুমাচ্ছিল। আসামি রবিউল ইসলাম একই ঘরের ভেতরে শোয়া ছিলেন। রবিউল ইসলামের স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়লে রবিউল ইসলাম ভিকটিম শিশুটিকে মোবাইলের নাম্বার বের করার কথা বলে ঘরের ভেতরে ডেকে নেন। এ সময় শিশুটির মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেন। এতে শিশুটির রক্তক্ষরণ হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে শিশুটি নিজেদের ঘরে গিয়ে তার মাকে ঘটনাটি জানায়। ঘটনা জানার পর তারা স্বামী-স্ত্রী রবিউল ইসলামের ঘরে গিয়ে তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ঘটনা খুলে বলেন ও রক্তমাখা জামা-কাপড় দেখান। এ সময় ধর্ষক রবিউল ইসলামের সাথে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। তাদের ডাকচিৎকারে আশ্রয়ণের অন্য বাসিন্দারা ছুটে আসেন। পরে তারা রবিউল ইসলামকে আটকে রাখেন। পরে ৯৯৯ কল দিলে চৌগাছা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে ও ধর্ষক রবিউল ইসলামকে আটক করে চৌগাছা সরকারি মডেল হাসপাতালে নেয়।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিশুটি ধর্ষিত হওয়ার আলামত পান এবং মেয়েকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) রেফার্ড করেন। ধর্ষক রবিউল ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় নেয়া হয়।

চৌগাছা সরকারি মডেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. খন্দকার জুলকার ইসলাম বলেন, শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ওসিসিতে রেফার্ড করা হয়েছে। আর ধর্ষকের তেমন কিছু হয়নি। সে কিছুটা ভান ধরছে। তাকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নেন।

মামলার বাদী শিশুটির বাবা বলেন, আমি এ ঘটনায় সুষ্ঠ বিচার চাই। তার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। আমার শিশু মেয়েটির যে সর্বনাশ সে করেছে, তার শাস্তি দেখে আর কেউ যেন এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।

এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ভিকটিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির পিতা চৌগাছা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। আসামি রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement