১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

চিরকুট লিখে কলেজছাত্রী সাবিনার আত্মহত্যা

- প্রতীকী ছবি

মণিরামপুরে পরীক্ষার হলে নকলের অভিযোগে বাড়িতে ফিরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সাবিনা খাতুন নামে এক কলেজছাত্রী। তার ঘর থেকে মৃত্যুর আগে খাতায় লিখে যাওয়া একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সাবিনা বাগডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে। সে মণিরামপুরের গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

জানা যায়, ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের মাধ্যমে শনিবার ওই কলেজে নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হয়। সকালে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সাবিনা।

বাগডাঙ্গা গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ বলেন, ‘সকালে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর সাবিনার কাছ থেকে কাগজের টুকরা দেখে ফেলেন কক্ষ পরিদর্শক। পরে দেড় ঘণ্টা তার খাতা আটকে রাখা হয়। সেই কারণে খাতায় আর লিখতে পারেনি সে।’

ইউপি সদস্য আরো বলেন, ‘কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে একটি কাগজে সব ঘটনা লেখে সাবিনা। তারপর ঘরের দরজা লাগিয়ে আড়ার সাথে ওড়না জড়িয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে। কিছুক্ষণ পর মেয়ের সাড়াশব্দ না পেয়ে, ঘরে গিয়ে এ দৃশ্য দেখে ওর মা চিৎকার দেন। তখন আশপাশের লোকজন এসে সাবিনার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।’

গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করিম বলেন, ‘ঘটনা জানার পর আমি শিক্ষক ও কমিটিকে নিয়ে জরুরি সভায় বসেছি। মেয়েটির কাছে পাওয়া সেই নকলের কাগজ ও তার পরীক্ষার খাতা আমার সামনে। ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র দিয়ে আজকে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কলেজের শিক্ষক তাসলিমা খাতুন ও ইসমাইল হোসেন কক্ষের দায়িত্বে ছিলেন। আমি তাদের সাথে কথা বলছি। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।’

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে একটি চিরকুটও পেয়েছি। এই ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হবে। লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওই কলেজছাত্রীর চিরকুটে যা লিখে গেছে ‘আমার কিছু মনে থাকে না বলে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার আগে আমি অল্প একটু কাগজে তথ্য লিখে পড়তে পড়তে কক্ষে যাই। পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় তা ফেলে দিতে মনে ছিল না। পরীক্ষার মধ্যে কলেজের সমাজ-বিজ্ঞানের শিক্ষক তা দেখে ফেলেন। তিনি খাতা নিয়ে দেড় ঘণ্টা আটকে রাখেন। আমি তার কাছে ভুল স্বীকার করেছি। তারপরও তাসলিমা ম্যাডাম ও ইসমাইল স্যার আমাকে পরীক্ষা দিতে দিল না। তাড়িয়ে দিলেন। আমি লজ্জায় মুখ দেখাতে না পেরে দুনিয়া ছেড়ে চলে যাচ্ছি। ভুলত্রুটি মাফ করে দিও। আমার কাছে ফারহানা ২৫ টাকা ও সুবর্ণা পাঁচ টাকা পাবে। তোমরা দিয়ে দিও।’


আরো সংবাদ



premium cement