১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ইবির লালন শাহ হলে উলঙ্গ করে র‌্যাগিং, তদন্তে মিলেছে সত্যতা

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মুদাচ্ছির খান কাফী ও মোহাম্মদ সাগর - ছবি : নয়া দিগন্ত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলে নবীন শিক্ষার্থীকে উলঙ্গ করে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করে প্রতিবেদন অনুযায়ী জড়িতদের শাস্তির সুপারিশ করেছে হল কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (২২ এপ্রিল) লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে ভুক্তভোগীকে ডাকেন শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষাবর্ষের মুদাচ্ছির খান কাফী ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ সাগর। এ সময় তাদের সাথে ছিলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের উজ্জ্বল হোসেন।

সেদিন ভুক্তভোগীকে উলঙ্গ করে বেঞ্চের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখেন তারা। এছাড়া তাকে রড দিয়ে আঘাত করেন ও নাকে খত দেয়ান অভিযুক্তরা। অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। এছাড়া কাফি ফেনী’র পরশুরাম উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক।

এদিকে ঘটনার পরে বিষয়টি ঘরোয়াভাবে সমাধানের চেষ্টা করেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে লালন শাহ হলে ভুক্তভোগী অভিযুক্ত ও গণরুমের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসেন শাখা ছাত্রলীগ কর্মী ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী নাসিম আহমেদ মাসুম। তিনি ভুক্তভোগীদের কাছে ঘটনা জিজ্ঞেস করলে তারা নির্যাতনের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। পরে অভিযুক্তদের তিরস্কার করেন মাসুম। এদিকে বিভাগের সিনিয়রদের কাছে ঘটনার কথা বলার কারণে ভুক্তভোগীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি। একইসাথে এ ঘটনা যেন বাইরের কেউ না জানে এ মর্মে তাকে হুমকিও দেন মাসুম।

ঘটনার প্রেক্ষিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি হলের আবাসিক শিক্ষক ড. আলতাফ হোসেনকে আহ্বায়ক ও সহকারী রেজিস্ট্রার জিল্লুর রহমানকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। এছাড়া একইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের তৎকালীন প্রভোস্ট ড. দেবাশীষ শর্মাকে আহ্বায়ক করে আরো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ কমিটিকে যথাশীঘ্র সম্ভব প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

কমিটি গঠনের দেড় মাস পর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি। এছাড়া কাজ শুরুর দুই মাস পর ২২ এপ্রিল প্রতিবেদন জমা দিয়েছে হল প্রশাসন কর্তৃক গঠিত কমিটি। দুই কমিটির প্রতিবেদনেই ঘটনার সত্যতা মিলেছে বলে এক সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানা যায়।

লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, ‘আমরা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। জড়িতদের শাস্তির সুপারিশ করে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রেরণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিধি অনুযায়ী তাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’


আরো সংবাদ



premium cement